ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১০ জুন ২০২৫, ২৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

আশালতা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৭০ বছর পূর্তি উপলক্ষে মিলনমেলা অনুষ্ঠিত

এবিএম কাইয়ুম রাজ, সাতক্ষীরা 

প্রকাশিত: ২১:১৬, ৯ জুন ২০২৫

আশালতা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৭০ বছর পূর্তি উপলক্ষে মিলনমেলা অনুষ্ঠিত

ঐতিহ্যবাহী নুরনগর আশালতা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৭০ বছর পূর্তি উপলক্ষে সোমবার বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয় বর্ণাঢ্য মিলনমেলা। দিনব্যাপী এই অনুষ্ঠানে অংশ নেন বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থী-শিক্ষকবৃন্দ, সরকারি কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন পর্যায়ের গুণীজনরা।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সরকারের বাণিজ্য, বস্ত্র ও পাট এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন। তিনি বলেন, “অনেক টাকার মালিক হলেই মানুষ সফল হয় না, বরং যাদের সামাজিক সম্মান বেশি তারাই প্রকৃত সম্পদশালী। নুরনগর আশালতা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের কৃতি শিক্ষার্থী মো. আব্দুল মজিদ ও ড. শেখ আব্দুর রশিদ সমাজে সম্মান ও ভালোবাসা অর্জনের মধ্য দিয়ে সেই সত্যকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।”

তিনি আরও বলেন, একসময় দেশে অস্থিরতা ও দুর্বৃত্তায়নের মাধ্যমে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। আজ সেই অবস্থা থেকে উত্তরণ ঘটছে। সত্য, ন্যায় ও আদর্শকে ভিত্তি করেই সমাজ গড়তে হবে।

সকালে বিদ্যালয় চত্বর থেকে একটি বর্ণাঢ্য র‌্যালি বের হয়, যা হাজিপুর এলাকা ঘুরে আবার বিদ্যালয়ে ফিরে আসে। অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক আবু বক্কার। স্বাগত বক্তব্য দেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আব্দুর রশিদ।

আলোচনায় আরও বক্তব্য দেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান ও মূল আয়োজক ড. আব্দুল মজিদ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব সিদ্দিক জোবায়ের, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মমতাজ আহমেদ, যশোর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান মোছা. আসমা বেগম, খুলনা বিভাগীয় কমিশনার ফিরোজ সরকার এবং ডিআইজি রেজাউল হক পিপিএম।

অনুষ্ঠানের শুরুতে ডিআইজি রেজাউল হকের পক্ষ থেকে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের হাতে আব্রাহাম লিংকনের বাণী সংবলিত একটি বোর্ড তুলে দেন প্রধান অতিথি। একইসাথে মোড়ক উন্মোচন করা হয় ড. মিজানুর রহমান সম্পাদিত স্মারকগ্রন্থ ‘শেকড়–২’-এর।

বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পরিবেশনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান মঞ্চস্থ হয়। পরবর্তী পর্বে প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা স্মৃতিচারণ করেন। মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আব্দুর রশিদ তার বক্তব্যে বন্ধুত্বের স্মৃতি তুলে ধরে বলেন, “বন্ধু শেখ আব্দুল মজিদ পড়াশোনায় আমাকে উৎসাহ দিয়েছেন।” তিনি আরও জানান, তিনি বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন এবং সকলকে কোভিড সংক্রমণ বিষয়ে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব সিদ্দিক জোবায়ের জানান, সরকার বেসরকারি শিক্ষকদের জন্য স্বাস্থ্যবীমা চালুর পরিকল্পনা করছে। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, এই বিদ্যালয় থেকে ভবিষ্যতেও আরও অনেক আব্দুল মজিদ ও আব্দুর রশিদের জন্ম হবে।

ড. আব্দুল মজিদ তার বক্তব্যে বিদ্যালয়ের জন্য একটি আইটি কর্নার স্থাপনের ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, “শুধু লেখাপড়া নয়, আচরণ ও কার্যক্রম দিয়েও বিদ্যালয়ের মুখ উজ্জ্বল করতে হবে।”

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন খুলনা বিভাগীয় কমিশনার মো. ফিরোজ সরকার, বিভাগীয় ডিআইজি, আইন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আজিজুল হক, সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ, পুলিশ সুপার মো. মনিরুল ইসলাম, শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা. রনী খাতুন, সহকারী কমিশনার (ভূমি) আব্দুল্লাহ আল রিফাত, অফিসার ইনচার্জ মো. হুমায়ুন কবিরসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা ও বিশিষ্টজনেরা।

 

রাজু

×