ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৯ জুন ২০২৫, ৫ আষাঢ় ১৪৩২

ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্র ঢুকলে ‘জবাব সহজ হবে না’—তেহরানের হুঁশিয়ারি

সোহাগ খান, কন্ট্রিবিউটিং রিপোর্টার, ঢাকা

প্রকাশিত: ১০:০৬, ১৯ জুন ২০২৫; আপডেট: ১০:০৮, ১৯ জুন ২০২৫

ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্র ঢুকলে ‘জবাব সহজ হবে না’—তেহরানের হুঁশিয়ারি

ছবিঃ সংগৃহীত

মধ্যপ্রাচ্যের আকাশে যুদ্ধের গন্ধ। তেহরান জানিয়ে দিয়েছে—ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধে যদি যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি অংশ নেয়, তবে চুপ থাকবে না তারা। বরং আগে থেকেই শুরু হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ঘাঁটিগুলোকে নিশানা করার কৌশলগত প্রস্তুতি।

নিউইয়র্ক টাইমস-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এমনটাই জানালেন ইরানের শীর্ষস্থানীয় দুই কর্মকর্তা। তাদের দাবি—ইরান প্রথমে হামলা চালাবে ইরাকে অবস্থানরত মার্কিন সেনাদের উপর। এরপর পর্যায়ক্রমে অন্যান্য আরব রাষ্ট্রে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ঘাঁটিগুলো হবে লক্ষ্যবস্তু।

এই হুঁশিয়ারি এমন এক সময় এলো, যখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানের ‘ফোর্দো’ পারমাণবিক কেন্দ্রে সম্ভাব্য ইসরায়েলি হামলায় সমর্থন দেওয়ার চিন্তায় রয়েছেন।

‘ফোর্দো’র ছায়ায় ক্ষোভ জমছে তেহরানে

ইরানের ভেতরে গভীর পাহাড়ের নিচে থাকা এই গোপন পারমাণবিক স্থাপনাটি এখনো বহাল। অথচ, ইসরায়েলের দাবি—এটাই এখন সবচেয়ে বড় হুমকি। কারণ এই ভূগর্ভস্থ কাঠামো ধ্বংস করতে প্রয়োজন এমন বোমা, যা কেবল যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্রাগারে রয়েছে।
ওই হামলার পরিকল্পনার খবর ছড়িয়ে পড়তেই ইরান ধরে নিচ্ছে, বড়সড় সংঘাত আসন্ন। এবং সেই সংঘাতে যদি আমেরিকা সরাসরি জড়ায়, তবে তাদেরও জবাব ‘সহজ’ হবে না।

হরমুজে মাইন, লোহিত সাগরে ক্ষেপণাস্ত্র?

তেহরানের কর্মকর্তারা আরও একধাপ এগিয়ে সরাসরি হুমকি দিয়েছেন—প্রয়োজনে হরমুজ প্রণালীতে মাইন পেতে দেবে ইরান। বিশ্ব জ্বালানি সরবরাহের এই গুরুত্বপূর্ণ পথ বন্ধ হয়ে গেলে বৈশ্বিক তেলবাজারে নেমে আসবে চরম অস্থিরতা।
এছাড়া, ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের ‘স্লিপিং সেল’ও সক্রিয় হতে পারে যেকোনো সময়। আশঙ্কা করা হচ্ছে, লোহিত সাগরে তারা আবার শুরু করতে পারে বাণিজ্যিক জাহাজে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা।

ওয়াশিংটনও প্রস্তুতি নিচ্ছে?

বিশ্লেষকরা বলছেন, মার্কিন সামরিক উড়োজাহাজগুলোকে আটলান্টিক মহাসাগর পাড়ি দিতে দেখা গেছে। যা ওয়াশিংটনের পক্ষ থেকেও যুদ্ধ-প্রস্তুতির ইঙ্গিত।

অন্যদিকে, দ্য টেলিগ্রাফ জানিয়েছে—মার্কিন এক কর্মকর্তার মতে, ট্রাম্প এখন ইসরায়েল-ইরান সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি অংশগ্রহণ নিয়ে আগের চেয়ে অনেক বেশি আগ্রহী।

বিশ্বজুড়ে তেল, নিরাপত্তা ও ভূ-রাজনীতির ভারসাম্য—সবই আজ ঝুঁকিতে। ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনা এক নতুন মাত্রায় পৌঁছাতে চলেছে। একটুখানি আগুনই যথেষ্ট এই বিস্ফোরক পরিস্থিতিকে ভয়াবহ যুদ্ধে রূপ দিতে।

নোভা

×