ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৬ জুন ২০২৫, ১২ আষাঢ় ১৪৩২

সরকার পতন ঘটেনি, পারমাণবিক কর্মসূচিও অক্ষত, ইরানে ব্যর্থ হলো ইসরায়েল!

প্রকাশিত: ০৭:৪৭, ২৬ জুন ২০২৫; আপডেট: ০৭:৪৯, ২৬ জুন ২০২৫

সরকার পতন ঘটেনি, পারমাণবিক কর্মসূচিও অক্ষত, ইরানে ব্যর্থ হলো ইসরায়েল!

ছ‌বি: সংগৃহীত

ইরানে ১১ দিন ধরে হামলা চালালেও তেমন কিছু অর্জন করতে পারেনি ইসরায়েল। যুদ্ধ শুরুর সময় ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছিলেন, তারা ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ধ্বংস করবে এবং সরকারের পতন ঘটাবে। কিন্তু এই দুটি লক্ষ্যই সফল হয়নি।

আমেরিকার সাহায্যে ইরানের একটি পারমাণবিক স্থাপনায় বোমা ফেলা হয়, কিন্তু ইরান আগেই গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ সরিয়ে রেখেছিল। তাই বড় ক্ষতি হয়নি। আসলে ইরানের পারমাণবিক কাজকর্ম এখনো চলছেই।

সরকার পতনের জন্য ইসরায়েল ইরানের সামরিক কর্মকর্তাদের হত্যা করে। তারা ভেবেছিল, এতে মানুষ বিক্ষোভ করবে। কিন্তু এর উল্টোটা হয়েছে। যারা আগে সরকারকে পছন্দ করত না, তারাও দেশের পক্ষে দাঁড়িয়েছে। কারণ সবাই বুঝেছে, ইরান দেশ হিসেবে আক্রমণের শিকার হয়েছে।

ইসরায়েল আরও কিছু জায়গায় বোমা ফেলেছে, যেমন: ইভিন জেল ও টিভি স্টেশন। তারা বলেছে, এতে ইরানিদের উপকার হবে। কিন্তু বাস্তবে বন্দিদের অবস্থা আরও খারাপ হয়েছে, আর টিভি স্টেশন ধ্বংস করায় ইরান উল্টো ইসরায়েলি মিডিয়াকে হুমকি দিয়েছে।

আন্তর্জাতিকভাবে ইসরায়েল তেমন সমর্থন পায়নি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প হামলা করলেও পরবর্তী যুদ্ধ চাইনি। বরং তিনি চেয়েছেন যুক্তরাষ্ট্র, ইরান ও ইসরায়েল মিলে আলোচনা করুক। জার্মানির মতো কিছু দেশ শুধু বলেছে ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকার আছে, কিন্তু কেউ ইরানের পারমাণবিক কাজ পুরোপুরি বন্ধ করার দাবি মানেনি।

যুদ্ধের সময় ইরানও ইসরায়েলে পাল্টা হামলা চালায়। অনেক ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের ভেতরে আঘাত হানে। এতে মানুষ মারা যায়, ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়, আর অর্থনীতি থেমে যায়। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা খুব চাপের মুখে পড়ে।

ইরানও ক্ষতির মুখে পড়েছে, কিন্তু তারা ভেঙে পড়েনি। বরং অনেকে তাদেরকে এখন "আক্রান্ত দেশ" হিসেবে দেখছে। ইরান শেষ পর্যন্ত টিকে থেকেছে এবং ভবিষ্যতে আরও শক্তিশালী হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি করেছে।

সব মিলিয়ে বলা যায়, ইসরায়েলের মূল দুই লক্ষ্য— সরকার পতন ও পারমাণবিক কর্মসূচি ধ্বংস কোনোটিই সফল হয়নি। বরং ইরান শক্ত অবস্থানে থেকে যুদ্ধ শেষ করেছে। আর ব্যর্থ হয়েছে দাম্ভিক ইসরায়ল।

সূত্র: আল জাজিরা

এম.কে.

×