
ছবিঃ সংগৃহীত
বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় সার্চ ইঞ্জিন গুগল বর্তমানে এক ঐতিহাসিক আইনি সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ (DOJ) গুগলের বিরুদ্ধে আনা একচেটিয়া ব্যবসা (monopoly) করার অভিযোগে জয়লাভ করেছে, এবং এখন মামলার "প্রতিকার পর্ব" (remedies phase) চলছে। ধারণা করা হচ্ছে, এই পর্ব শেষে গুগলকে হয়তো তার কিছু গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসা (যেমন Chrome ব্রাউজার, Android) বিচ্ছিন্ন বা বিক্রি করতে হতে পারে।
অভিযোগ ও রায়ের সারাংশ
২০২০ সালে DOJ গুগলের বিরুদ্ধে মামলা করে, যেখানে বলা হয় গুগল ডিভাইস নির্মাতা ও ব্রাউজার কোম্পানিগুলোর সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির মাধ্যমে তার সার্চ ইঞ্জিনকে ডিফল্ট হিসেবে স্থাপন করে অন্য কোম্পানিগুলোর প্রবেশের পথ বন্ধ করে দিয়েছে।
২০২৪ সালের শেষদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের জেলা বিচারক অমিত মেহতা রায় দেন যে গুগল প্রকৃতপক্ষে বাজারে প্রতিযোগিতা হ্রাস করেছে এবং নিজের প্রভাব অপ্রতিস্পর্ধায় প্রতিষ্ঠা করেছে।
সম্ভাব্য শাস্তি ও প্রস্তাবিত পরিবর্তন
বর্তমানে আদালত কীভাবে গুগলকে "সংশোধনমূলক ব্যবস্থা" গ্রহণে বাধ্য করা হবে, তা নিয়ে পর্যালোচনা করছে। DOJ-এর সুপারিশ অনুযায়ী সম্ভাব্য পদক্ষেপগুলো হলো:
- Chrome ব্রাউজার বা Android প্ল্যাটফর্মকে বিক্রি করা,
- সার্চ ইঞ্জিনের ডেটা ও ওয়েব ইনডেক্স অন্যান্য প্রতিযোগীদের সাথে ভাগাভাগি করা,
- AI প্রযুক্তি ব্যবহারে সকল প্রতিযোগীর জন্য সমান সুযোগ তৈরি করা।
এই পরিবর্তনগুলি শুধু গুগলের জন্য নয়, গোটা ওয়েব ইকোসিস্টেমের জন্য এক বিপ্লব আনতে পারে।
গুগলের প্রতিক্রিয়া
গুগল এই ধরনের প্রস্তাবের তীব্র বিরোধিতা করেছে। তাদের মতে, এ ধরনের পদক্ষেপ প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনে বাধা সৃষ্টি করবে এবং ব্যবহারকারীদের অভিজ্ঞতা খারাপ করবে। গুগল বলেছে, তারা সবসময় প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশকে সমর্থন করে এসেছে, এবং এই মামলাটি নতুন প্রযুক্তির (যেমন AI) সম্ভাবনাকে সংকুচিত করবে।
AI ও নতুন সার্চ যুগের সম্ভাবনা
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই রায় বাস্তবায়িত হলে একটি নতুন সার্চ ইঞ্জিন যুগের সূচনা হতে পারে, যেখানে ওপেন সোর্স ইনডেক্স, বিকল্প সার্চ ইঞ্জিন (যেমন Perplexity, DuckDuckGo, Brave) ও AI-চালিত সার্চ (যেমন ChatGPT Search) আরও জনপ্রিয় হয়ে উঠবে।
গুগলের বিরুদ্ধে রায় এবং এর সম্ভাব্য শাস্তি শুধু একটি কর্পোরেশনের ভাগ্য নয়, বরং গোটা ডিজিটাল বিশ্বের কাঠামো পাল্টে দিতে পারে। ২০২৫ সালের আগস্টে চূড়ান্ত রায় আসার কথা রয়েছে, এবং সেটি প্রযুক্তি ইতিহাসে এক যুগান্তকারী অধ্যায় হয়ে থাকবে।
পৃথী