ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ১৬ জুন ২০২৫, ২ আষাঢ় ১৪৩২

ইসরায়েলি হামলার জেরে ইরানে সরকার পরিবর্তনের ইঙ্গিত নেতানিয়াহুর

প্রকাশিত: ১৬:৪৪, ১৬ জুন ২০২৫

ইসরায়েলি হামলার জেরে ইরানে সরকার পরিবর্তনের ইঙ্গিত নেতানিয়াহুর

ছবি: সংগৃহীত।

ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির কারণে চালানো সাম্প্রতিক হামলার জেরে দেশটিতে সরকার পরিবর্তন ঘটতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। গত ১৫ জুন যুক্তরাষ্ট্রের ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ মন্তব্য করেন।

নেতানিয়াহু বলেন, “ইরানি শাসনব্যবস্থা খুব দুর্বল, তাই সরকার পরিবর্তন অবশ্যই এই অভিযানের একটি সম্ভাব্য পরিণতি হতে পারে। আমরা দুইটি অস্তিত্বগত হুমকি—ইরানের পারমাণবিক ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি—দূর করতে যা কিছু করা প্রয়োজন, তা করছি।”

ইসরায়েল গত ১৩ জুন ভোরে “অপারেশন রাইজিং লায়ন” নামে এক বিস্ময়কর সামরিক অভিযানে ইরানের বেশ কয়েকটি সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায়। এতে দেশটির শীর্ষ জেনারেল ও পারমাণবিক বিজ্ঞানীরা নিহত হন এবং পরিকাঠামোর ক্ষয়ক্ষতি হয়। এর জবাবে ইরানও ইসরায়েলের বিভিন্ন স্থানে পাল্টা হামলার ঘোষণা দেয়।

ইসরায়েলের কর্মকর্তারা যদিও বলছেন, এই অভিযানের মূল লক্ষ্য ইরানি সরকার পতন নয়, বরং দেশটির পারমাণবিক ও ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি ধ্বংস করা। তবে নেতানিয়াহু সরাসরি ‘শাসন পরিবর্তন’-এর সম্ভাবনার কথা তুলে ধরেন।

সাক্ষাৎকারে নেতানিয়াহু আরও দাবি করেন, “আমরা নিশ্চিত যে ইরান গোপনে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির পরিকল্পনা করছিল। তাদের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ প্রক্রিয়া দ্রুত এগোচ্ছিল এবং কয়েক মাসের মধ্যেই তারা একটি পরীক্ষামূলক ডিভাইস তৈরি করতে পারত।”

এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমরা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এ সংক্রান্ত গোয়েন্দা তথ্য শেয়ার করেছি। তাই এই হামলা ছিল জরুরি।”

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, যুদ্ধ বন্ধ করা সম্ভব, তবে ইরান যেন যুক্তরাষ্ট্রের কোনো লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত না হানে—এ বিষয়ে সতর্কবার্তা দিয়েছেন তিনি।

ABC নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প জানান, “যুক্তরাষ্ট্র এখনো সরাসরি যুদ্ধে জড়ায়নি, তবে পরিস্থিতি বিবেচনায় সামরিক হস্তক্ষেপের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।” তিনি আরও বলেন, তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং এই সংকটে পুতিনকে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে দেখা যেতে পারে।

এছাড়া ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ১৫ জুন নির্ধারিত পারমাণবিক আলোচনা বাতিল হয়েছে। ইরান জানায়, ইসরায়েলের হামলার মধ্যে তারা কোনো আলোচনায় বসবে না।

এই সংঘর্ষে দুই পক্ষই আবারও ব্যাপক হামলা চালিয়েছে। এতে বহু প্রাণহানি হয়েছে এবং মধ্যপ্রাচ্যে বড় ধরনের যুদ্ধের আশঙ্কা বাড়ছে।

সূত্র: https://short-link.me/14I9Y

মিরাজ খান

×