
.
নিত্যপণ্যের বাজারে এখনো দাম চড়া। তরিতরকারির দাম একটু একটু করে কমতে থাকলেও আলু, পেঁয়াজ, সবজি, মুরগি ও মাছের দাম প্রতিদিনই বাড়ছে। চিনিতে শুল্ক ছাড় এবং আলু আমদানির খবরেও বাজার পরিস্থিতি পাল্টায়নি। বরং পেঁয়াজসহ নানা ধরনের ভোগ্যপণ্যের খুচরা বাজারে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
শুক্রবার চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সবজি বিক্রেতারা ছোট ফুলকপি ৫০ থেকে ৬০ টাকায় কেজি বিক্রি করছে। সরকার দাম নির্ধারিত করলেও এখনো কেজি ৬০ টাকা দরে আলু বিক্রি খুচরা বাজারে। পেঁয়াজের কেজি ১১০ টাকা। ভোক্তাদের খুচরা পর্যায়ে বাড়তি দামেই কিনতে হচ্ছে পেঁয়াজ। পেঁয়াজ ও আলুর দাম নিয়ে এত কারসাজি চললেও এ বিষয়ে নিশ্চুপ তদরকি সংস্থাগুলো। ফলে বেপরোয়া বিক্রেতারা।
খুচরা বাজারে এখন একসঙ্গে বেশি পরিমাণ বাজার করা ছেড়ে দিয়েছেন ক্রেতারা। অনেকে ২৫০ থেকে ৫শ’ গ্রাম পেঁয়াজ কিনছেন। কারণ হিসেবে আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের সামাঞ্জস্যতার কথা বলছেন তারা। অপরদিকে সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ১০ টাকা কমে বেগুনের কেজি এখন ৬০ টাকা। স্থিতিশীল আছে কাঁচা পেঁপের দাম, যা প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৫ টাকায়। তবে প্রতি কেজি ১০ টাকা বেড়ে মিষ্টি কুমড়া বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৪৫ টাকায়। আর পটোল বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকায়। পাশাপাশি কাঁকরোলের দামও বাড়তি সব বাজারে। চট্টগ্রামে প্রতি কেজি কাঁকরোল ৮০ টাকা। বাজারে নতুন আসা সিম বিক্রি হচ্ছে পোয়া (২৫০ গ্রাম) হিসেবে। প্রতি পোয়া ৪০ টাকা হিসেবে কেজিতে দাম পড়ছে ১৬০ টাকা।
অপরদিকে মাছের বাজারে দামও বেশ চড়া। নিষেধাজ্ঞা শেষে হিমায়িত ইলিশের দেখা মিলছে বাজারে, তবে দাম আকাশচুম্বী। ৫শ’ গ্রাম ওজনের প্রতি কেজি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৭শ’ টাকায়। বার্মা রুই কেজি ৩৫০ টাকা, পাঙ্গাশ ১৮০, তেলাপিয়া কেজি ২২০, মলা-চাপিলা কেজি ৪শ’, কাতলা মাছ কেজি ২৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় চট্টগ্রামের রেয়াজুদ্দিন বাজার অন্যান্য দিনের তুলনায় বেশ জমজমাট। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সবজির সঙ্গে মুরগি বা অন্যান্য পণ্যও অন্যদিনের তুলনায় কিছুটা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। বিক্রেতারা বলছেন, শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় ক্রেতা বেশি। এতে চাহিদা বাড়ে। ফলে যোগানের টানাটানিতে কয়েকটি পণ্যের দাম বাড়তি। বাজারে সবজি ও মাছের পাশাপাশি বাড়তি মাংসের দাম। দেশি মুরগির কেজি ৫৫০ টাকা, সোনালি ৩২০, ব্রয়লার মুরগি ১৮০। সাপ্তাহিক বাজারে আসা ক্রেতারা বলছেন, দাম বাড়তি থাকে শুক্র ও শনিবার ছুটির দিনগুলোতে। এসব বিষয়ে ভোক্তা অধিকার ও প্রশাসনের নজরদারির প্রয়োজন। কিন্তু তাদের প্রত্যক্ষ নজরদারি না থাকায় বারবার দাম নিয়ে কারসাজি হয়। সাধারণ মানুষ থেকে পকেট কাটে অসাধু বিক্রেতারা। এদিকে, দাম বাড়ার পেছনে রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং অবরোধের কারণে সরবরাহ কম হওয়ার অভিযোগও তুলছেন কেউ কেউ। কিন্তু মহাসড়কের দিকে লক্ষ্য করলে দেখা যায়, অবরোধের প্রভাব সেভাবে পড়েনি। কারণ যাত্রীবাহী বাস চলাচল কম হলেও পণ্যবাহী ট্রাক, মিনি ট্রাক ও পিকআপ ভ্যানগুলো স্বাভাবিক সময়ের মতোই চলাচল করছে। বাজার পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখতে প্রশাসনের মনিটরিং প্রয়োজন বলে মনে করছেন ভোক্তারা।