
মডেল ও অভিনয়শিল্পী রুকাইয়া জাহান চমক।
মাস তিনেক আগে হঠাৎ বিয়ের খবর প্রকাশ্যে আনেন মডেল ও অভিনয়শিল্পী রুকাইয়া জাহান চমক। বিয়ের খবর প্রকাশিত হতে না হতে চমক ও তার স্বামী আজমান নাসিরকে নিয়ে আলোচনা হতে থাকে। এর মধ্যে কেউ কেউ বলেন, নাসিরের এটি তৃতীয় বিয়ে আর চমকের দ্বিতীয়। বিয়ে প্রসঙ্গে নাসির তার অবস্থান আগে পরিষ্কার করলেও এত দিন কিছুই বলেননি চমক।
তবে গত মঙ্গলবার কথা প্রসঙ্গে চমক বললেন, ‘সবাই এতো কিছু লিখছিল, এটা আমার মোটেও পছন্দ হচ্ছিল না। এটা তো আমার একান্ত ব্যক্তিগত।’
তিন মাস আগেও বিয়ের খবর নিজে থেকে কাউকে জানাতে চাননি চমক। যখন খবরটি ছড়িয়ে পড়ে, তখন স্বামীকে নিয়ে কথা বলেন চমক। তখন তিনি বলেছিলেন, ‘মানুষটার সম্পদ বলতে কিছুই নেই, অতীতও খুব একটা মধুর নয়! কিন্তু রাজার মতো একটা মন আছে, যেখানে সে আমাকে রানির মতো রেখেছে। আমি সুখী। এ মুহূর্তে আমার মতো সুখী কজন আছে জানি না। আবার এই সুখ কত দিন টিকবে তা-ও জানি না।’
চমক বললেন, ‘আমরা একসঙ্গে আছি। আমার কিন্তু আগে কোনো বিয়ে হয়নি, তারপরও এটা নিয়ে কথা হচ্ছিল শুধু শুধু। এটা ঠিক, আমার একটা সিরিয়াস প্রেম ছিল। এরপর আরও দুই–তিনটা প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়েছি।’
প্রেমকে কাজের অনুপ্রেরণা হিসেবে মনে করেন চমক। তিনি বলেন, ‘আমরা শিল্পী, শিল্পীদের জীবনে দুই–তিনটা প্রেম থাকবে না, এটা হতেই পারে না। প্রেম হচ্ছে বিশাল অনুপ্রেরণা। প্রেম থেকে আমরা শিখি, প্রেমে কষ্ট পেলে সেখান থেকেও শিখি, আরও আসে অনুপ্রেরণা। আমার যদি কাউকে ভালো লাগে, তিনি যদি ক্রিমিনালও হন, তাঁর খারাপ দিকটা ঠিক করে প্রেমের সম্পর্কে থাকতে পেরে ভালো লাগে।’
চমক বললেন, ‘আমার স্বামীর কথা বলছিল, সে ধনকুবের। বিশ্বাস করেন, আমি তার চেয়ে বেশি আয় করি। আমার স্বামী সত্যি নো বডি। আরেকটা কথা, আমার স্বামীর এটি তৃতীয় বিয়ে হলেও কার কি, আমার তো সমস্যা না। আমার না হেরে যাওয়া মানুষের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। এই মানুষটা বারবার হেরে যাচ্ছিল, কিছুই পায়নি জীবনে, তার জীবনে সবচেয়ে বড় অর্জন যদি আমি হই, তাঁর জীবনে সবচেয়ে বড় সুখটা যদি আমি দিতে পারি, কেন নয়। আমি তাঁকে অত কিছু জিজ্ঞেস করতে যাইওনি। সে আমার প্রতি লয়্যাল, প্রচণ্ড ভালোবাসে, কেয়ার করে—এটাই আমার কাছে অনেক।’
জীবনসঙ্গী টাকাপয়সা দিয়ে বিচার করার বিষয় নয় উল্লেখ করে চমক বললেন, ‘কেউ হাজার কোটি টাকার মালিক, কিন্তু মানুষ ঠিক না হলে ক্যামনে কি! আমি অনেক ধনী মানুষকেও ডেট করেছি, কিন্তু হ্যাপি ছিলাম না। ওর সঙ্গে আমার মনে হয়েছে, হ্যাপি, পরিপূর্ণ। আবারও বলছি, আমাকে পাওয়া যদি কারও জীবনে সবচেয়ে বড় অর্জন হয়, তখন সেই মানুষটার সঙ্গে থেকে যাওয়াটাই সঠিক সিদ্ধান্ত মনে হয়েছে। আর আমি হেরে যাওয়া মানুষের সঙ্গে থাকতে পছন্দ করি। কারণ, যে জীবনে অনেক জিতেছে, তার জীবনে তো আমাকে দরকার নাই। গুরুত্বও কম পাব। সে মানুষের সঙ্গে থাকাটা আমার ইচ্ছাও না।’
চমকের জন্ম বরিশালে, তবে বেড়ে ওঠা ও পড়াশোনা ঢাকায়। ঢাকায় সাংস্কৃতিক পরিবারে বেড়ে উঠেছেন তিনি। চমকের মা-বাবার ইচ্ছা ছিল মেয়ে চিকিৎসক হবে। মা-বাবার সে ইচ্ছাও পূরণ করেছেন তিনি। মানিকগঞ্জের কর্নেল মালেক মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস সম্পন্ন করেছেন তিনি। ২০১৭ সালে মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় রানারআপ হয়ে বিনোদন অঙ্গনে পথচলা শুরু চমকের। লেখাপড়ার বিরতি শেষে ২০২০ সালে ছোট পর্দায় অভিনয় শুরু করেন তিনি। তার উল্লেখযোগ্য নাটক ও সিরিজ হলো ‘হায়দার’, ‘হাউজ নং ৯৬’, ‘মহানগর’, ‘সাদা প্রাইভেট’, ‘অসমাপ্ত’ ও ‘ভাইরাল হাজব্যান্ড’।
এম হাসান