ছবি: সংগৃহীত
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ফের ইরানকে হুঁশিয়ার করে বলেছেন, যদি ইরান পাল্টা হামলার পথ বেছে নেয়, তবে দেশটি ‘অভূতপূর্ব ট্র্যাজেডির’ মুখে পড়বে। এক টেলিভিশন ভাষণে তিনি এ কথা বলেন।
ট্রাম্প বলেন, ইরানের পারমাণবিক স্থাপনা—ফোর্দো, নাতানজ ও ইসফাহান—এ চালানো ‘ব্যাপক নিখুঁত হামলা’ ছিল সম্পূর্ণ সফল। তার ভাষায়, ‘এই স্থাপনাগুলো সম্পূর্ণভাবে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়া হয়েছে।’
ট্রাম্প বলেন, ‘ইরান এখন শান্তির পথ বেছে না নিলে, ভবিষ্যতের হামলা হবে আরও বড় এবং আরও সহজ।’ তিনি আরও বলেন, ‘এভাবে চলতে পারে না। হয় শান্তি আসবে, না হলে ইরানের জন্য সামনে অপেক্ষা করছে এমন এক ট্র্যাজেডি, যা গত আট দিনের ঘটনাকেও হার মানাবে।’
তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘এখনো অনেক লক্ষ্যবস্তু বাকি আছে। আজকের রাতের লক্ষ্য ছিল সবচেয়ে কঠিন এবং সম্ভবত সবচেয়ে প্রাণঘাতী। কিন্তু যদি দ্রুত শান্তি না আসে, তবে বাকি লক্ষ্যগুলোতেও আঘাত হানব আমরা—নিখুঁত গতি ও দক্ষতায়।’
ট্রাম্প আরও জানান, ‘বাকি যেসব লক্ষ্য রয়েছে, সেগুলো কয়েক মিনিটেই গুঁড়িয়ে দেওয়া সম্ভব।’
রোববার (২২ জুন) সকালে প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ এবং জয়েন্ট চিফস অব স্টাফের চেয়ারম্যান জেনারেল ড্যান কেইনের আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দেওয়ার কথা রয়েছে।
উল্লেখ্য, ফোর্দো হচ্ছে ইরানের গভীরতম ও সবচেয়ে সুরক্ষিত আন্ডারগ্রাউন্ড ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্র, যা কনভেনশনাল বিমান হামলা প্রতিহত করার জন্য বিশেষভাবে তৈরি।
ইরান আগে থেকেই ট্রাম্পকে সতর্ক করেছিল, ইসরায়েলের সঙ্গে চলমান সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি জড়িয়ে পড়লে এর ‘অপূরণীয় পরিণতি’ হবে।
গত বুধবার ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি বলেন, ‘যদি যুক্তরাষ্ট্র এই সংঘাতে সামরিকভাবে জড়ায়, তবে তাদের যে ক্ষতি হবে তা আর পূরণ করা সম্ভব হবে না।’
এদিকে ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে জানানো হয়েছে, মার্কিন নাগরিক ও সামরিক সদস্যরা এখন এই অঞ্চলে ‘বৈধ লক্ষ্যবস্তু’।
উল্লেখ্য, ১৩ জুন ইসরায়েল ইরানের সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনায় বিমান হামলা চালালে এই উত্তেজনার সূচনা হয়। এর জবাবে ইরানও পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু করে।
ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ইরানি হামলায় তাদের দেশে অন্তত ২৫ জন নিহত ও শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন।
অন্যদিকে, ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত ৪৩০ জন নিহত এবং ৩,৫০০-এর বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।
ট্রাম্প বরাবরই দাবি করে আসছেন, ইরান যেন কোনোভাবেই পারমাণবিক অস্ত্র না পায়, তা নিশ্চিত করতে যুক্তরাষ্ট্র সামরিক পদক্ষেপে পিছপা হবে না। যদিও ইরান বারবার বলেছে, তারা পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের চেষ্টা করছে না।
সূত্র: আনাদোলু।
রাকিব
