হার্ভার্ডকে নিয়ে যে ‘ঐতিহাসিক চুক্তি’র ইঙ্গিত ট্রাম্পের

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে একটি ‘মাইন্ডবগলিংলি ঐতিহাসিক’ চুক্তির সম্ভাবনার কথা ঘোষণা করেছেন। তবে একই দিনে আদালত ট্রাম্প প্রশাসনের একটি সিদ্ধান্তে স্থগিতাদেশ দিয়ে তাঁর পরিকল্পনায় বড় বাধা সৃষ্টি করেছে।

শুক্রবার (২০ জুন) ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে দেওয়া এক পোস্টে ট্রাম্প বলেন, “অনেকেই জানতে চাইছেন হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে কী হচ্ছে এবং আমরা কীভাবে তাদের ব্যাপক অনিয়মের সমাধান করতে যাচ্ছি। আমরা হার্ভার্ডের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছি এবং সম্ভবত আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে একটি চুক্তি ঘোষণা করা হতে পারে।”

ট্রাম্প আরও লিখেন, “আলোচনার সময় তারা অত্যন্ত দায়িত্বশীল আচরণ করেছে এবং সঠিক পদক্ষেপ নেওয়ার ব্যাপারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলে মনে হয়েছে। বর্তমান আলোচনার ভিত্তিতে একটি চুক্তি হলে তা হবে ‘মাইন্ডবগলিংলি’ ঐতিহাসিক এবং আমাদের দেশের জন্য অত্যন্ত ইতিবাচক।”

আদালতের স্থগিতাদেশে প্রশাসনের পরিকল্পনায় ধাক্কা

ট্রাম্পের এই ঘোষণার কিছু ঘণ্টা আগেই ম্যাসাচুসেটসের ফেডারেল বিচারক অ্যালিসন ডি. বোরোঘস ট্রাম্প প্রশাসনের সেই সিদ্ধান্তে অনির্দিষ্টকালীন স্থগিতাদেশ জারি করেন, যার মাধ্যমে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়কে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী গ্রহণের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছিল।

বিচারকের রায়ে বলা হয়, প্রশাসন “হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়কে আন্তর্জাতিক ছাত্র ও স্কলার প্রোগ্রাম থেকে বাদ দেওয়ার যেকোনো প্রচেষ্টা বাস্তবায়ন করতে পারবে না।” এই রায় পূর্বের একটি অস্থায়ী স্থগিতাদেশকে স্থায়ী রূপ দেয়, যা গত মাসে দেওয়া হয়েছিল।

প্রশাসনের দাবি ছিল, হার্ভার্ড ক্যাম্পাসে ইহুদি বিরোধী মনোভাব মোকাবিলায় ব্যর্থ হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, আর সেটাই ছিল এই কড়া পদক্ষেপের পেছনের কারণ। কিন্তু সমালোচকরা বলছেন, এর ফলে হার্ভার্ডে পড়ুয়া হাজার হাজার আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তার মুখে পড়ে যায়। এমনকি বেলজিয়ামের রাজপরিবারের একজন উত্তরসূরিও রয়েছেন এই তালিকায়।

হার্ভার্ডের প্রতিক্রিয়া

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এক মুখপাত্র আদালতের রায়কে স্বাগত জানিয়ে বলেন, “এই রায়ের ফলে মামলার কার্যক্রম চলাকালীন আমরা আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী ও স্কলারদের ভর্তি অব্যাহত রাখতে পারব। আমরা আমাদের অধিকার এবং শিক্ষার্থীদের অধিকার রক্ষায় লড়াই চালিয়ে যাব।”

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, হার্ভার্ডকে ঘিরে ট্রাম্পের এই চুক্তির প্রচেষ্টা ২০২৪ সালের নির্বাচনী বিজয়ের পর তাঁর উচ্চাভিলাষী অভ্যন্তরীণ ও শিক্ষা নীতি রূপায়ণের অংশ হতে পারে।