
ছবি: সংগৃহীত
ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলার জেরে চরম সতর্কতার মধ্যে রয়েছে ইরান। হামলার পরপরই দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি রাজধানী তেহরানের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের লাভিজান এলাকায় অবস্থিত একটি ভূগর্ভস্থ সুরক্ষিত বাঙ্কারে আশ্রয় নেন।
ইরান ইন্টারন্যাশনালের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত শুক্রবার (১৩ জুন) ভোরে ইসরায়েলি হামলা শুরু হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই খামেনি পরিবারসহ নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যান। রোববার রাতে ইরানের অভ্যন্তরীণ দুটি তথ্যপ্রযুক্তি সূত্রের বরাতে সংবাদমাধ্যমটি এ তথ্য নিশ্চিত করে।
সূত্র জানায়, আয়াতুল্লাহ খামেনির সঙ্গে তাঁর পরিবারও বাঙ্কারে অবস্থান করছেন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন তাঁর প্রভাবশালী ছেলে মোজতবা খামেনি। তবে আগের মতো এবারও খামেনির অন্য দুই ছেলে, মাসুদ ও মোস্তফা তাঁর সঙ্গে নেই বলে জানা গেছে।
এর আগেও ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ইরানের প্রতিরোধমূলক সামরিক অভিযানের সময় একই ধরনের সতর্কতা নেওয়া হয়েছিল।
২০২৪ সালের ১৩ এপ্রিল চালানো ‘অপারেশন ট্রু প্রমিজ ১’-এ সিরিয়ার দামেস্কে দুই ইরানি জেনারেল হত্যার জবাবে ইরান ৩০০টিরও বেশি ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন নিক্ষেপ করেছিল ইসরায়েলের সামরিক স্থাপনাগুলোর দিকে।
পরবর্তীতে ১ অক্টোবর ‘ট্রু প্রমিজ ২’ নামক দ্বিতীয় দফার হামলায় হিজবুল্লাহ নেতা হাসান নাসরুল্লাহ ও অন্যান্য ইরান-ঘনিষ্ঠ নেতাদের হত্যার প্রতিক্রিয়ায় ২০০টির বেশি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে ইরান।
এই দুটি অভিযানের সময়ও খামেনি ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের বাঙ্কারে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল বলে জানায় সূত্র।
এবারের উত্তেজনা আরও নতুন মাত্রা পেয়েছে, কারণ ইসরায়েল এই প্রথমবারের মতো ইরানের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মাশহাদে হামলা চালিয়েছে, যা ইহুদি রাষ্ট্র থেকে প্রায় ২,৩০০ কিলোমিটার দূরে। মধ্যপ্রাচ্যের এক কূটনৈতিক সূত্র ইরান ইন্টারন্যাশনালকে জানায়, এই হামলা ছিল সরাসরি আয়াতুল্লাহ খামেনির উদ্দেশে একটি "সতর্কবার্তা"।
সূত্রটির ভাষ্য, “চাইলেই অভিযানের প্রথম রাতেই ইসরায়েল খামেনিকে হত্যা করতে পারত। তবে তাকে জীবিত রেখে এখন ইসলামিক প্রজাতন্ত্রকে তাদের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি সম্পূর্ণভাবে পরিত্যাগের জন্য চূড়ান্ত সময় দিচ্ছে তেলআবিব।”
বিশ্লেষকদের মতে, খামেনিকে জীবিত রেখে ইসরায়েল যে কৌশল নিয়েছে, তা ইরানের ভেতরে ও বাইরের রাজনীতিতে জোরালো প্রভাব ফেলতে পারে।
তেহরান এখন চরম নিরাপত্তা সতর্কতায় রয়েছে, এবং আগামিদিনগুলোতে দুই দেশের মধ্যে আরও উত্তেজনা সৃষ্টি হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ছামিয়া