প্রফেশনাল লেখকরা যা গোপন রাখেন—চ্যাটজিপিটি-এর এই ৭টি প্রম্পটেই লুকিয়ে আছে সাফল্য!

বিশ্বখ্যাত লেখক ডেভিড সেডারিস একবার বলেছিলেন, “আপনাকে আপনার সেরাটা দিতে হবে, তারপর সেই সেরাটিকে আবার লিখতে হবে, এবং লিখতে হবে, এবং লিখতে হবে।” এ উক্তির মধ্যেই নিহিত রয়েছে লেখার প্রকৃত প্রক্রিয়া। একজন লেখক কেবল শব্দ দিয়ে বাক্য গঠন করেন না; তিনি ধারাবাহিকভাবে নিজের রচনাশৈলীকে শানিত করেন।

অনেকেই প্রাতিষ্ঠানিকভাবে সাহিত্য বা লেখালেখি অধ্যয়ন করেননি। তবুও বড় বড় প্রকাশনায় অবদান রাখতে শুরু করে আত্মবিশ্বাস অর্জন করেছেন, খুঁজে পেয়েছেন নিজেদের কণ্ঠস্বর।

যদিও চ্যাটজিপিটি নিজস্ব অনুভব, দৃষ্টিভঙ্গি বা মানসিকতার অভাব বোধ করে, তবে এটি লেখাকে পরিমার্জিত করতে অত্যন্ত কার্যকর এক সহকারী হতে পারে। বিশেষ করে ব্যবসায়িক নিবন্ধ, ব্লগ কিংবা গুরুত্বপূর্ণ ইমেইল লেখার ক্ষেত্রে—সঠিকভাবে তৈরি করা প্রম্পট লেখাকে আরও নিখুঁত করতে সহায়তা করতে পারে।

নিচে এমন সাতটি চ্যাটজিপিটি প্রম্পট উপস্থাপন করা হলো, যেগুলো ব্যবহার করে লেখকরা তাদের দক্ষতাকে আরও একধাপ এগিয়ে নিতে পারেন।

১. আইডিয়া ও বিষয়বস্তু তৈরিতে সহায়তা

চ্যাটজিপিটি-এর সহায়তায় নতুন ও অনন্য বিষয়বস্তু চিহ্নিত করা সহজ হয়। ব্যবহারকারীর ভূমিকা, লক্ষ্য পাঠক ও লেখার প্ল্যাটফর্মের প্রেক্ষাপটে দেওয়া একটি উপযুক্ত প্রম্পট অনেকগুলো আকর্ষণীয় আইডিয়া উপস্থাপন করতে পারে।

প্রম্পট উদাহরণ:
"আমি একজন [পেশা/চাকরির ভূমিকা] এবং লিখছি [প্রকাশনার নাম/ধরন]–এর জন্য, যার পাঠক [টার্গেট অডিয়েন্স]। এই পাঠকদের উপযোগী কিছু নতুন ও আকর্ষণীয় লেখার বিষয় সাজেস্ট করো।"

২. ব্যাকরণ ও শৈলী সংশোধন

ভুল বানান ও ব্যাকরণ অনেক সময় একটি ভালো লেখাকেও অপ্রয়োজনীয়ভাবে দুর্বল করে তোলে। চ্যাটজিপিটি একজন নির্ভরযোগ্য প্রুফরিডার হিসেবে কাজ করে, যা দ্রুত সময়ের মধ্যে লেখাকে নিখুঁত করে তোলে।

প্রম্পট উদাহরণ:
"এই লেখাটি ব্যাকরণ, বিরামচিহ্ন ও স্টাইল অনুযায়ী যাচাই করো। পাঠক হচ্ছে [পাঠকের ধরন/গ্রাহক]। সংশোধন ও উন্নতির পরামর্শও দাও।"

৩. সঠিক টোন বজায় রাখা

একটি লেখার ভঙ্গি বা টোন পাঠকের মধ্যে বিশ্বাস, আন্তরিকতা এবং পেশাদারিত্ব সৃষ্টি করতে পারে। ভুল টোন পাঠকের আগ্রহ হারানো বা ভুল বোঝাবুঝির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।

প্রম্পট উদাহরণ:
"এই লেখাটি [অডিয়েন্স]-এর জন্য এমনভাবে আবার লেখো, যেন এটি [চাহিদা অনুযায়ী টোন—যেমন আন্তরিক, বন্ধুত্বপূর্ণ, পেশাদার ইত্যাদি] বজায় রাখে।"

৪. তথ্য ও পরিসংখ্যান যোগ করা

ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা গুরুত্বপূর্ণ হলেও, তথ্য-নির্ভর উপস্থাপন লেখাকে আরও বিশ্বাসযোগ্য করে তোলে। চ্যাটজিপিটি লেখকের মূল বক্তব্য অনুযায়ী উপযুক্ত তথ্য খুঁজে দেওয়ার প্রাথমিক কাজটি করে দিতে পারে।

প্রম্পট উদাহরণ:
"আমি [বিষয়বস্তু] নিয়ে [টার্গেট অডিয়েন্স]–এর জন্য লিখছি। এই বিষয়ে প্রাসঙ্গিক পরিসংখ্যান ও গবেষণালব্ধ তথ্য যোগ করতে চাই। নিচের লেখাটি দেখে কিছু ডেটা বা গবেষণা দিতে পারো?"

📌 দ্রষ্টব্য: এআই-এর প্রদত্ত তথ্য অবশ্যই যাচাই করে নেওয়া উচিত।

৫. দৈনিক লেখার অভ্যাস গড়ে তোলা

নিয়মিত লেখার মাধ্যমে একজন লেখক তার দক্ষতা আরও গভীরভাবে অনুশীলন করতে পারেন। এ ক্ষেত্রে চ্যাটজিপিটি নিত্যনতুন রাইটিং প্রম্পট দিয়ে সহায়তা করতে পারে।

প্রম্পট উদাহরণ:
"আমি প্রতিদিন লেখার অনুশীলন করতে চাই। এজন্য কিছু বিষয়ভিত্তিক রাইটিং প্রম্পট সাজেস্ট করো।"

অথবা নির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে:
"আমি পাঠকদের সঙ্গে সংযোগ বাড়াতে চাই। এমন কিছু প্রম্পট দাও যেন আমি আরও বেশি এনগেজিং লেখা অনুশীলন করতে পারি।"

৬. ভিন্ন লেখার শৈলী ও কণ্ঠস্বর নিয়ে চর্চা

প্রেক্ষাপটভেদে লেখার ভঙ্গি বদলানো একজন লেখকের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। চ্যাটজিপিটি-এর সহায়তায় বিভিন্ন কণ্ঠস্বর ও শৈলীতে লেখার অনুশীলন করা যায়।

প্রম্পট উদাহরণ:
"তিনটি অনুশীলন দাও যা দিয়ে আমি ভিন্ন ভিন্ন লেখার স্টাইল ও কণ্ঠস্বর অনুশীলন করতে পারি।"

অথবা,
"এই লেখাটির স্টাইল ও টোন বিশ্লেষণ করো: [লেখা দিন]"

৭. পুনরায় লেখা বা ‘রিরাইট’ অনুশীলন

আর্নেস্ট হেমিংওয়ে বলেছিলেন, “The only kind of writing is rewriting.” চ্যাটজিপিটি লেখার বিভিন্ন অংশকে পুনরায় লেখার মাধ্যমে আরও সুসংবদ্ধ করে তুলতে পারে।

প্রম্পট উদাহরণঃ

• "এই অংশটি [নির্দিষ্ট লেখকের নাম]-এর স্টাইলে পুনরায় লেখো।"

• "এই অনুচ্ছেদটি আরও সংক্ষিপ্ত ও পরিষ্কারভাবে লিখো।"

• "এই লেখাটি যেন [নির্দিষ্ট প্রকাশনা]-এর মতো মনে হয়, সে অনুযায়ী লিখো।"

লেখার ক্ষেত্রে উন্নতির কোনো শর্টকাট নেই। তবে সঠিক টুল ও কৌশল ব্যবহার করে একজন লেখক তার লেখাকে আরও নিখুঁত ও প্রভাবশালী করে তুলতে পারেন। চ্যাটজিপিটি সেই যাত্রায় হতে পারে একজন স্মার্ট সহচর—যে কেবল নির্দেশনায় সাহায্য করে না, বরং লেখাকে আত্মবিশ্বাসের জায়গা থেকেও এগিয়ে দেয়।