
ছবি: সংগৃহীত
মধ্যপ্রাচ্যে ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনা যখন ক্রমেই বাড়ছে, ঠিক তখনই জেনেভায় এক গুরুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন ইউরোপের শীর্ষ পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা। শুক্রবার (২০ জুন) এই বৈঠকে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচির সঙ্গে আলোচনা করবেন জার্মানি, ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা। আলোচনার মূল এজেন্ডা থাকবে—ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি যেন শুধুমাত্র বেসামরিক সীমার মধ্যে থাকে, সেই নিশ্চয়তা।
বৈঠকের আগে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক প্রধান কায়া কালাসের সঙ্গে জার্মানির স্থায়ী মিশনে আলাদা বৈঠকে মিলিত হবেন তিন ইউরোপীয় মন্ত্রী। এরপর একসঙ্গে তাঁরা বৈঠকে বসবেন ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে।
কে কে থাকছেন বৈঠকে?
আল–জাজিরার সূত্রে জানা গেছে, জেনেভার এই উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে অংশ নিচ্ছেন—
- ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি
- যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি
- ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জ্যঁ–নোয়েল বাহো
- জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোহান ওয়েডফুল
- ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতি প্রধান কায়া কালাস
জার্মানির কূটনৈতিক একটি সূত্র জানায়, বৈঠকটি যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ সমন্বয়ে আয়োজিত হচ্ছে এবং এর মূল লক্ষ্য হলো ইরানকে পরমাণু কর্মসূচি শুধুই বেসামরিক ব্যবহারের মধ্যে সীমিত রাখার ব্যাপারে পরিষ্কার বার্তা দেওয়া।
যুদ্ধের আশঙ্কা, কূটনীতিতে সমাধানের চেষ্টা
ইসরায়েলের সঙ্গে যুক্ত হয়ে যুক্তরাষ্ট্র ইরানে হামলা চালাতে পারে—এমন একটি আশঙ্কা কূটনৈতিক মহলে ঘুরপাক খাচ্ছে। যদিও এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দুই সপ্তাহ সময় চেয়েছেন। ঠিক এই সময়েই ইউরোপীয় কূটনীতিকদের এমন বৈঠক মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা নিরসনের পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
পেছনের প্রেক্ষাপট
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে ইরানের সঙ্গে স্বাক্ষরিত বহুপক্ষীয় পারমাণবিক চুক্তিতে সই করেছিল ফ্রান্স, জার্মানি, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন। সেই চুক্তির আওতায় ইরান পারমাণবিক কার্যক্রম সীমিত রাখলে তাদের ওপর থেকে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়েছিল।
তবে ২০১৮ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একতরফাভাবে যুক্তরাষ্ট্রকে ওই চুক্তি থেকে প্রত্যাহার করে নেন, যার পর থেকেই চুক্তি টিকে থাকা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়। বর্তমান উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে আবারও এই চুক্তিকে পুনরুজ্জীবিত করার কূটনৈতিক চেষ্টা শুরু হয়েছে বলে ধারণা বিশ্লেষকদের।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই বৈঠক শুধু পারমাণবিক কর্মসূচি নয়, বরং ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনা হ্রাস, আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা এবং যুদ্ধের সম্ভাবনা ঠেকানোর দিকেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
রাকিব