
ছবি: সংগৃহীত
জাতীয় পার্টির অতিরিক্ত মহাসচিব ও সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেছেন, দেশে গণতন্ত্রকে কার্যকর করতে হলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ভিত্তিতে একটি বৃহৎ রাজনৈতিক জোট গঠন জরুরি। তিনি মনে করেন, এই জোটে সব মত ও সব দলকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে— যারা বাংলাদেশকে নিজের দেশ হিসেবে গ্রহণ করে।
তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগ জনগণের ম্যান্ডেট হারিয়ে ফেলেছে। দেশে শক্তিশালী বিরোধী দল ছাড়া গণতন্ত্র কখনোই কার্যকর হতে পারে না।”
সংসদের ভূমিকা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “যদি সংসদে ১২০টির বেশি আসনে বিরোধী দল থাকে, তাহলে সরকার আপনাতেই নিয়ন্ত্রণে থাকবে। কারণ, প্রতিটি সংসদ সদস্য একটি প্রতিষ্ঠান। তারা প্রশ্ন তুললে সরকারকে জবাব দিতেই হয়।”
নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণের গুরুত্ব তুলে ধরে ব্যারিস্টার শামীম বলেন, “সব দল না এলে ভারসাম্য তৈরি হয় না। রাজনীতি ভারসাম্যের খেলা। একদিকে অতিরিক্ত ওজন পড়লে পাল্লা ভারসাম্য হারায়।”
তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, “আজ যদি বিএনপি আওয়ামী লীগ ছাড়া নির্বাচনে যায়, তারা হয়তো ২৮০ থেকে ২৯০টি আসনে জিততে পারে। তখন তাদের স্বৈরাচারী হওয়া ঠেকাবে কে?”
আওয়ামী লীগের বর্তমান অবস্থান নিয়েও তিনি মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগ এখনও একপ্রকার নিষিদ্ধ দলের মতো অবস্থানে আছে। তারা যদি ২০২৪ সালের সংকেত না বোঝে, পরিবর্তন না আনে, তাহলে আগামী নির্বাচনে অংশ নেওয়াই কঠিন হয়ে যাবে।”
বর্তমান সরকারের দুর্বলতা ও করিডর ইস্যু নিয়েও তিনি কথা বলেন। তিনি বলেন, “একটি অংশ মনে করে, শেখ হাসিনা করিডর দেননি বলেই বিদায় নিতে হয়েছে। আবার কেউ কেউ মনে করেন, ড. ইউনুস করিডর দিয়ে হলেও ক্ষমতায় থাকতে চাইছেন। এভাবেই রাজনীতিতে নানা ব্যাখ্যা তৈরি হচ্ছে।”
ড. ইউনুস প্রসঙ্গে শামীম হায়দার বলেন, “তিনি নির্বাচনের বাইরে থেকেই ক্ষমতায় থাকতে চাইছেন— এই পারসেপশনটা তার জন্য বিপজ্জনক হতে পারে। তাঁর উচ্চ মর্যাদা এতে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। যারা তাঁকে ঘিরে রয়েছেন, তারা হয়তো তাকে হীনস্বার্থে ব্যবহার করছেন।”
জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল ও যুদ্ধাপরাধীদের দণ্ড হালকা করার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “এই কাজগুলো যেন বিজয়ী শক্তির জন্য বিশেষ সুবিধা হিসেবে না দেখা হয়। এতে ড. ইউনুসের ভাবমূর্তিও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।”
তিনি বলেন, “দেশে একটি অংশগ্রহণমূলক ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য রাজনৈতিক ভারসাম্য জরুরি। সব দল যদি অংশ না নেয়, তাহলে গণতন্ত্রও অসম্পূর্ণ থেকে যাবে।”
ভিডিও দেখুন: https://youtu.be/SHaIgbtd0Qk?si=dytLRc4iZCQQUAjk
এম.কে.