
ছবি: প্রতীকী
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সম্ভাব্য যুদ্ধ ঠেকিয়ে দিয়েছেন—এ দাবিকে ফের সামনে টেনে এনেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে তার আক্ষেপ, এত বড় কাজ করেও নোবেল শান্তি পুরস্কার তার ভাগ্যে জুটবে না।
শুক্রবার (২০ জুন) নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যাল-এ এক পোস্টে ট্রাম্প বলেন, ‘ভারত-পাকিস্তানের যুদ্ধ আমি থামিয়েছি। সার্বিয়া-কসোভো, মিসর-ইথিওপিয়া, মধ্যপ্রাচ্যে আব্রাহাম অ্যাকর্ডস—সবকিছুতেই আমি শান্তি প্রতিষ্ঠা করেছি, তবুও আমাকে কেউ নোবেল পুরস্কার দেবে না।’
তিনি যোগ করেন, ‘রাশিয়া-ইউক্রেন, ইসরায়েল-ইরান—যাই হোক না কেন, আমি নোবেল পাব না। কিন্তু জনগণ জানে, আর সেটাই আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ।’
ট্রাম্পের দাবি, দিল্লির অস্বীকার
গত মাসে কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ জঙ্গি হামলার পর ভারত পাকিস্তানকে অভিযুক্ত করে দেশটির অভ্যন্তরে ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামে হামলা চালায়। এই উত্তপ্ত পরিস্থিতি ৪ দিন চলার পর ১০ মে পাকিস্তানি ডিজিএমও ভারতীয় সেনাপ্রধানের সঙ্গে যোগাযোগ করে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দেন। ওই দিনই উভয় দেশ অস্ত্র বিরতি ঘোষণা করে।
তবে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও প্রতিরক্ষা দপ্তর বারবার জানিয়েছেন, এই পুরো প্রক্রিয়ায় আমেরিকার কোনো ভূমিকা ছিল না। সাম্প্রতিক এক ফোনালাপে মোদি সরাসরি ট্রাম্পকে বলেন, ভারত-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য চুক্তি বা যুদ্ধবিরতিতে তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্থতার কোনও প্রসঙ্গই আলোচনায় আসেনি।
‘মোদি দারুণ মানুষ, আসিম মুনিরও বড় ভূমিকা রেখেছেন’, দাবি ট্রাম্পের
ট্রাম্প তার সাম্প্রতিক বক্তব্যে বলেন, ‘আমি পাকিস্তানকে ভালোবাসি, মোদিও অসাধারণ একজন মানুষ। গতরাতেই তার সঙ্গে কথা বলেছি। আমরা একটা দারুণ বাণিজ্য চুক্তির পথে এগোচ্ছি। আর আমি ভারত-পাকিস্তানের যুদ্ধ থামিয়েছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘একজন (সম্ভবত আসিম মুনির) পাকিস্তানের পক্ষে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। ভারতের পক্ষে মোদি। উভয় দেশই পারমাণবিক শক্তিধর, কিন্তু আমি সেটি থামিয়ে দিয়েছি।’
‘গুরুত্বপূর্ণ কৃতিত্ব, তবু সংবাদমাধ্যম চুপ’, মিডিয়ার ভূমিকায় আক্ষেপ ট্রাম্পের
নিজের পোস্টে ট্রাম্প অভিযোগ করেন, ‘আমি কি একটি রিপোর্টও পেয়েছি এই নিয়ে? দুটি বড় পারমাণবিক দেশের মধ্যে যুদ্ধ থামালাম, তবু একটি নিউজও কেউ লেখেনি! সমস্যা নেই, কারণ জনগণ জানে, আর সেটাই আমার কাছে বড়।’
২০২৬ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কারে ট্রাম্পের নাম সুপারিশ করবে পাকিস্তান
এদিকে পাকিস্তান সরকার ট্রাম্পকে ২০২৬ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে সুপারিশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাদের ভাষ্য, “সম্প্রতি ভারত-পাকিস্তান সংকটে ট্রাম্পের ‘নির্ণায়ক কূটনৈতিক হস্তক্ষেপ ও নেতৃত্ব’ যথার্থ মূল্যায়ন পাওয়ার যোগ্য।”
শান্তি পুরস্কার কীসের জন্য দেওয়া হয়?
নোবেল শান্তি পুরস্কার সাধারণত চারটি ক্ষেত্রের গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ প্রদান করা হয়—
- অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ ও নিরস্ত্রীকরণ
- শান্তি আলোচনা
- গণতন্ত্র ও মানবাধিকার
- শান্তিপূর্ণ বিশ্বব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার কাজ
ট্রাম্পের দাবি, এই প্রতিটি ক্ষেত্রেই তিনি কার্যকর ভূমিকা রেখেছেন, তবু আন্তর্জাতিক মহল তার অবদান স্বীকার করছে না।
সূত্র: এনডিটিভি।
রাকিব