
কিয়েভে রুশ হামলার পর বিধ্বস্ত ভবন এলাকায় বাসিন্দারা
ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত রাশিয়া ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে। ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই হামলায় এক মার্কিন নাগরিকসহ ১৫ জন নিহত এবং ১০০ জনের বেশি আহত হয়েছেন। খবর বিবিসির।
ইউক্রেনীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, একসঙ্গে প্রায় ৪৪০টি ড্রোন ও ৩২টি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়। এর মধ্যে একটি ড্রোন শহরের একটি ৯তলা অ্যাপার্টমেন্ট ভবনে আছড়ে পড়ে, ধ্বংস হয়ে যায় অন্তত ৪০টি ফ্ল্যাট। এই আক্রমণকে যুদ্ধ শুরুর পর কিয়েভের ওপর রাশিয়ার অন্যতম বৃহত্তম ও দীর্ঘস্থায়ী হামলা হিসেবে বর্ণনা করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তিনি বলেন, এটি ছিল সবচেয়ে ভয়ঙ্কর হামলাগুলোর একটি।
কিয়েভের মেয়র ভিতালি ক্লিচকো জানান, নিহতদের মধ্যে ৬২ বছর বয়সী এক মার্কিন নাগরিকও রয়েছেন। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় সলোমিয়ানস্কি জেলায় ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনো অনেকে আটকা পড়ে থাকতে পারেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, রাশিয়া ইচ্ছাকৃতভাবে বল বিয়ারিংভর্তি ক্লাস্টার বোমা ব্যবহার করেছে। এর ফলে সর্বোচ্চ প্রাণহানি ঘটেছে। ইউক্রেনের সংসদ সদস্য লেসিয়া ভাসিলেঙ্কো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন, একটা দুঃস্বপ্নের মধ্যেই ঘুম ভাঙলো।
ভবন ধসে পড়েছে, মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইগর ক্লিমেঙ্কো জানান, আবাসিক ভবন ছাড়াও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো লক্ষ্য করে হামলা হয়েছে। বোমার শব্দে কেঁপে ওঠে গোটা শহর। ইউক্রেনের মোবাইল বিমান প্রতিরক্ষা ইউনিটের গুলির আওয়াজে আকাশভর্তি হয়ে যায়। সকালেও হামলার আশঙ্কায় উদ্ধার অভিযান বাধাগ্রস্ত হয়। শহরের ২৭টি জেলার ওপর হামলা হয়েছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
ইতোমধ্যে ওডেসা শহরেও রাশিয়ার ড্রোন হামলায় একজন নিহত ও অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। জবাবে ইউক্রেনও পাল্টা হামলা চালিয়েছে। তবে সরাসরি শান্তি আলোচনায় কোনো অগ্রগতি আনতে পারেনি। এদিকে রাশিয়া দাবি করেছে, তারা ইউক্রেনীয় বাহিনীর একটি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা প্রতিহত করেছে যা দোনেৎস্কের রাশিয়া-নিয়ন্ত্রিত এলাকায় চালানো হয়েছিল।
রাশিয়ার বার্তা সংস্থাগুলোর মতে, এক রাতেই রাশিয়ার ৯টি অঞ্চলে ১৪৭টি ইউক্রেনীয় ড্রোন গুলি করে নামানো হয়েছে। জেলেনস্কি বর্তমানে কানাডায় অনুষ্ঠিত জি-৭ সম্মেলনে রয়েছেন। সেখান থেকে তিনি বলেন, এটা সন্ত্রাসের স্পষ্ট উদাহরণ। যখন বিশ্বের প্রভাবশালীরা চোখ বন্ধ করে রাখে, তখন এমনটাই ঘটে।