ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২০ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

যে কারণে গুলশান-বারিধারায় লোডশেডিং দিতে বললেন প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত: ১১:৩২, ১০ মে ২০২৪

যে কারণে গুলশান-বারিধারায় লোডশেডিং দিতে বললেন প্রধানমন্ত্রী

বড় লোকদের এলাকাগুলোতে লোডশেডিং দিতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

গ্রামে লোডশেডিং কমিয়ে রাজধানীর গুলশান-বারিধারা-বনানীর মতো বড় লোকদের এলাকাগুলোতে লোডশেডিং দিতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীকেও তার নিজের এলাকায় লোডশেডিং দিতে বলেছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার (৯ মে) রাতে দ্বাদশ জাতীয় সংসদের দ্বিতীয় অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীকে বলেছিলাম, ১ হাজার বা ২ হাজার মেগাওয়াট যেদিন লোডশেডিং হবে, গ্রামে লোডশেডিং আর দেবেন না। গুলশান, বারিধারা, বনানী বড় লোকদের জায়গায় দেবেন। যারা সব থেকে বেশি বিদ্যুৎ ব্যবহার করে।

সরকার প্রধান বলেন, অভিজাত এলাকায় বাড়িতে লিফট, বাড়িতে টেলিভিশন, বাড়িতে এয়ারকন্ডিশনার, তাদের একটু ২ ঘণ্টা করে লোডশেডিং দিলে আমার অনেক সাশ্রয় হয়। আমার কৃষকের অভাব হবে না। এখন থেকে সেটাই করব। প্রতিমন্ত্রীকে বলেছি আপনি যেখানেই থাকেন, ওখানে লোডশেডিং দেখতে চাই। ওখানে লোডশেডিং দিতে হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, হ্যাঁ লোডশেডিং। যে প্রচণ্ড গরম। সেখানে লোডশেডিং হয়েছে। আমরা সেটা স্বীকার করি। কিন্তু কৃষক যেন সেচটা পায়- সেখানে কিন্তু ভর্তুকি দেয়া হয়। সেখানে কোনো অভাব হয়নি।

বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়াতে সরকারের উদ্যোগের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, সরকার বিদ্যুৎ কেন্দ্র বহুমুখী করেছে। এখানে সোলার প্যানেল হচ্ছে। বায়ুভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র শুরু করেছি। কয়লাভিত্তিক করছি। তেলভিত্তিক-গ্যাসভিত্তিক সবই করছি। মানুষকে বিদ্যুৎ দিতে চাই। আমরা ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দিয়েছি।

বাংলাদেশে রাস্তা নির্মাণে খরচ বেশি বলে যারা সমালোচনা করেন তাদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কেউ কেউ প্রশ্ন ওঠায় বাংলাদেশে রাস্তা বানাতে এত খরচ কেন? এদের দেশের মাটি সম্পর্কে কোনো ধারণা নেই। মাটির সঙ্গে এদের কোনো সম্পর্কই নেই। আমাদের মাটি একটা ব-দ্বীপ। এ মাটি দোআশলা। যাকে বলে জোবা মাটি। এ মাটি নরম। এখানে কোনো কিছু করতে গেলে, ওই যেনতেন করতে গেলে দু-চারদিনের বেশি থাকে না।

শেখ হাসিনা বলেন, সেখানে আমরা মাটি তুলে আধুনিক প্রযুক্তিতে রাস্তা তৈরি করছি। রাস্তায় যখন চড়েন দেখেন না? খরচ তো লাগবে। যেখানে শক্তমাটি সেখানে অত খরচ হয় না। নরম মাটি বলেই খরচ বেশি। এটি স্বাভাবিক ব্যাপার। এ নিয়ে প্রশ্ন তোলার কিছু নেই।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, কেউ কেউ মেট্রোরেল নিয়েও প্রশ্ন তোলেন? এর কী প্রয়োজন ছিল। তিন হাজার কোটি টাকা দিয়ে তো যানজটমুক্ত হতো। আজকে প্রতিঘণ্টায় ৬০ হাজার মানুষ মেট্রোরেল দিয়ে চলতে পারে। এটায় যারা চড়ছে তারা সুফল পাচ্ছে। যারা এটা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল- তারা লজ্জা পাচ্ছে কিনা জানি না।

বর্তমান সরকারের সঙ্গে অন্যান্য সরকারের উন্নয়ন চিত্রের তুলনা করে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা ১৫ বছরে যে পরিমাণ কাজ করতে পেরেছি। ২১ বছর আর ৮ বছর। এ ২৯ বছরে কেউ করতে পেরেছে? পারেনি। পারবেও না। প্রকল্প দিয়েই তো আগে টাকা খাওয়া। আর আমরা প্রকল্প শেষ করে ছাড়ি। টাকা খাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

সরকার সমালোচকদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা আরো বলেন, মানুষের কল্যাণে কী করণীয় সেদিকে লক্ষ রেখেই আমরা কাজ করি। দেশের কল্যাণে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। ভোগ করবেন সবাই আর কথায় কথায় ব্যঙ্গ করবেন আর প্রশ্ন তুলবেন। প্রশ্ন তোলার আগে- নিজেরা কী করেছেন? কোন দল করেন- সে দলের বৃত্তান্ত থেকে শুরু করে অপকর্মগুলো একটু চিন্তা করে নেবেন।

বারাত

×