
ইসরাইলি হামলায় নিহতদের শেষ বিদায় জানাচ্ছেন আত্মীয়-স্বজন, বন্ধুবান্ধবরা
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরাইলি হামলায় আরও ৭৪ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ৩৮ জনই ছিলেন খাদ্য সহায়তা নেওয়ার জন্য রাফাহসহ বিভিন্ন ত্রাণ বিতরণকেন্দ্রে জড়ো হওয়া ক্ষুধার্ত মানুষ। মার্কিন ও ইসরাইলি সহায়তাপুষ্ট বিতর্কিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) পরিচালিত ত্রাণ বিতরণকেন্দ্রে হামলায় এই প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। যুদ্ধবিধ্বস্ত অঞ্চলটিতে এসব কেন্দ্র নিয়ন্ত্রিত হলেও বহু বিশ্লেষকের মতে সেগুলো পরিণত হয়েছে মানবিক কসাইখানায়। খবর আলজাজিরার।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার টুর্ক ইসরাইলের এ ধরনের সামরিক কৌশলকে ভয়াবহ ও অমানবিক বলে অভিহিত করেছেন। জেনেভায় জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের বার্ষিক প্রতিবেদনে তিনি বলেন, ইসরাইল খাদ্যকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে এবং জীবনরক্ষাকারী সহায়তা অবরুদ্ধ করে রেখেছে। তিনি আরও বলেন, ক্ষুধার্ত মানুষের ওপর এমন প্রাণঘাতী হামলার নিরপেক্ষ ও দ্রুত তদন্ত হওয়া উচিত। পাশাপাশি ইসরাইলি নেতাদের মানবতাবিরোধী ভাষ্য নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন টুর্ক।
গাজা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, ইসরাইলের টানা ২০ মাসের হামলায় এখন পর্যন্ত ৫৫ হাজার ৩৬২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। যাদের মধ্যে কয়েক হাজার শিশু রয়েছে। মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টা রাফাহ শহরের ফ্ল্যাগ রাউন্ডআবাউটে (জিএইচএফ-এর প্রধান বিতরণকেন্দ্রের কাছে) ইসরাইলি সেনারা সহায়তা প্রত্যাশী জনতার ওপর গুলি চালায়। হেবা জুদা ও মোহাম্মদ আবেদ নামে দুজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, চারপাশ থেকে গুলি আসছিল, সবাই নিচে পড়ে যাচ্ছিল।
তারা জানান, গত এক সপ্তাহ ধরে তাদের পরিবারে খাদ্য জোগাতে এই বিপজ্জনক পথে বারবার আসছেন তারা। উত্তর গাজায় তিনজন এবং গাজা সিটিতে আরও দুইজন সহায়তা নিতে গিয়ে ইসরাইলি হামলায় নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। জিএইচএফের বিতরণ কার্যক্রম শুরু হয় মে মাসের শেষদিকে। ওই সময় তিন মাসের সর্বাত্মক অবরোধ কিছুটা শিথিল করে ইসরাইল। তবে তাতেও যথেষ্ট খাদ্য বা ওষুধ প্রবেশের সুযোগ মেলেনি। জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক মানবিক সংস্থাগুলো জিএইচএফের সঙ্গে কাজ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।