
ছবি: সংগৃহীত
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন আবারও কড়া অভিবাসন নীতির পথে হাঁটছে। নতুন এক কূটনৈতিক চিঠিতে জানানো হয়েছে, ৩৬টি নতুন দেশ যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার মুখোমুখি হতে পারে। যদি তারা নির্ধারিত নিরাপত্তা ও কাগজপত্র যাচাইয়ের মানদণ্ড পূরণ করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে আগামী ৬০ দিনের মধ্যে তাদের নাগরিকদের প্রবেশ আংশিক বা পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হবে।
আগে নিষিদ্ধ ছিল ১২টি দেশ
চলতি মাসের শুরুতেই ট্রাম্প প্রশাসন ১২টি দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ নিষিদ্ধ করে। তাদের দাবি, "বিদেশি সন্ত্রাসী এবং জাতীয় নিরাপত্তা হুমকি" থেকে আমেরিকানদের রক্ষা করতেই এই পদক্ষেপ।
নিষিদ্ধ দেশগুলো হলো:
আফগানিস্তান, মিয়ানমার, চাদ, কঙ্গো প্রজাতন্ত্র, ইকুয়েটোরিয়াল গিনি, ইরিত্রিয়া, হাইতি, ইরান, লিবিয়া, সোমালিয়া, সুদান ও ইয়েমেন।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক অভ্যন্তরীণ কূটনৈতিক চিঠিতে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ৩৬টি দেশের নাম উল্লেখ করে তাদের বিরুদ্ধে একাধিক গুরুতর অভিযোগ তুলে ধরেছেন। চিঠিতে বলা হয়েছে, এই দেশগুলোর অনেকের সরকারের কাঠামো দুর্বল অথবা তারা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সহযোগিতায় অনিচ্ছুক, যার ফলে তারা বৈধ ও নির্ভরযোগ্য পরিচয়পত্র সরবরাহে ব্যর্থ হচ্ছে। অনেক দেশের পাসপোর্টের নিরাপত্তা ব্যবস্থা প্রশ্নবিদ্ধ। আরও অভিযোগ রয়েছে, কিছু দেশ যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিষ্কারের নির্দেশপ্রাপ্ত তাদের নিজ দেশের নাগরিকদের ফেরত নিতে অস্বীকৃতি জানাচ্ছে। আবার কিছু দেশের নাগরিকরা মার্কিন ভিসার নির্ধারিত সময় পার করে অবৈধভাবে অবস্থান করছেন। এছাড়াও, কিছু দেশের নাগরিকদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকা, ইহুদিবিরোধী বক্তব্য বা কর্মকাণ্ড এবং মার্কিনবিরোধী তৎপরতায় জড়ানোর অভিযোগও উত্থাপন করা হয়েছে। তবে চিঠিতে স্পষ্ট করা হয়েছে যে, সব অভিযোগ সব দেশের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। তবে যেসব দেশ নির্ধারিত নিরাপত্তা ও প্রশাসনিক মানদণ্ড পূরণে ব্যর্থ হবে, তাদের ওপর আংশিক বা সম্পূর্ণ ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হতে পারে।
নতুন করে নিষেধাজ্ঞার হুমকিতে যেসব দেশ
৩৬টি দেশের তালিকায় রয়েছে:
আঙ্গোলা, অ্যান্টিগুয়া ও বার্বুডা, বেনিন, ভূটান, বুরকিনা ফাসো, কাবো ভার্দে, কম্বোডিয়া, ক্যামেরুন, আইভরি কোস্ট, কঙ্গো ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক, জিবুতি, ডোমিনিকা, ইথিওপিয়া, মিশর, গ্যাবন, গাম্বিয়া, ঘানা, কিরগিজস্তান, লাইবেরিয়া, মালাউই, মৌরিতানিয়া, নাইজার, নাইজেরিয়া, সেন্ট কিটস অ্যান্ড নেভিস, সেন্ট লুসিয়া, সাও টোমে ও প্রিন্সিপে, সেনেগাল, দক্ষিণ সুদান, সিরিয়া, তানজানিয়া, টোঙ্গা, তুভালু, উগান্ডা, ভানুয়াতু, জাম্বিয়া ও জিম্বাবুয়ে।
এর বাইরেও বুরুন্ডি, কিউবা, লাওস, সিয়েরা লিওন, টোগো, তুর্কমেনিস্তান ও ভেনেজুয়েলা নামের সাতটি দেশের নাগরিকদের প্রবেশ ইতোমধ্যে আংশিকভাবে সীমিত করা হয়েছে।
ট্রাম্প তার প্রথম প্রেসিডেন্সিতে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ সাতটি দেশের উপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিলেন, যা পরবর্তী সময়ে একাধিক পরিবর্তনের পর ২০১৮ সালে সুপ্রিম কোর্ট কর্তৃক অনুমোদিত হয়।
একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, “আমরা সবসময় আমাদের নীতিগুলো পুনর্মূল্যায়ন করি যেন মার্কিন নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায় এবং বিদেশিরা আমাদের আইন মেনে চলে।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের ভিসা প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জাতীয় নিরাপত্তা ও জননিরাপত্তার সর্বোচ্চ মান বজায় রাখা আমাদের অঙ্গীকার।”
মুমু ২