ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

মানসিক স্বাস্থ্যকে হালকাভাবে দেখার সুযোগ নেই: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত: ১৯:২৭, ২৮ ডিসেম্বর ২০২২

মানসিক স্বাস্থ্যকে হালকাভাবে দেখার সুযোগ নেই: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, অন্যান্য জটিল রোগগুলোর মতই মানসিক স্বাস্থ্যকে আর হালকাভাবে দেখার সুযোগ নেই। বছরে ১০-১৪ হাজার মানুষ আত্মহত্যা করছে যা ভাববার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ কারণে মানসিক স্বাস্থ্য উন্নয়নে চিকিৎসা সেবা বৃদ্ধি করা জরুরি। 

বুধবার (২৮ ডিসেম্বর) রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য রিপোর্ট ও জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য কর্মকৌশল পরিকল্পনা ২০২০-৩০ এর অবহিতকরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে দক্ষ জনবল বাড়ানোর বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে। বিভিন্ন সমস্যার কারণে অনেকে চাকরি হারায়, দেশের প্রোডাক্টিভিটি কমে যায়, অপরাধের মাত্রা বাড়ে এমনকি উচ্চ রক্তচাপসহ বিভিন্ন রোগের প্রকোপ বাড়ে এই মানসিক স্বাস্থ্যের কারণে। মানসিক স্বাস্থ্যে বাজেট মাত্র দশমিক পাঁচ শতাংশ যা অনেক কম। শতকরা ৯২ ভাগ মানুষ মানসিক চিকিৎসা সেবার বাইরে রয়েছে। এটি নিয়েও আমাদেরকে আরো বেশি কাজ করতে হবে।

জাহিদ মালেক বলেন, মানসিক সমস্যায় বিশ্বে বহু লোকের প্রাণহানি ঘটে। প্রতিবছর বিশ্বে প্রায় ১০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। বাংলাদেশে বছরে ১০-১৪ হাজার মানুষ মারা যাচ্ছে মানসিক রোগে।

তিনি বলেন, মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নয়নে সরকার নানামুখী ব্যবস্থা নিয়েছে। পাবনা মানসিক হাসপাতালকে ২০০ বেড থেকে ৪০০ বেডে উন্নীত করাসহ নানাবিধ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবায় কাউন্সিলিং করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তবে অনেককিছু চ্যালেঞ্জও রয়েছে। সচেতনতায়ও এখনো নানা গ্যাপ রয়েছে।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর কন্যা সায়মা ওয়াজেদ বলেন, আমাদের শারীরিক চিকিৎসা নানা কর্মকৌশল থাকলেও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ছিল না। এ জন্য নানা পরিকল্পনা আমরা করেছি। মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য একটা উন্নত পরিবেশ দরকার। শুধু স্বাস্থ্য অধিদপ্তর  চাইলেই হবে না, আমাদের সবার এগিয়ে আসতে হবে। পরিবার থেকেই এটি চালু করতে হবে।

তিনি বলেন, আজ গর্ব করে বলতে হয় মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে বাংলাদেশের একটি কর্মকৌশল আছে, একটি আইন আছে। কিন্তু সবাই এগিয়ে না আসলে, কাজ না করলে এগোবেনা। সবার আগে নিজেদের পরিবর্তন করতে হবে। জাতি হিসেবে আমরা অনেক কিছু হারিয়েছে। সেখান থেকে উন্নত দেশের কাতারে এসেছি, তাহলে কেনো আমরা মানসিক স্বাস্থ্যের মত জায়গায় এগোতে পারব না?

এ সময় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বলেন, মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে উন্নতি করতে চাইলে বরাদ্দ বাড়াতে হবে। এই খাতে মাত্র দশমিক ৫ শতাংশ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বরাদ্দের ৬০ ভাগই খরচ হচ্ছে ট্রেনিংসহ অন্যান্য কাজে। তাই বরাদ্দ বাড়ানো খুবই জরুরি। মানসিক স্বাস্থ্যে যে ধরনের ওষুধ দেওয়া হয়, সেখানে প্রাথমিক স্বাস্থ্যে ইস্কিন সেন্টার হিসেবে ব্যবহার করা যেতে হবে। ৮ বিভাগে যে নতুন মেডিকেল কলেজ হচ্ছে সেখানেও মানসিক স্বাস্থ্য রাখা হয়েছে।

অনুষ্ঠানের শুরুতে মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে শিশুদের মাধ্যমে একটি চিত্রাংকন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয় এবং অনুষ্ঠানে বিজয়ীদের হাতে ক্রেস্ট তুলে দেয়া হয়।

স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব ড. আনোয়ার হোসেন হাওলাদারের সভাপতিত্বে সভায় অন্যান্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন- সুচনা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান সায়মা ওয়াজেদ, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবিএম খুরশীদ আলম, স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের মহাপরিচালক প্রফেসর আমিরুল মোর্শেদ, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধি সাধনা ভগবত, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক প্রশাসন প্রফেসর আহমেদুল কবীর সহ অন্যন্য কর্মকর্তা বৃন্দ।

 

এমএইচ

সম্পর্কিত বিষয়:

×