ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

দূষণমুক্ত ঢাকার প্রত্যাশা

প্রকাশিত: ২১:২৬, ৭ ডিসেম্বর ২০২১

দূষণমুক্ত ঢাকার প্রত্যাশা

ঢাকা ওয়াসা রাজধানীতে শতভাগ পানি সরবরাহ নিশ্চিত করলেও পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থা করতে পেরেছে মাত্র ২০ ভাগ। বাকি ৮০ ভাগ এলাকায় পয়োনিষ্কাশন চলছে ভবনগুলোর নিজস্ব সেফটি ট্যাঙ্ক, ট্রিটমেন্ট প্লান্ট এবং সরাসরি সিটি কর্পোরেশনের নালা বা খালে সংযোগের মাধ্যমে। সরাসরি সংযোগে দূষিত হচ্ছে নদী ও খালের পানি। একই সঙ্গে দূষিত হচ্ছে পরিবেশ। তৈরি হচ্ছে নাগরিকদের স্বাস্থ্যঝুঁকি। রাজধানীকে শতভাগ পয়োনিষ্কাশনের আওতায় আনতে ওয়াসা কাজ করছে। ২০২৭ সালের মধ্যে এই সমস্যার সমাধান সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক। তিনি আরও জানান, সমস্যা সমাধানে রাজধানীর দাসেরকান্দি, নারায়ণগঞ্জের পাগলা, উত্তরা, রায়ের বাজার ও মিরপুরে পাঁচটি পৃথক ট্রিটমেন্ট প্লান্ট স্থাপনের কাজ হাতে নেয়া হয়েছে। ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরও জানিয়েছেন, সিটি কর্পোরেশন ইতোমধ্যে জানিয়ে দিয়েছে তারা ছয় মাস পর সকল নালা ও খালে পয়োনিষ্কাশনের সরাসরি লাইন বন্ধ করে দেবে। এই সময়ের মধ্যে ভবনগুলোতে নিজস্ব পয়োনিষ্কাশনের জন্য সেফটি ট্যাঙ্ক কিংবা প্লান্ট স্থাপন করতে হবে। রাজউকের ইমারত নির্মাণ বিধিমালায় সকল আবাসিক এবং বাণিজ্যিক ভবনে পয়োবর্জ্য ব্যবস্থাপনার বিধান রয়েছে। ২০০৮ সালে প্রণীত আইন অনুযায়ী প্রতিটি ভবনে সেফটি ট্যাঙ্ক কিংবা ট্রিটমেন্ট প্লান্ট স্থাপন বাধ্যতামূলক। যারা এটি করেননি তারাই সরাসরি নালা বা খালে পয়োনিষ্কাশনের লাইন দিয়ে রেখেছেন। প্রশ্ন হচ্ছে, ভবনের পয়োনিষ্কশন লাইন কেন সরাসরি নালা-খালে দেয়া হবে। ছোট ভবনগুলোতে সেফটি ট্যাঙ্ক, বড় কমপ্লেক্স এবং বাণিজ্যিক ভবনগুলোতে ট্রিটমেন্ট প্লান্ট স্থাপন করা হলে এই সমস্যার উদ্ভবই হতো না। আইন ভঙ্গ করে যারা নিজস্ব পয়োনিষ্কাশনের ব্যবস্থা না করে নালা বা খালে সংযোগ দিচ্ছেন তারা পরিবেশ সম্পর্কে মোটেও সচেতন নন। অনেকেই বিষাক্ত বর্জ্য পর্যন্ত নদীতে ফেলছেন। মানুষকে যেমন আইন সম্পর্কে সচেতন করতে হবে, তেমনি পরিবেশ দূষণ নিয়েও করতে হবে সতর্ক। একই সঙ্গে ঢাকা ওয়াসারও দায়িত্ব ছিল পানির ব্যবস্থা করার পাশাপাশি পয়োনিষ্কাশনের দিকে মনোযোগ দেয়া। শুরু থেকে পানির পাশাপাশি পয়োনিষ্কাশনের দিকে নজর দিলে আজ এই অবস্থা তৈরি হতো না। বিলম্বে হলেও এই উদ্যোগ নিয়েছে ওয়াসা। ওয়াসার এমডি জানিয়েছেন, গৃহীত প্লান্ট প্রকল্পগুলোর কাজ শেষ হলেও বর্তমানে ভবনগুলোতে নির্মিত সেফটি ট্যাঙ্ক বা ট্রিমেন্ট প্লান্ট অকেজো হয়ে যাবে না। বর্তমানে শতভাগ পানি সরবরাহ নিশ্চিত হলেও অনেকে ওয়াসার অনুমতি নিয়ে নিজস্ব পানির ব্যবস্থা করছেন। ঠিক তেমনি ওয়াসার পয়োনিষ্কাশনের পাশাপাশি নিজস্ব ব্যবস্থা থাকলে বিষয়টি হবে আরও স্বস্তিদায়ক। বন্ধ হবে নগরীর পানি ও পরিবেশ দূষণ। দূষণমুক্ত হবে ঢাকার আশপাশের খাল-বিল ও নদী।
×