
ছবিঃ সংগৃহীত
বিটিএস-এর প্রত্যাবর্তন যখন ঘনিয়ে আসছে, বড় প্রশ্ন হচ্ছে—সুগার এই পদস্খলন কি দলের ভাবমূর্তিতে দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলবে, নাকি সেটি বিটিএস-এর বিশাল ঐতিহ্যের মাঝে মিলিয়ে যাবে?
বিটিএস সদস্য আরএম, জিন, জে-হোপ, জিমিন, ভি এবং জাংকুক সেনা দায়িত্ব শেষ করার পর এখন পালা মিন ইউংগির—সুগা নামেই যিনি পরিচিত। তিনি ২১ জুন সরকারি সেবাকাজ শেষ করলে, ২০২২ সালের জুনের পর প্রথমবারের মতো পুরো বিটিএস আবার একত্রিত হবে।
তাদের কামব্যাক, যেটি নির্ধারিত ২০২৬ সালের মার্চে, তা গ্লোবাল পপ সংস্কৃতিতে অন্যতম আকাঙ্ক্ষিত প্রত্যাবর্তন। কিন্তু এই উন্মাদনার মাঝেই ছায়ার মতো এসে পড়েছে সুগার মদ্যপ অবস্থায় স্কুটার চালানোর ঘটনা।
নিঃশব্দে কেটেছে সুগার সেনা সময়
১৮ মাসে বিটিএসের বাকি সদস্যরা যখন একের পর এক গান, ইভেন্ট ও উপস্থিতির মাধ্যমে আর্মিদের ব্যস্ত রেখেছেন, সুগা ছিলেন নিঃশব্দে। ২০২৩ সালের এপ্রিলে তার ‘ডি-ডে’ অ্যালবামের পর থেকেই তিনি কার্যত অদৃশ্য।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনুপস্থিতি, কোনো নতুন গান নয়, কোনো লাইভ স্ট্রিমও নয়। কাঁধের অস্ত্রোপচারের কারণে তিনি সক্রিয় সেনা দায়িত্বে না গিয়ে সিভিল সার্ভিসে ছিলেন, যেখানে এই নিভৃত অবস্থা তাকে আড়ালে রেখে দিয়েছিল। কিন্তু আগস্ট ২০২৪-এ ঘটে গেল কেলেঙ্কারির শুরু।
ডিইউআই কেলেঙ্কারি
২০২৪ সালের ৬ আগস্ট, সুগা সিওলের হাননাম-ডং এলাকায় মদ্যপ অবস্থায় বৈদ্যুতিক স্কুটার চালানোর সময় ধরা পড়েন। তার রক্তে অ্যালকোহলের মাত্রা ছিল ০.২২৭%, যা কোরিয়ার বৈধ সীমার প্রায় তিনগুণ। পড়ে গিয়ে পুলিশের কাছে ধরা পড়েন এবং তাৎক্ষণিকভাবে তার নিঃশ্বাসে অ্যালকোহল ধরা পড়ে।
পরদিন তিনি লিখিত ক্ষমা চেয়ে জানান, "রাতের খাবারে মদ পান করার পর মনে হয়েছিল বাড়ি কাছে, তাই স্কুটার চালিয়েছিলাম। আইন ভেঙেছি, মাথা নিচু করে ক্ষমা চাইছি।"
তবে এই ক্ষমা প্রলেপ দিতে পারেনি। হাইব-এর সদর দপ্তরে ঘুরতে থাকে প্রতিবাদী ট্রাক, লেখা ছিল “৭-১=৬” এবং “মদ্যপ চালক সুগা আউট!” পরে জানা যায়, এর পেছনে নাকি ছিলেন প্রতিদ্বন্দ্বী ব্যান্ড এনসিটি’র কিছু ফ্যান।
হাইব নিশ্চিত করে জানায়, সুগা পুলিশের সঙ্গে পূর্ণ সহযোগিতা করেছেন। তাকে ১ কোটি ৫০ লাখ ওনের (প্রায় ১৩,১০০ ডলার) জরিমানা করা হয় এবং কোনো গ্রেফতার ছাড়াই মামলা প্রসিকিউশনে পাঠানো হয়।
আরও অভিযোগ
এর কিছুদিন পর আরেকটি অভিযোগ আসে—সেনা প্রশিক্ষণের সময় সুগা নাকি ক্লাসে ঘুমিয়েছেন, মোবাইলে চোখ রেখেছেন, এবং দলীয় কার্যক্রম এড়িয়ে গেছেন। যদিও এসব অভিযোগ প্রমাণ হয়নি, কিছু ভক্ত সিসিটিভি ফুটেজ রিভিউ ও শাস্তি দাবি করেন।
সেনাবাহিনী জানায়, অভিযোগ যদি সত্যও হয়, তা ডিউটির বাইরে ঘটেছে এবং কোনো নিয়মভঙ্গ হয়নি।
এই ঘটনা কি বিটিএস-এর প্রত্যাবর্তনে প্রভাব ফেলবে?
কোর ভক্তদের কাছে বিটিএস মানেই সাতজন। “ওটি৭ অলওয়েজ” হ্যাশট্যাগ চলেছে সমর্থনে। তবে দক্ষিণ কোরিয়ার মতো রক্ষণশীল সমাজে ডিইউআই কেলেঙ্কারি বড় ক্ষতি করতে পারে।
হাইব চুপচাপ আছে—না কোনো মিডিয়া প্রচারণা, না কোনো রিডেম্পশন স্টোরি। ২০২৫ সালের শেষ দিকে কামব্যাক প্রমোশন শুরু হওয়ার আগে হয়তো সময়কেই নিরাময় হিসেবে নিচ্ছে তারা।
বিটিএস ৭ জনের না হলে বিটিএস নয়
সুগার প্রত্যাবর্তন মানে কেবল তার ফিরে আসা নয়, বরং দলের পূর্ণতা। পিডগ, যিনি বিটিএসের দীর্ঘদিনের প্রযোজক, ইতিমধ্যে ২০২৬-এর কামব্যাকের কাজ শুরু করেছেন। আর এই কামব্যাক হতে পারে কেপপ ইতিহাসে অন্যতম বড় মুহূর্ত।
সুগা শিগগিরই আনুষ্ঠানিকভাবে মুক্ত হবেন। আর মার্চ ২০২৬-এর বিটিএস কামব্যাক হবে বৈশ্বিক নজরকেন্দ্র। সুগার কেলেঙ্কারি পেছনে পড়ে যাবে কি না, তা নির্ভর করবে তার ফেরা, দলের বক্তব্য এবং সবচেয়ে বড় কথা—সংগীতের ওপর।
মুমু