
গত এক দশকে মাইক্রোসফটের নেতৃত্ব দিয়েছেন চেয়ারম্যান ও সিইও সাট্যা নাডেলা। তার হাত ধরে মাইক্রোসফট কেবল ডেস্কটপ কম্পিউটিং-এর বাইরে গিয়ে হাইপারস্কেল কম্পিউটিং ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার যুগে পরিণত হয়েছে। আজ মাইক্রোসফট ক্লাউড ও সফটওয়্যার প্ল্যাটফর্ম হিসেবে নিজেদের সেবা দেওয়া ছাড়াও গ্রাহক ও অংশীদারদের জন্য ক্ষমতা হিসেবে কাজ করছে।
নাডেলা বলেন, “আমরা এমন একটি যুগে প্রবেশ করেছি যেখানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সহায়তায় কম্পিউটার ব্যবহারের নতুন দরজা খুলেছে। ন্যাচারাল ল্যাঙ্গুয়েজ (প্রাকৃতিক ভাষা) এখন যেকোনো কম্পিউটারের জন্য একটি সাধারণ ইন্টারফেস হিসেবে কাজ করছে, আর বিশাল তথ্য বিশ্লেষণ করে অর্থবোধক ফলাফল দেয় এমন একটি ‘রিজনিং ইঞ্জিন’ এর আবির্ভাব ঘটেছে।”
এই নতুন যুগকে তিনি ‘কোপাইলট যুগ’ হিসেবে উল্লেখ করেন, যেখানে কোড লেখা, শপিং, বিশ্লেষণ, শেখা এবং সৃষ্টির মতো কাজগুলো কর্পোরেট ও ব্যক্তিগত ব্যবহারকারীরা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা চালিত কো-অ্যাসিস্ট্যান্ট বা কোপাইলটের মাধ্যমে সম্পন্ন করবেন।
মাইক্রোসফটের গিটহাব কোপাইলট প্রথম সাফল্যের উদাহরণ। গিটহাবের সিইও নাট ফ্রিডম্যান বলেন, “এটি এমন একজন কোপাইলটের মতো, যিনি কোডিংয়ের সময় আপনাকে সাহায্য করেন, পরামর্শ দেন, কখনও মানেন আবার কখনও উপেক্ষা করা যায়।” গিটহাব কোপাইলট ওপেনএআইয়ের কোডেক্স ইঞ্জিন ব্যবহার করে বাস্তব সময়ে হাজার হাজার লাইনের কোড লিখতে সাহায্য করে।
বিশ্বের বড় বড় প্রতিষ্ঠান যেমন ডুওলিঙ্গো তাদের ডেভেলপমেন্ট স্পিড ২৫ শতাংশ বাড়িয়েছে কোপাইলট ব্যবহারের ফলে। মাইক্রোসফটের অন্যান্য প্রধান প্রোডাক্টেও কোপাইলট প্রযুক্তি সংযোজন করা হয়েছে—মাইক্রোসফট ৩৬৫ কোপাইলট, ডায়নামিক্স ৩৬৫ কোপাইলট, বিং সার্চে কোপাইলটসহ আরও অনেক ক্ষেত্রেই।
বিশেষ করে বিং সার্চে চ্যাটবটের মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা এককৃত এবং সংক্ষিপ্ত ফলাফল পেতে পারেন। বিং-এ ৫০০ কোটি চ্যাট এবং ৫০০ কোটি ছবি তৈরি হয়েছে মাত্র এক বছরে। এর বিপরীতে গুগল তাদের ‘জেমিনি’ চ্যাটবট নিয়ে এসেছে। এ প্রসঙ্গে নাডেলা বলেছিলেন, “আমি চাই সবাই জানুক, আমরা গুগলকে নাচিয়েছি।”
বিশ্বের প্রযুক্তি প্রেক্ষাপটে মাইক্রোসফটের এই কৃতিত্ব কো-ইন্টেলিজেন্স যুগের এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে, যেখানে মানুষ ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা একসঙ্গে কাজ করে ভবিষ্যত গড়ে তুলছে।
মিমিয়া