ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

নির্মাণেই আনন্দ উৎপল সর্বজ্ঞর

প্রকাশিত: ০৬:৩০, ৫ মে ২০১৬

নির্মাণেই আনন্দ  উৎপল সর্বজ্ঞর

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বলা হয়ে থাকে প্রতিভা থাকলে তা এক সময় বিকশিত হবেই। এক সময় থিয়েটার করতেন। পারিবারিকভাবে তিনি সংস্কৃতিমনা। কিন্তু ঢাকায় এসে সাংবাদিকতা শুরু করেন। তবে মনের ভেতর ঠিকই পুষে রেখেছিলেন অভিনয়, নাটক রচনা এবং নির্দেশনার ইচ্ছে। অবশেষে সুযোগ পেলেন কাজের। নিজ মেধা এবং যোগ্যতা বলে তিনি এখন সংস্কৃতি অঙ্গনে পরিচিত মুখ। বলা হচ্ছে নাট্যকার নির্মাতা এবং অভিনেতা উৎপল সর্বজ্ঞর কথা। উৎপল সর্বজ্ঞ বলতে সংস্কৃতি অঙ্গনের অনেকেই শাহনেওয়াজ কাকলির ‘উত্তরের সুর’ চলচ্চিত্রের অভিনেতা হিসেবে চেনেন তাকে। তবে আরও অন্য ক্ষেত্রে তিনি সফলতার পরিয়চয় দিয়েছেন নীলফামারীর ডোমার সাহাপাড়ার সেই দুষ্টু ছেলেটিই এখন এ সময়ের তরুণ মেধাবী নির্মাতা। জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত ‘উত্তরের সুর’ চলচ্চিত্রের কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করা এই অভিনেতা শুধু নির্মাণের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নন। নিজেই স্ক্রিপ্ট লেখেন, শিল্প নির্দেশনা দেন, অভিনয় করেন। প্রশ্ন ছিল, পরিচালনা, অভিনয় নাকি লেখালেখি, কোনটিতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন? নির্মল হাসি মুখে উৎপলের সহজসরল উত্তর যেই কাজগুলো করে আমি আনন্দ পাই সেগুলোই করি। একটা ভাল প্রডাকশনের জন্য ভাল পরিচালক যেমন জরুরী, তেমনি স্ক্রিপ্ট এবং অভিনয়ও ভাল হতে হবে। পৃথিবীতে খুব অল্পকজন ভাগ্যবান মানুষ আছে, যারা নিজের পছন্দমতো কাজ করতে পারে। ভাগ্যক্রমে আমি সেই সৌভাগ্যবানদের তালিকায় আছি। তবে নির্মাণেই বেশি আনন্দ পান বলে জানান তিনি। উৎপল সর্বজ্ঞ পরিচালিত আলোচিত টেলিফিল্মগুলোর মধ্যে রয়েছে, ‘নীলফামারী থিয়েটার’, ‘কখনো সময় আসে’, ‘জীবন মুচকি হাসে’, ‘গোল্ডকাপ’, ‘ভালবাসার মুষ্টিযুদ্ধ’, ‘মেঘফুলের গল্প’ প্রভৃতি। এছাড়া জনসচেতনতামূলক দুটি টিভি স্পট ও শতাধিক টেলিভিশন নাটক ও টেলিফিল্মের শিল্পনির্দেশনা দিয়েছেন তিনি। এ ছাড়া ক্রিয়েটিভ ডিরেক্টর হিসেবেও বিভিন্ন প্রোডাকশনে নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছেন। অন্য পরিলচালকদের নাটকে অভিনয় প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি আমার পরিচিত গ-ির মধ্যেই কাজ করতে ভালবাসি। তবে ভাল গল্প পেলে অন্যদের কাজও করি? এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য আলী ফিদা একরাম তোজোর ‘রোদেলা দিনের ছায়া’, শাহনেওয়াজ কাকলীর ‘রঙিন শাড়ি’, সকাল আহমেদের ‘রেডিও’, সুস্ময় সুমনের ‘হয়তো’, শুভ্র খানের ‘পোস্ট মোর্টেম’। সর্বজ্ঞ অভিনীত ধারাবাহিক নাটকগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য সকাল আহমেদ পরিচালিত ‘টার্মিনাল’, আলী ফিদা একরাম তোজোর ‘অঘটন ঘটন পটিয়সী’, হরনাথ চক্রবর্তীর ‘রোশনী’ প্রভৃতি। ব্যক্তি জীবনে স্ত্রী সুস্মিতা সাহা পিংকীকে নিয়ে সুখী এই নির্মাতার স্বপ্ন হলো চলচ্চিত্র নির্মাণ। এমন একটা চলচ্চিত্র তিনি বানাতে চান, যা সবশ্রেণীর দর্শককে আকৃষ্ট করবে। আর্ট ফিল্ম ও কমার্শিয়াল ফিল্ম এর ব্যাপারে তার সোজা কথা, এসব সব বোগাস। ফিল্ম মানেই ফিল্ম। এখানে আর্ট কমার্সের কোন বিভেদ বোঝেন না তিনি। তার মতে আর্ট ছাড়া ফিল্ম সম্ভব নয়। তাছাড়া চলচ্চিত্র যদি ব্যবসা না করে, তাহলে পরবর্তী ছবি বানাবো কেমন করে? তাই ফিল্মের ভেতর আর্টস, কমার্স সবই থাকতে হবে। থিয়েটার ও সাংবাদিকতা দিয়ে ক্যারিয়ার শুরু করার পর, একসময় বিনোদন জগতেই স্থায়ী জায়গা করে নেয়া এই নির্মাতা বাংলাদেশ নাট্যকার সংঘের নির্বাহী সদস্য। ভবিষ্যতে শিশু ও প্রবীণদের কল্যাণে কাজ করার ইচ্ছা রয়েছে। উৎপল নিজের মেধা এবং প্রচেষ্টা বলে এগিয়ে যাবেন তার কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে। তার জন্য অনেক অনেক শুভ কামনা।
×