ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

কলাপাড়ায় রাবনাবাদ পাড়ের মানুষ চরম বিপাকে

পূর্ণিমার জোয়ারে ভেসে গেছে বিকল্প বেড়িবাঁধ

প্রকাশিত: ২৩:০৬, ১৭ মে ২০২২

পূর্ণিমার জোয়ারে ভেসে গেছে বিকল্প বেড়িবাঁধ

নিজস্ব সংবাদদাতা, কলাপাড়া, পটুয়াখালী ॥ স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা পড়ুয়া তিন সন্তান, স্ত্রী আর নিজেকে নিয়ে জেলে জাহাঙ্গীর শিকদার রাবনাবাদপাড়ের বিপন্ন বেড়িবাঁধেই বসতি গড়েছিলেন। ঘূর্ণিঝড় অশনির প্রভাব থেকে গত দুই দিনের পূর্ণিমার অস্বাভাবিক জোয়ারে বাঁধটির প্রায় পাঁচ শ’ ফুট ভেসে গেছে। জাহাঙ্গীর আবার ঘরের আসবাবপত্র মালামাল নিয়ে অন্য বাঁধে ঠাঁই নিয়েছেন। মানুষটি দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। ঘর পাল্টাতে পাল্টাতে এখন কাহিল হয়ে পড়েছেন। ভূমিহীন এই পরিবারের দুঃখের যেন শেষ নেই। এদের ঠিকানা বদলে যায় ফি বছর। এভাবে চরচান্দুপাড়া গ্রামের প্রায় অর্ধশত পরিবার রাবনাবাদপাড়ের বসতি হারিয়ে ফেলেছে। যাদের সঙ্গতি রয়েছে তারা অন্যত্র চলে গেছেন। ইউপি মেম্বার জাফর আলী হাওলাদার জানান, ঈদের আগে পায়রাবন্দর কর্তৃক্ষের উদ্যোগে ভাঙ্গা বাঁধ যা মেরামত করা হয়েছিল তাও ঢেউয়ের ঝাঁপটায় ভেসে গেছে। এখন অস্বাভাবিক জোয়ারের পানি ভেতরে জনপদে ঢুকছে। বাঁধ আর চাষের জমির লেভেল এক হয়ে গেছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন। এভাবে বাঁধ বিধ্বস্ত হওয়ায় চরচান্দুপাড়া, মুন্সিপাড়া, ব্যুরোজালিয়া, নাওয়াপাড়াসহ ৭/৮টি গ্রামের মানুষের ভোগান্তির শেষ নেই। লোনা পানিতে সব ডুবে যায়। পানি উন্নয়ন বোর্ড কলাপাড়ার নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আরিফ হোসেন জানান, রাবনাবাদ পাড়ের লালুয়া ও চম্পাপুরের দেবপুরে ৪৭/৫ এবং ৫৪/১ পোল্ডারের মোট আড়াই কিলোমিটার বেড়িবাঁধ সম্পূর্ণভাবে বিধ্বস্ত রয়েছে। নৌঘাঁটি এলাকায় প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকায় বেড়িবাঁধ মেরামতের কাজ চলমান রয়েছে। এ ছাড়া ৪৬ ও ৫৪ পোল্ডারের আরও সাড়ে তিন কিলোমিটার বেড়িবাঁধ আংশিক বিধ্বস্ত থাকায় কৃষকের সমস্যা হচ্ছে। তবে লালুয়ার প্রায় ছয় কিলোমিটার বেড়িবাঁধ মেরামতের কাজ করা হবে পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে। কিন্তু দেবপুরে জমি না পাওয়ায় বেড়িবাঁধ মেরামত কিংবা বিকল্প বাঁধ করা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এসব বিধ্বস্ত বাঁধ মেরামতের জন্য জন্য পাউবোর প্রায় নয় কোটি টাকা ব্যয় বরাদ্দ রয়েছে। তবে এখন রাবনাবাদ পাড়ের লালুয়া ও দেবপুরের মানুষের এখন জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে চাষাবাদের জমি। তাদের দুরবস্থার যেন শেষ নেই।
×