
ছবি: সংগৃহীত
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের চীনের বাইরে উৎপাদন স্থানান্তরের আহ্বানের পরও অ্যাপল ভারতের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে আইফোন রফতানি উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করেছে। ২০২৫ সালের এপ্রিল মাসে অ্যাপলের সরবরাহকারীরা ভারত থেকে ২.৯ মিলিয়ন (২৯ লাখ) আইফোন যুক্তরাষ্ট্রে পাঠিয়েছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৭৬% বৃদ্ধি পেয়েছে। এটি অ্যাপলের বৈচিত্র্যমূলক কৌশলের অংশ হিসেবে চীনের উপর নির্ভরতা কমানোর লক্ষ্যে নেয়া পদক্ষেপের প্রতিফলন।
অন্যদিকে, চীন থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আইফোন রফতানি ৭৬% কমে ৯ লাখ ইউনিটে নেমে এসেছে, যা গত বছরের ৩.৭ মিলিয়ন ইউনিটের তুলনায় উল্লেখযোগ্য হ্রাস। এটি অ্যাপলের সরবরাহ শৃঙ্খলে ভারতে স্থানান্তরের প্রমাণ হিসেবে দেখা যাচ্ছে।
অ্যাপল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদন স্থানান্তর করলে আইফোনের দাম উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাবে, যা গ্রাহকদের জন্য অস্বস্তিকর হতে পারে। অ্যাপল বিশ্লেষক মিং-চি কু বলেন, “আমেরিকায় উৎপাদন স্থানান্তর করার চেয়ে ২৫% শুল্ক গ্রহণ করা অ্যাপলের জন্য লাভজনক।”
ভারতে অ্যাপলের উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফক্সকন এবং টাটা ইলেকট্রনিক্সের মতো সরবরাহকারীরা চেন্নাই ও কর্ণাটকে উৎপাদন বৃদ্ধি করছে। ফক্সকনের চেন্নাই ইউনিট এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রায় ১৭০ কোটি ডলারের আইফোন রফতানি করেছে। টাটা ইলেকট্রনিক্সও উইস্ট্রনের কারখানা অধিগ্রহণের মাধ্যমে উৎপাদন বৃদ্ধি করেছে।
তবে, ভারতের উৎপাদন ক্ষমতা যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ণ চাহিদা মেটাতে যথেষ্ট নয়। ওমডিয়া গবেষণা সংস্থার মতে, ২০২৬ সালের মধ্যে ভারত ২০ মিলিয়ন আইফোনের চাহিদার ৮০% পূরণ করতে পারবে।
অ্যাপল চীনের সাথে সম্পর্ক বজায় রেখে ভারতে উৎপাদন সম্প্রসারণের মাধ্যমে বৈশ্বিক সরবরাহ শৃঙ্খলে ভারসাম্য রক্ষা করতে চায়। ক্যানালিস বিশ্লেষক সানিয়াম চৌরাসিয়া বলেন, “চীন অ্যাপলের উৎপাদন নেটওয়ার্কের গুরুত্বপূর্ণ অংশ, তাই যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদন স্থানান্তর একটি যুক্তিযুক্ত পদক্ষেপ নয়।”
অ্যাপলের এই পদক্ষেপ ভারতের প্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং বৈশ্বিক সরবরাহ শৃঙ্খলে ভারতের ভূমিকা শক্তিশালী করছে।
শিহাব