ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ১১ মে ২০২৫, ২৮ বৈশাখ ১৪৩২

সিডনিতে বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থা নিয়ে সুশীল সমাজের আলোচনা সভা

প্রকাশিত: ২০:৩৬, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩

সিডনিতে বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থা নিয়ে সুশীল সমাজের আলোচনা সভা

আলোচনা সভায় সুশীল সমাজের একাংশ। 

সিডনিতে বাংলাদেশের স্বাধীন বিচার ব্যবস্থার উপর হস্তক্ষেপ এবং সুশীল সমাজের প্রতিক্রিয়া বিষয়ক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শনিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সিডনির লাকেম্বাস্থ একটি রেস্তোরায় এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে অনলাইনে বক্তব্য রাখেন মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা আ ক ম মোজাম্মেল হক। বিশেষ আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বনামধন্য লেখক, গবেষক প্রফেসর ড. আলী কাজী ও বীর মুক্তিযোদ্ধা রবিন বনিক।

মোজাম্মেল হক বলেন, প্রফেসর ড. ইউনূসের শ্রমিক-ঠকানেরা মামলাকে কেন্দ্র করে কয়েকজন বিশ্ব নেতাসহ অন্যান্য বুদ্ধিজীবিরা তার বিরুদ্ধে চলমান মামলা বন্ধ করার লক্ষ্যে যে বিবৃতি দিয়েছে তা আমাদের স্বাধীন বিচার ব্যবস্থার উপর অযাচিত হস্তক্ষেপ ছাড়া আর কিছু নয়।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থা স্বাধীন। তাছাড়া প্রফেসর ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে মামলা করেছে তার কোম্পানীর শ্রমিকরা, যাদের তিনি ঠিক মতো পাওনা পরিশোধ করেননি। প্রতিটি নাগরিকেরই বিচার পাওয়ার ব্যক্তি স্বাধীনতা রয়েছে এটি একটি নাগরিক অধিকার এবং কেউ-ই আইনের উর্দ্ধে নয়। স্বাধীন বিচার ব্যবস্থায় সরকারের হস্তক্ষেপ করার কোন উপায় নেই। কোন মামলার মাধ্যমে কাউকে অযথা হয়রানি করা সরকারের কাজ নয়। তা ছাড়া শেখ হাসিনা সরকার মানুষের অধিকার নিয়ে কাজ করে বিশ্ব দরবারে একটি গুরুত্বপূর্ণ সম্মানের জায়গায় পৌঁছেছেন।’

তিনি আরো বলেন, ‘বর্তমান সরকারের ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন করার জন্য এধরনের বিবৃতি সত্যিই দুঃখজনক। তিনি এই ধরনের বিবৃতির জন্য নিন্দা জ্ঞাপন করেন।’

আলোচনায় অংশগ্রহন করে ড. আলী কাজী বলেন, ‘আজকের এই অনুষ্ঠানটি একটি ব্যতিক্রমধর্মী এবং সিডনির ইতিহাসে এটাই প্রথম যা সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হল। মনের গভীর থেকে সাড়া দিয়েছে বলেই আমি আজকের এই আলোচনা সভায় অংশগ্রহণ করেছি। আজ যদি আমি কথা না বলতাম বা প্রতিক্রিয়া প্রকাশ না করতাম, তবে আমি বিবেকের আদালতে দোষী সাব্যস্ত হতাম।’
 
তিনি বলেন, ‘পৃথিবীতে বহুলোক শান্তিতে নোবেল পেয়েছে এবং তারা তাদের দেশের জন্য অনেক অবদান রেখেছেন। কিন্তু প্রফেসর ড. ইউনূসের মাধ্যমে জাতি কি পেয়েছে? আমাদের দুর্ভাগ্য যে, তার মাধ্যমে আমাদের স্বাধীন বিচার ব্যবস্থার উপর অযাচিত হস্তক্ষেপ হয়েছে, ভিন দেশীরা সরকার প্রধানের কাছে বিচার বন্ধ করার জন্য বিবৃতি দিয়েছে, যা সত্যিই বিব্রতকর। বাংলদেশের বিচার ব্যবস্থা স্বাধীন। আমি তার এই কাজের তীব্র প্রতিবাদ জানাই এবং স্বাধীন দেশের উপর যারা হস্তক্ষেপ করেছে তাদের এই প্রকার কাজ থেকে বিরত থাকতে অনুরোধ জানাই।’

বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং বিশিস্ট সমাজ সেবক রবিন বনিক বলেন, ‘যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি, প্রয়োজনে আবার যুদ্ধ করবো, তবু দেশের স্বাধীনতায় যে বা যারা হস্তক্ষেপ করবে তাদের বাংলার মাটিতে ঠাই দেওয়া হবে না ‘

সভাপতির বক্তব্যে ড. কাউয়ুম পারভেজ বক্তব্যে বলেন, ‘আমাদের আবার ঐক্যবদ্ধ হতে হবে, দেশ-বিদেশের সকল ষড়যন্ত্রের বিরূদ্ধে সকলকে রুখে দাঁড়াতে হবে, সকলের সজাগ দৃস্টি রাখতে হবে। কারণ, বাংলাদেশের বিরূদ্ধে দেশি-বিদেশিদের মাধ্যমে দেশকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র চলছে। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সকল শক্তিকে এক হয়ে সকল ষড়যন্ত্রের মোকাবিলা করতে হবে। দেশকে বহিরাগতদের খবরদারীর হাত থেকে রক্ষা করে আমাদের প্রমান করতে হবে আমরা কারো রক্ত চক্ষুকে ভয় পাইনা।’

কৃষিবিদ আব্দুল জলিল এই ধরনের মহতী অনুষ্টানের প্রতি একত্বতা প্রকাশ করে সকলকে ঐক্যব্ধ হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান।

সিডনী সুশীল-সমাজের প্রতিনিধীদের মধ্যে উক্ত বিষয়ের প্রতি একাত্বতা প্রকাশ এবং বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থার উপর অযাচিত হস্তক্ষেপ অবিলম্বে বন্ধ করার আহ্বান জানিয়ে বিশেষ বক্তব্য রাখেন মিসেস কবিতা পারভেজ ও মো. সুজন প্রমুখ। 

আলোচনা সভায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- গিয়াস উদ্দিন মোল্লা, ছাত্রনেতা অপু সারোয়ার পল ডি গোমেজ, ফাহমিদা খন্দকার, নাইম, ড. তুষার দাস এবং প্রকৌশলী সাজ্জাদ সিদ্দিকী। অনুষ্ঠানটি পরিচালানা করেন পল সি মধু। 

 

এম হাসান

×