ছবি: সংগৃহীত।
ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোর সঙ্গে মূল ভূখণ্ডকে সুতোর মতো যুক্ত করে রাখা সংকীর্ণ শিলিগুড়ি করিডর বা ‘চিকেনস নেক’ ঘিরে নিরাপত্তা জোরদারে নরেন্দ্র মোদি সরকার আরও একধাপ এগিয়েছে। রাফাল যুদ্ধবিমান ও এস-৪০০ মোতায়েন এবং সামরিক মহড়ার পর এবার করিডরটির সড়ক অবকাঠামো উন্নয়নে বড় ধরনের প্রকল্প শুরু করেছে দিল্লি।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকা জানিয়েছে, শিলিগুড়ি করিডর ঘিরে কেন্দ্র সরকার একাধারে সড়ক সংস্কার এবং সেগুলোর নিয়ন্ত্রণ রাজ্যের কাছ থেকে নিজের হাতে নিচ্ছে। মূলত সীমান্তঘেঁষা অঞ্চল ও সংযুক্ত রাজ্যগুলোর মধ্যে সামরিক যান চলাচল নির্বিঘ্ন করতেই এই পদক্ষেপ।
শিলিগুড়ি করিডর দিয়ে জাতীয় সড়ক হিসাবে ব্যবহৃত রুটটি ১,১৯৮ কিলোমিটার জুড়ে বিস্তৃত। এর মধ্যে প্রায় ৭৪৫ কিলোমিটার রাস্তার দায়িত্বে রয়েছে বিভিন্ন রাজ্য সরকার। এবার সেই রাস্তাগুলো কেন্দ্রের আওতায় এনে চার লেনে উন্নীত করার কাজ শুরু হয়েছে। তৈরি হবে এলিভেটেড করিডর এবং সামরিক যান চলাচলের উপযোগী নতুন অবকাঠামো।
বিশেষভাবে বাংলাদেশ, নেপাল ও ভুটান সীমান্ত সংলগ্ন সড়কগুলোর ওপর বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে ভারত সরকার। কারণ এই করিডরের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হলে ভারতীয় মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়তে পারে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সাতটি রাজ্য— যাদের একত্রে ‘সেভেন সিস্টারস’ বলা হয়।
বিশ্লেষকরা বলছেন, চীন, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের নতুন কৌশলগত সমীকরণ ভারতের জন্য বড় উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভারতের আশঙ্কা— বাংলাদেশে চীনের প্রভাব বাড়ছে এবং তা উত্তর-পূর্ব সীমান্তে নজরদারি ও নিরাপত্তার জন্য হুমকি হতে পারে।
সম্প্রতি বাংলাদেশের লালমনিরহাটে বিমানঘাঁটি চালুর ঘোষণা এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় চীনা তৎপরতা বাড়ার খবর ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। এরপরই ত্রিপুরার একটি পুরনো সামরিক বিমানবন্দর সংস্কার শুরু করেছে ভারত।
চিকেনস নেকের নিরাপত্তা জোরদারে সম্প্রতি ‘তিস্তা প্রহার’ নামের এক বিশাল সামরিক মহড়া পরিচালনা করেছে ভারতীয় সেনাবাহিনী। এর মাধ্যমে মোদি সরকার মূলত প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোকে কৌশলগত প্রস্তুতির বার্তা দিতে চাচ্ছে।
নুসরাত
