ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ০২ জুন ২০২৫, ১৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

বিবিসিকে জাতিসংঘের কর্মকর্তা

ফিলিস্তিনিরা জোরপূর্বক অনাহারের শিকার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশিত: ২০:৫৬, ৩১ মে ২০২৫

ফিলিস্তিনিরা জোরপূর্বক অনাহারের শিকার

ত্রাণের জন্য গাজার বাসিন্দারা খাদ্য বিতরণ কেন্দ্রগুলোতে ভিড় জমাচ্ছেন

জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা বিষয়ক প্রধান টম ফ্লেচার বলেছেন, ইসরাইলের কারণে গাজার মানুষকে অনাহারে থাকতে বাধ্য হচ্ছে। তিনি বলেন, এ কারণেই গাজায় ইসরাইলি হামলা প্রশ্নে আন্তর্জাতিক মহলের প্রতিক্রিয়ায় পরিবর্তন এসেছে। বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ফ্লেচার এ কথা বলেন। বিবিসির পক্ষ থেকে ফ্লেচারের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, এ জোরপূর্বক অনাহার যুদ্ধাপরাধের পর্যায়ে পড়ে কি না। উত্তরে তিনি বলেন, হ্যাঁ এটা যুদ্ধাপরাধ হিসেবেই বিবেচিত হয়ে থাকে। অবশ্যই এ বিষয়ে আদালত চূড়ান্ত রায় দেবেন। আর শেষ পর্যন্ত ইতিহাসই এর বিচার করবে। খবর আলজাজিরার।
এদিকে ইসরাইলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) বিমান হামলায় গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৭২ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। সেই সঙ্গে আহত হয়েছেন আরও ২৭৮ জন। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় চলমান ইসরাইলি আগ্রাসনে এ পর্যন্ত ৫০ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি শিশু নিহত বা আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ। সংস্থাটি সতর্ক করেছে, প্রতিদিনই এই বিপর্যয়ের মাত্রা ভয়াবহ আকার নিচ্ছে। ইউনিসেফ বলেছে, গাজায় প্রতি ২০ মিনিটে একজন শিশু নিহত বা আহত হচ্ছে। আইনের ভয়াবহ লঙ্ঘন, মানবিক সহায়তা আটকে দেওয়া, অনাহার, গৃহ, স্কুল, হাসপাতাল ধ্বংস এটা যেন শৈশবকে ধ্বংস করা। জীবন ধ্বংস করা।

এরা শুধু সংখ্যা নয় এরা শিশু। এমনটা কোনো শিশুরই দেখা উচিত নয়। ফ্লেচার সম্প্রতি গাজা পরিস্থিতি নিয়ে তার করা সাম্প্রতিক একটি মন্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন। তিনি সম্প্রতি বলেছিলেন, সহায়তা না পৌঁছলে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে গাজায় ১৪ হাজার শিশু মারা যেতে পারে। পরে জাতিসংঘের পক্ষ থেকে এ তথ্য সংশোধন করা হয়। ফ্লেচার স্বীকার করেছেন, ভাষা ব্যবহারে নির্ভুল হওয়া জরুরি। হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি চলাকালে গত ২ মার্চ থেকে গাজায় কোনো ত্রাণ প্রবেশ করতে দিচ্ছিল না ইসরাইল। প্রায় তিন মাসের অবরোধের পর গত সপ্তাহে উপত্যকাটিতে সীমিত পরিসরে খাবার, ওষুধ, জ্বালানি এবং আশ্রয় সামগ্রীর মতো ত্রাণগুলো সরবরাহের অনুমতি দেয় তারা।

এরই মধ্যে ১৮ মার্চ থেকে যুদ্ধবিরতি ভেঙে গাজায় নতুন করে নির্বিচার হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইল। ইসরাইল বলছে, গাজায় এখনো আটক থাকা ৫৮ জন জিম্মিকে মুক্ত করার জন্যই তারা চাপ প্রয়োগের এ কৌশল নিয়েছে। ধারণা করা হয়, ৫৮ জিম্মির মধ্যে অন্তত ২০ জন এখনো জীবিত। অবরোধ শিথিল করার পর যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইল সমর্থিত সংস্থা গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের পরিচালনাধীন ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রগুলোতে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হয়। জাতিসংঘ বলেছে, চলতি সপ্তাহের শুরুর দিকে গাজায় ত্রাণ দেওয়ার একটি জায়গায় ভিড়ের মধ্যে পড়ে ৪৭ জন আহত হয়েছেন। হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের সঙ্গে কাজ করতে জাতিসংঘ অস্বীকৃতি জানিয়েছে।

×