ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

বিদেশ যাওয়ার চেষ্টায় মুরাদ

প্রকাশিত: ১২:১৯, ৯ ডিসেম্বর ২০২১

বিদেশ যাওয়ার চেষ্টায় মুরাদ

অনলাইন ডেস্ক ॥ সদ্য তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করা এবং জেলা আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কারের সুপারিশ পাওয়া ডা. মুরাদ হাসান এবার দেশত্যাগের চেষ্টা করছেন বলে জানা গেছে।নারীবিদ্বেষী বক্তব্য ও ফোনালাপে অশালীন কথোপকথন ফাঁস হবার পর প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় তিনি প্রতিমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন। আজ বৃহস্পতিবার রাতে দেশের বাইরে যেতে বিমানের টিকিটও সংগ্রহ করেছেন তিনি। জানা গেছে, গত সোমবার সামাজিক মাধ্যমে সমালোচনার মধ্যেই চট্টগ্রামে চলে যান ডা. মুরাদ। নারীর প্রতি শিষ্টাচার-বহির্ভূত অবমাননাকর বক্তব্য দেওয়ায় তাকে পদত্যাগের নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর মঙ্গলবার বিকেলে পদত্যাগপত্র জমা দেন তিনি। এরপর থেকেই সপরিবারে বাইরের দেশের চেষ্টা শুরু করেন। পরে চূড়ান্তভাবে কানাডা যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন ডা. মুরাদ। প্রতিমন্ত্রী থাকাবস্থায় ডা. মুরাদের যে লাল পাসপোর্ট (বিশেষ পাসপোর্ট) ছিল, সেটি পদত্যাগের কিছুক্ষণ আগে ব্যক্তিগত দিন মঙ্গলবার তার কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানান তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র। যদিও লাল পাসপোর্ট থাকা সত্ত্বেও অন্য দেশে যেতে কিছুটা জটিলতা রয়েছে। লাল পাসপোর্টধারী ব্যক্তি সরকারী আদেশ (জিও) ছাড়া বিদেশ ভ্রমণ করতে পারেন না। এক্ষেত্রে সদ্য প্রতিমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করা ডা. মুরাদ জিও না থাকায় বিদেশগমনে জটিলতায় পড়তে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে। এছাড়াও তিনি এখন গোয়েন্দা নজরদারিতে রয়েছেন। এ অবস্থায় তার বিদেশগমন অনিশ্চিত হতে পারে বলে জানিয়েছে মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা। এরআগে মঙ্গলবার (৭ ডিসেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টায় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করে পাঠান ডা. মুরাদ। পরে দুপুর ৩টায় তার পক্ষে পদত্যাগপত্রটি মন্ত্রিপরিষদ সচিবের দপ্তরে জমা দেন তথ্য প্রতিমন্ত্রীর জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন। এদিকে তথ্য মন্ত্রণালয়ের নামফলক থেকেও মুরাদ হাসানের নাম মুছে ফেলা হয়েছে। এ ছাড়া মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের ওয়েবসাইটে থাকা প্রতিমন্ত্রীর তালিকাও তার নামটি বাদ দেওয়া হয়েছে। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটেও তার নাম নেই। পরদিন মঙ্গলবার (৭ ডিসেম্বর) সকালেই পদত্যাগপত্র তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে পাঠান মুরাদ হাসান। পরে মুরাদ হাসানের পদত্যাগপত্র মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে একজন কর্মকর্তা পৌঁছে দেন। সেই পদত্যাগপত্রের সারসংক্ষেপ তৈরি করে সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হয়। প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের পর রাষ্ট্রপতির অনুমতি সাপেক্ষে প্রতিমন্ত্রী পদে মুরাদ হাসানের অব্যাহতির বিষয়টি প্রজ্ঞাপন আকারে জারি করা হয়। বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নাতনি জাইমা রহমানকে নিয়ে ডা. মুরাদের করা নারীবিদ্বেষী মন্তব্য ঘিরে কদিন ধরেই সামাজিক মাধ্যমে তীব্র সমালোচনা চলছিল। এরইমধ্যে সোমবার রাতে একজন চিত্রনায়িকার সঙ্গে প্রতিমন্ত্রীর ফোনালাপের একটি কল রেকর্ড ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। যেখানে নায়িকার সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি নোংরা ও অশ্লীল ভাষা ব্যবহার করেন। একইসঙ্গে তাকে আপত্তিকর প্রস্তাব ও হত্যার হুমকিও দেন। এ নিয়ে বিভিন্ন মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। এমনকি মুরাদের শাস্তিরও দাবি উঠে। ২০১৯ সালের মে মাসে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে সরিয়ে মুরাদ হাসানকে তথ্য প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। ডা. মুরাদ জামালপুর-৪ (সরিষাবাড়ী উপজেলা) আসনের এমপি। তার বাবা প্রয়াত মতিউর রহমান তালুকদার জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। মুরাদ জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক।
×