
ঈদের দিন দুপুরে মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলায় ভয়াবহ এক নদীভাঙনে যমুনার গর্ভে পুরোপুরি বিলীন হয়ে গেলো একটি স্কুলের তিনতলা ভবন। স্থানীয়দের আশঙ্কা অবশেষে সত্যি হলো।
জানা গেছে, উপজেলার ভাড়াঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবনটি দীর্ঘদিন ধরেই যমুনা নদীর ভাঙনের ঝুঁকিতে ছিল। ২০২২ সাল থেকেই স্কুল ভবনটি ভাঙনের মুখে পড়লেও স্থায়ী কোন প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ঈদের আগের দিন শুক্রবার ভবনের একটি অংশ নদীতে ধসে পড়ে, আর শনিবার (ঈদের দিন) দুপুরে পুরো ভবনটি নদীগর্ভে চলে যায়।
ঘটনার সময় স্কুল বন্ধ থাকায় কোনো শিক্ষার্থী বা শিক্ষক আহত হননি।
স্থানীয়দের অভিযোগ, কয়েক দফা পানি উন্নয়ন বোর্ড এলাকা পরিদর্শন করলেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। শুধু দুই দফায় কিছু বালুর বস্তা ফেলে ভবন রক্ষার চেষ্টা চালানো হয়েছিল, যা ছিল অপ্রতুল। আবারও বালুর বস্তা ফেলার পরিকল্পনা থাকলেও বাস্তবায়নের আগেই পুরো ভবনটি নদীতে বিলীন হয়ে যায়।
আরও জানা গেছে, এমন ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায়ও শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর মার্চ মাসে বিদ্যালয়ে একটি ওয়াশ ব্লক নির্মাণ করে, যার ব্যয় ছিল প্রায় ৮ লাখ টাকা। স্থানীয়রা তখন এই কাজ বন্ধের দাবি জানালেও তা উপেক্ষা করা হয়। এখন সেই ওয়াশ ব্লকসহ পুরো ভবনই যমুনার গর্ভে বিলীন।
পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, চরাঞ্চলে এ ধরনের স্থাপনা নির্মাণের আগে যথাযথ যাচাই-বাছাই প্রয়োজন ছিল। ভবিষ্যতে এ বিষয়ে আরও সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে সংস্থাটি।
এখন প্রশ্ন উঠেছে, শিক্ষার্থীদের শিক্ষাক্রম কীভাবে চলবে? স্কুল পুনর্গঠনে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে?
উপজেলা প্রশাসন জানিয়েছে, অস্থায়ীভাবে শিক্ষার্থীদের পাঠদানের জন্য বিকল্প স্থান খুঁজে দেখা হচ্ছে।
সংশ্লিষ্টদের অবহেলায় একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বিলীন হওয়ায় স্থানীয়দের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।
মিমিয়া