স্টাফ রিপোর্টার ॥ সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের বাসিন্দা শ্রী হরিদাস বসাক। এক সময় যুবক হরিদাস রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাছে চিঠি লিখেছিলেন। সেটা ১৯৩৯ সালের দিকের কথা। এরপর থেকেই বিষয়টি নিয়ে তার পরিবার-পরিজন এবং বন্ধুবান্ধব হাসাহাসি করেছিলেন। কিন্তু এক সময় সবাই অবাক হয়ে লক্ষ্য করেন- একদিন রবীন্দ্রনাথ সে চিঠির উত্তর দিয়েছেন। এরপর থেকেই সবাই হরিদাস বসাককে সমীহ করতে শুরু করেন। অন্যদিকে হরিদাস বসাকও সাহিত্য-সংস্কৃতির কাজে নিজেকে সঁপে দেন। সময়ের প্রবাহে আসে ১৯৪৭ সাল। এ সময় অনেকেই দেশ ছেড়ে ভারতে চলে যান। কিন্তু যে ঠিকানায় রবীন্দ্রনাথ তাকে চিঠি লিখেছেন, সে ঠিকানা হরিদাস বসাক বদল করতে চান না। ১৯৪৭ সালের দেশ বিভাগের কালে হরিদাস বসাককে মাতৃভূমি আঁকড়ে থাকাতে দেখা যায়। এরপর আসে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ। মুক্তিযুদ্ধের ভয়াবহতায় হরিদাস বসাকের স্বপ্নভঙ্গ হয়। পুড়িয়ে ফেলা বাড়ির দুয়ারের সামনে দাঁড়িয়ে হরিদাস বসাক সেদিন তার আত্মজনের খোঁজ নেন না, শুধু শিশুর মতো হাহাকার করেন চিঠিটির জন্য। এ অবস্থায় পাকিস্তানী আর্মি এসে দাঁড়ায় হরিদাস বসাকের সামনে। তার মুখে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নাম শুনে আর্মিরা তাকে বেয়োনেট দিয়ে মারতে থাকে।
গল্পটি জাগরণী থিয়েটারের ১৫তম প্রযোজনা ‘রাজার চিঠি’ নাটকের। নাটকে হরিদাস বসাকের চরিত্রে প্রাণবন্ত অভিনয় করেন সরণ সাহা। ইতোমধ্যে নাটকটির চারটি মঞ্চায়ন হয়েছে। আগামীকাল সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার প্রধান মিলনায়তনে নাটকের পঞ্চম মঞ্চায়ন হবে। ‘রাজার চিঠি’ নাটকটি রচনা করেছেন মাহফুজা হিলালী, নির্দেশনা দিয়েছেন দেবাশীষ ঘোষ। সরণ সাহা ছাড়াও নাটকে অভিনয় করেন- মাহামুদা ইয়াসমিন সুমি, সুইটি চৌধুরী, শাহনাজ শারমিন খান শিমু, ইয়াসিন শামীম, বাহারুল ইসলাম বাহার, রফিকুল ইসলাম রনি, মাহামুদুল হাসান মুকুল, রোকুনুজ্জামান আপেল, সোয়েব হাসনাত মিতুল, সজীব ঘোষ, রিপা হালদার। নাটকের আলোক পরিকল্পনা ঠা-ু রায়হান, নৃত্যনির্মিত অনিকেত পাল, পোশাক পরিকল্পনা এনাম তারা সাকী, আবহসঙ্গীত রামীজ রাজু ও সোয়েব হাসনাত মিতুল।
