শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
একজন অটিস্টিক শিশুর মুখের প্রায় ৯৫ শতাংশ চোয়াল সফলভাবে প্রতিস্থাপন করেছেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের একদল চিকিৎসক। আংশিকভাবে চোয়ালের হাড় প্রতিস্থাপন হলেও পায়ের হাড় দিয়ে পুরো চোয়ালের প্রতিস্থাপন এই প্রথম বলে দাবি করছেন অস্ত্রোপচারে অংশ নেয়া চিকিৎসকরা। এমনকি এটিকে পুরো বিশ্বেই নজিরবিহীন বলছেন তারা।
শনিবার সফলভাবে এ অস্ত্রোপাচার সম্পন্ন করেন হাসপাতালের একদল চিকিৎসক। অস্ত্রোপচারের সঙ্গে জড়িত চিকিৎসকরা জানান, মুখের টিউমার নিয়ে কিশোর হারুন সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে বেশ কিছুদিন যাবত। জন্মের তিন মাসের মধ্যেই ধরা পড়ে হারুন আর দশটা শিশুর মতো স্বাভাবিক নয়। কয়েক বছর বাদে হারুনে মুখে একটি টিউমার ধরা পরে। অনেক হাসপাতাল গেলেও কেউ এটির অস্ত্রোপচার করতে সাহস করেন নি। এদিকে দিনে দিনে টিউমার ছড়িয়ে পড়ে তার মুখের নিচের চোয়ালের পুরোটা জুড়ে। চার দফা অপারেশনের তারিখ পেয়েও তা ওটিতে (অপারেশন থিয়েটার) গড়ায়নি। তাই যে কোনো শর্তেই অপারেশনে রাজি ছিল হারুনের পরিবার।
অস্ত্রোপচারে নেতৃত্ব দেয়া সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক ডা. নিতীশ কৃষ্ণ দাস বলেন, অটিস্টিক পেশেন্টের এমন অপারেশন খুবই জটিল। আর যদি তা হয় চোয়ালের অপারেশন তাহলে জটিলতা আরও বাড়ে। চোয়ালে লাগানোর জন্য হারুনের যে পায়ের হাড়টা নেওয়া হয়, সেই পায়ের রক্তনালিটাও নিই। পরে তা পেশেন্টের চোয়ালে শপে আনতে টুকরো টুকরো করা হয়। এরপর রক্তনালির জোড়া দিয়েছি। জটিল এ অপারেশনটা আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। তবে তা শেষ হওয়ায় ভালো লাগছে। পেশেন্টকে এখন নরম খাবার খেতে দেওয়া হয়েছে। সুস্থ হলে তার মাড়িতে কৃত্রিম দাঁত সংযোজন করবেন বলে জানান তিনি। নিষ্পাপ মুখের অটিস্টিক কিশোর হারুনের অবস্থা এখন অনেকটাই স্বাভাবিক। অথচ এ আশা ছেড়েই দিয়েছিলেন তার বাবা। তিনি বলেন, ৯৫ শতাংশ চোয়াল প্রতিস্থাপন করা দেশে আর হয়েছে কি না আমার জানা নেই। ছোট ছোট অংশের প্রতিস্থাপন হয় অহরহই। কিন্তু একজন অটিস্টিক শিশুর যার শারিরীক আরও নানা জটিলতা রয়েছে তার এমন অস্ত্রোপচার করা আমাদের জন্য কঠিন ছিলো।
স্বপ্না
