উলানিয়ার রসেভরা: রসমালাইয়ের রাজত্বে এক অন্য নাম

পটুয়াখালী জেলার গলাচিপা উপজেলার উলানিয়া বন্দরের রসমালাইয়ের খ্যাতি পুরো দেশ জুড়ে। উলানিয়ার রসমালাইয়ের স্বাদ নেননি এমন মানুষ পাওয়াই দুষ্কর। দেশের বিভিন্ন স্থানে রসমালাই তৈরি হলেও উলানিয়ার রসমালাই স্বাদে ও গুনে অতুলনীয়।

 উলানিয়ার রসমালাই আশপাশের অঞ্চলের মানুষের মনে ঠাঁই করে নিয়েছে আলাদাভাবে। অতিথি আপায়্যন কিংবা ছোট-বড় অনুষ্ঠান আয়োজন- সবকিছুতেই উলানিয়ার রসমালাই থাকে সব সময়। আত্মীয়স্বজনদের বাড়িতে বেড়াতে গেলে এ অঞ্চলের মানুষ রসমালাইকেই বেশি গুরুত্ব দেন। পাশাপাশি থাকে অন্যান্য মিষ্টির সমাহারও।

এখানকার দোকানগুলোতে প্রতিদিন ভোর থেকে রাত পর্যন্ত চলে বেচাকেনা। স্থানীয়রা ছাড়াও দূরদূরান্ত থেকে উলানিয়ায় বেড়াতে আসা লোকজন রসমালাই কিনতে ভুল করেন না। উলানিয়ার রসমালাই আজ শুধু স্থানীয়দের কাছেই নয়, দূর-দূরান্ত থেকে আসা পর্যটক ও মিষ্টিপ্রেমীদের হৃদয়ও জয় করেছে। সামাজিক মাধ্যমেও এই মিষ্টির জনপ্রিয়তা দিন দিন বাড়ছে। উলানিয়ার রসমালাই শুধু একটি মিষ্টিই নয়, এটি একটি ঐতিহ্য, একটি আবেগ। এর স্বাদ ও সৌরভ যে কাউকে মুগ্ধ করতে সক্ষম।

জহির নামের এক ক্রেতা জানান, রসমালাই তো সারাদেশেই এখন পাওয়া যায়,তবে এখানকার রসমালাই আর ওইসব রসমালাইয়ের মধ্যে স্বাদে ও রসনায় রাত আর দিনের তফাৎ।

দোকানের মালিক বলেন, প্রথমে বিভিন্ন গোয়ালার কাছ থেকে খাঁটি তরল দুধ সংগ্রহ করা হয়। এরপর ওই দুধ চুলার মধ্যে একটি নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় জ্বাল দেওয়া হয়। অন্তত দুই ঘণ্টা জ্বাল দেওয়ার পর দুধ ঘন হয়ে ছানায় রূপ নেয়। এরপর ছানা কেটে ছোট ছোট দানাদার মিষ্টির মতো বানানো হয়। পরে রসের মধ্যে দিয়ে সেটি রসমালাইতে পরিণত করা হয়। দুধের ঘনত্ব যত বেশি হবে, রসমালাই তত বেশি সুস্বাদু হবে।  ১মণ দুধ দিয়ে ১০/১২ কেজি রসমালাই তৈরি করা যায়। দেশের নানা প্রাপ্ত থেকে মানুষজন এসে আমাদের তৈরি রসমালাই কিনে নিয়ে যায়, খেয়ে প্রশংসা করে, শুনতে বেশ ভালোই লাগে।

রসমালাই ছাড়াও এখানে পাওয়া যায় বিভিন্ন ধরনের মিষ্টি, তবে সব কিছুকে ছাপিয়ে ক্রেতাদের কাছে চাহিদার শীর্ষে উলানিয়ার রসমালাই।

রসমালাই বিক্রেতাদের কাছ থেকে জানা যায়,  শুক্রবার  থাকে সাপ্তাহিক হাট আর সেই সময় বিক্রি বেড়ে যায়, বিভিন্ন জায়গা থেকে মানুষজন এখানে আসেন রসমালাইয়ের রসে ভরা স্বাদ নিতে।

এভাবে মানুষের মনে জায়গা করে নিয়েছে উলানিয়ার রসমালাই।