ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ০৯ জুন ২০২৫, ২৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

আফ্রিকার বৃহত্তম বস্তিতে চালু করা হয়েছে বিটকয়েন

প্রকাশিত: ১৫:২১, ৯ জুন ২০২৫

আফ্রিকার বৃহত্তম বস্তিতে চালু করা হয়েছে বিটকয়েন

আফ্রিকার সবচেয়ে বড় শহরঘেঁষা বস্তি হিসেবে পরিচিত কিবেরার রাস্তার পাশে যেখানে সাধারণত শাকসবজির দোকান দেখা যায়, সেখানেই এখন দেখা যাচ্ছে বিটকয়েন গ্রহণকারী বিক্রেতাদের।

কেনিয়ার রাজধানী নাইরোবির কিবেরা বস্তির সোয়েতো ওয়েস্ট এলাকায় প্রায় ২০০ জন মানুষ বিটকয়েন ব্যবহার করছেন। এর পেছনে রয়েছে একটি বিশেষ উদ্যোগ—দেশের সবচেয়ে দরিদ্র ও আর্থিকভাবে বঞ্চিত এলাকাগুলোর মানুষের কাছে আর্থিক সেবা পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা।

এই উদ্যোগের উদ্যোক্তারা বলছেন, বিটকয়েন একটি গণতান্ত্রিক, সবার জন্য উন্মুক্ত প্রযুক্তি, তাই এর ব্যবহার এসব অঞ্চলে স্বাভাবিকই। তবে বিশেষজ্ঞরা এই প্রবণতায় বড় ধরনের ঝুঁকির দিকও দেখছেন।

এই উদ্যোগের পেছনে রয়েছে কেনিয়ার ফিনটেক কোম্পানি আফ্রিবিট আফ্রিকা, যারা একটি অলাভজনক প্রকল্পের মাধ্যমে কিবেরায় বিটকয়েন চালু করেছে।

আফ্রিবিট আফ্রিকার সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক কমিউনিটি কর্মী রনি এমদাওয়িদা বলেন, "কিবেরার অনেক মানুষেরই প্রচলিত ব্যাংকে সঞ্চয় রাখার সুযোগ নেই। কিন্তু বিটকয়েন ব্যবহারে কোনো ডকুমেন্টেশন লাগে না, ফলে তারা আর্থিক স্বাধীনতার ভিত্তি পায়।"

২০০৯ সালে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকটের সময় বিটকয়েন তৈরি করা হয় একটি বিকেন্দ্রীভূত ডিজিটাল সম্পদ হিসেবে, যাতে লেনদেনের বিকল্প পথ তৈরি হয়। তবে বর্তমানে এটি অনেক বেশি জনপ্রিয় মূলত সঞ্চয় বা বিনিয়োগের মাধ্যম হিসেবে—ডিজিটাল স্বর্ণ বলেও অনেকেই একে উল্লেখ করেন। গত পাঁচ বছরে এর দাম প্রায় ১,০০০ শতাংশ বেড়েছে, তবে এর অস্থিরতা এবং নিয়ন্ত্রণহীনতা উদ্বেগের বিষয়। 

২০২২ সালের শুরুতে আফ্রিবিট আফ্রিকা সোয়েতো ওয়েস্টে বিটকয়েন চালু করে স্থানীয় বর্জ্য সংগ্রহকারীদের মাধ্যমে। এদের অনেকেই বেসরকারি দাতব্য সংস্থার মাধ্যমে অর্থ পেয়ে থাকেন। এমদাওয়িদা বলেন, যুবকদের নতুন প্রযুক্তির প্রতি আগ্রহ বেশি থাকে বলে তাদের দিয়েই শুরু করা হয়।

রবিবারগুলোতে স্থানীয় তরুণরা বর্জ্য পরিষ্কার করেন, এরপর কয়েক ডলারের বিটকয়েন দিয়ে তাদের পারিশ্রমিক দেওয়া হয়। এভাবে এখন পর্যন্ত প্রায় ১০ হাজার ডলারের সমপরিমাণ বিটকয়েন ওই এলাকায় প্রবাহিত হয়েছে।

তবে এই প্রবণতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন কেনিয়ার ফিনটেক অ্যালায়েন্সের চেয়ারম্যান আলি হোসেন কাসিম

তিনি বলেন, “বিটকয়েন একটি অত্যন্ত অস্থির সম্পদ। আমি যদি নিজের ৮০ শতাংশ সম্পদ এতে বিনিয়োগ না করি, তাহলে কিবেরার কেউ কীভাবে পারবে?”

তিনি স্বীকার করেন, প্রবাসীদের পাঠানো অর্থের মতো ক্ষেত্রে ডিজিটাল মুদ্রা খরচ কমাতে পারে, তবে কিবেরার মতো দরিদ্র এলাকায় বিটকয়েন ব্যবহারে সেভাবে সুবিধা দেখেন না। তাছাড়া বিটকয়েনের কোনো নিয়ন্ত্রণ বা সুরক্ষা নেই, যা অন্যান্য আর্থিক সেবায় থাকে।

সূত্র - https://abcnews.go.com/International/wireStory/bitcoin-introduced-africas-largest-slum-risks-rewards-122644458

সানজানা

×