
ছবি: জনকণ্ঠ
জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ও বাউফল উন্নয়ন ফোরামের চেয়ারম্যান ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, “রাস্তা সংস্কারের কাজগুলো শুধুই আজকে নয়, বিগত ১৫ বছরেও যখন কোনো ভোট ছিল না, নেতৃত্ব ছিল না, জনগণের প্রতিনিধিত্ব বলে কিছুই ছিল না— সেই সময়েও আমরা এই কাজগুলো করার চেষ্টা করেছি। সেই সময় আমরা জানতাম পুলিশ আমাদের গ্রেপ্তার করতে পারে, তবুও আমরা ঝুঁকি নিয়ে কাজ করেছি।”
সোমবার (৯ জুন) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে বাউফল উপজেলার কালিশুরী ইউনিয়নের রাজাপুর হিজবুল্লাহ বাজারসংলগ্ন রাস্তা সংস্কারের কাজের উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ আরও বলেন, “আমরা তখনও আপনাদের কাছ থেকে দূরে যাইনি, এখনও আছি, ভবিষ্যতেও আল্লাহ যতদিন বাঁচিয়ে রাখবেন, ততদিন বাউফলের জন্য কাজ করে যাব। আমরা কোনো অপপ্রচারে কান দেব না, কোনো গুজবে কান দেব না।”
তিনি বলেন, “আমাকে কেউ কেউ মাঝে মাঝে বলে, ‘মাসুদ ভাই, আপনার ফেসবুক পেজ থেকে মাঝে মাঝে বিভ্রান্তিকর কিছু লেখা দেখি, কিছু কথা থাকে যেগুলো আপনার বলা কথা না—কিন্তু আপনার নামের কিছু পেজ থেকে এগুলো প্রচার হচ্ছে।’ আমি স্পষ্ট করে বলছি, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর একজন কর্মী বা সমর্থকও কোনো উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়ে এই সমাজ বা রাষ্ট্রে অশান্তি সৃষ্টি করবে না।”
তিনি আরও বলেন, “আপনাদের দোয়া ও ভালোবাসায় আমার ফেসবুক পেজে এক মিলিয়ন ফলোয়ার রয়েছে। এই পেজটা সবাই চেনে বলেই এত ফলোয়ার হয়েছে। আমার নামে এখন মনে হয় অর্ধশতাধিক পেজ চালু আছে— এটা তো একটা সংকট। আমি নিজে খুব একটা আইটি বিষয়ে দক্ষ না। যতটুকু পারি, আপনাদের সঙ্গে সমন্বয়ের জন্য ফেসবুকে থাকি এবং আপনাদের কথা শুনে নিজের বক্তব্য দেওয়ার চেষ্টা করি। কেউ কেউ হয়তো খুব ‘দরদি’ হয়ে বা ‘শুভাকাঙ্ক্ষী’ সেজে এসব পেজ চালাচ্ছে। আমি অনুরোধ করছি, যারা এসব পেজ পরিচালনা করছেন, তারা সতর্ক হোন। না হলে আমি আইনগত ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হব। তারপরও আমরা বাংলাদেশে কোনো অশান্তি সৃষ্টি হতে দেব না।”
জামায়াতের এই নেতা আরও বলেন, “কোনো উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়ে আমরা পরিবেশকে অশান্ত হতে দেব না। বিগত ১৭ বছর তো বিশৃঙ্খলা ছিল, আর কত বিশৃঙ্খলার মধ্যে থাকব? এখন সময় এসেছে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সহনশীলভাবে কাজ করার। আমরা একে অপরকে সম্মান করব, শ্রদ্ধা করব।”
“বাউফলের মানুষের শুধু রাস্তা দরকার নয়, তার চেয়েও বেশি দরকার সম্মান। একসময় এই মাটিতে শুনতে হতো—‘আমরা ক্রেস্ট চাই না, ক্যাশ চাই।’ কিন্তু এবার আমরা আগামী ১০ জুন বাউফল সরকারি কলেজ মাঠে আমাদের কলিজার টুকরা সন্তান—যারা ক্লাস ফাইভ থেকে টেন পর্যন্ত প্রথম থেকে দশম রোলের মধ্যে রয়েছে—তাদের হাতে ক্রেস্ট তুলে দিয়ে সম্মান জানাব। আমরা আমাদের শিক্ষকদের সম্মান জানাব, অভিভাবকদের সম্মান জানাব।”
ড. মাসুদ আরও বলেন, “আজ আমরা রাস্তা সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছি, ব্রিজ সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছি। প্রয়োজনে বাসাবাড়িতে টিউবওয়েল দেওয়ার চেষ্টা করছি। মসজিদে কাজ করার চেষ্টা করছি। আজ সকালে মন্দিরের কিছু ভাই এসেছিলেন; মন্দির সংস্কারের অনুরোধ করেছেন। আমি পৌরসভার সেসব ভাইদের জন্য কাজের সুযোগ করে দিয়েছি। আমরা চেষ্টা করছি সর্বত্র, যেখানে প্রয়োজন। বাউফলের মানুষ এখন কথা চায় না, কাজ চায়। আপনারা যদি কাজ চান, তাহলে কাজের মূল্যায়ন করুন। এই দেশের মানুষ এখন শাসক চায় না, ভাষণও চায় না। এদেশের মানুষ এখন সেবক চায়।”
এসময় ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের সঙ্গে উপজেলা ও ইউনিয়ন জামায়াতের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এম.কে.