ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১৪ জুন ২০২৫, ৩১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

পৃথিবীর প্রাচীনতম ব্যক্তির ফিঙ্গারপ্রিন্ট আবিষ্কার, জানেন কত বছর আগের?

প্রকাশিত: ০৯:১৪, ১৪ জুন ২০২৫

পৃথিবীর প্রাচীনতম ব্যক্তির ফিঙ্গারপ্রিন্ট আবিষ্কার, জানেন কত বছর আগের?

ছ‌বি: সংগৃহীত

সম্প্রতি স্পেনের সেগোভিয়ার কাছে একটি গুহার আশ্রয়স্থলে আবিষ্কৃত হয়েছে পৃথিবীর প্রাচীনতম মানব ফিঙ্গারপ্রিন্ট, যার বয়স প্রায় ৪৩ হাজার বছর। চমকপ্রদ বিষয় হলো, এই ফিঙ্গারপ্রিন্টটি আমাদের পূর্বসূরি হোমো স্যাপিয়েনদের নয়, বরং নিয়ান্ডারথাল নামে পরিচিত এক মানব প্রজাতির।

প্রত্নতাত্ত্বিকদের মতে, নিয়ান্ডারথাল ব্যক্তি এটি তৈরি করেছিলেন লাল রঙের এক ধরনের প্রাকৃতিক রঞ্জক পদার্থ 'ওখার' ব্যবহার করে। একটি আলুর মতো দেখতে পাথরের ওপর লাল রঙের একটি বিন্দু আঁকা হয়েছে। এই বিন্দুর মাঝখানে যে ফিঙ্গারপ্রিন্ট রয়েছে, সেটি স্পষ্টভাবে মানুষের হাতের চিহ্ন দেখায়। গবেষকরা মনে করেন, পাথরটির গঠন অনেকটা মানুষের মুখের মতো হওয়ায়, এই লাল বিন্দুটি সম্ভবত একটি নাক বোঝাতে আঁকা হয়েছিল।

বিশেষজ্ঞরা আরও জানিয়েছেন, ফিঙ্গারপ্রিন্টের মধ্যে স্পষ্টভাবে একটি ‘হোয়ার্ল’ বা ঘূর্ণি প্যাটার্ন দেখা যায়, যা একজন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষের হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, এই পাথরটি কাছের একটি নদী থেকে আনা হয়েছিল, এবং এর মুখাকৃতি হওয়ার কারণেই বেছে নেওয়া হয়।

এই আবিষ্কারটি প্রমাণ করে যে নিয়ান্ডারথালরাও প্রতীকী চিন্তা ও শিল্পের ক্ষমতা রাখত, শুধু বেঁচে থাকার দক্ষতা নয়। তবে বিষয়টি নিয়ে বিতর্কও রয়েছে। কেউ কেউ বলছেন, পাথরটিকে উল্টো করে ধরলে এই বিন্দুটিকে নাভিও মনে হতে পারে— তাই এটিকে শিল্প বলেই ধরা হবে কিনা, তা নিয়ে মতভেদ আছে।

তবু বেশিরভাগ গবেষক একমত যে, এই ফিঙ্গারপ্রিন্ট ইচ্ছাকৃতভাবে তৈরি করা হয়েছিল এবং এর পেছনে কোনো সাংস্কৃতিক বা প্রতীকী উদ্দেশ্য থাকতে পারে। এই আবিষ্কারটি সেই ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করে যে প্রতীকী শিল্প সৃষ্টি শুধুই আধুনিক মানবের কাজ ছিল। নিয়ান্ডারথালরাও যদি এমনভাবে নিজেকে প্রকাশ করে থাকে, তবে সেটা প্রমাণ করে যে তাদের চিন্তাধারা আমাদের চেয়ে খুব একটা আলাদা ছিল না।

সূত্র: স্প্রিংগার জার্নাল

এম.কে.

×