ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১

ফেসবুকের কল্যাণে ছয় বছর পর হারিয়ে যাওয়া ছেলের সন্ধান

প্রকাশিত: ২৩:৪৪, ৩১ জুলাই ২০২১

ফেসবুকের কল্যাণে ছয় বছর পর হারিয়ে যাওয়া ছেলের সন্ধান

স্টাফ রিপোর্টার, সাতক্ষীরা ॥ ৬ বছর আগে ঢাকা থেকে হারিয়ে যাওয়া ছেলেকে ফেসবুকের সহায়তায় সাতক্ষীরার আশাশুনি থেকে ফিরে পেতে যাচ্ছেন এক অসহায় মা। হারিয়ে যাওয়া আবু সাঈদ (১৪) বর্তমানে বিভাগীয় এতিম ছেলে মেয়েদের জন্য নির্মিত কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র সাতক্ষীরার আশাশুনিতে রয়েছে। আবু সাঈদের ৮ বছর বয়সে স্বামী পরিত্যক্তা তার মা ছাবিনা খাতুন পিতার বাড়ি সিরাজগঞ্জ জেলার দেলুয়ারকান্দি গ্রামে আশ্রয় নেন। নিজের পায়ে দাঁড়াতে ঢাকায় পাড়ি জমান মা ছাবিনা খাতুন। কাজ শুরু করেন সেখানকার একটি গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিতে। শিশু পুত্র সাঈদকে নিয়ে তিনি একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন। মায়ের কাজের সময় শিশু সাঈদ পথে পথে ঘুরে বেড়াত। এক পর্যায়ে সে দুষ্টচক্রের সঙ্গে সঙ্গ দিতে শুরু করে। একদিন পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করেন। মা এ ঘটনাটি জানতে পারেননি। পুত্র হারানোর যন্ত্রণা বুকে নিয়ে তার মা আশপাশে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তাকে ফিরে পাননি। এরই মধ্যে সেন্ট্রাল জেলহাজতে ৩ মাস থাকার পর ছাড়া পায় শিশু সাঈদ। কিন্তু এ সময় সে আর তার মাকে খুঁজে পায়নি। আবারও সে পথশিশু হিসাবে বেড়ে উঠতে থাকে। কিছুদিন পর আবারও পুলিশ তাকে পথ থেকে তুলে নিয়ে নারায়ণগঞ্জ এতিমখানায় ঠাঁই করে দেন। সেখান থেকে মাত্র দেড় মাস আগে তাকে সাতক্ষীরা জেলার আশাশুনিতে অবস্থিত বিভাগীয় এতিম ছেলেমেয়েদের জন্য নির্মিত কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে পাঠানো হয়। স্থানীয় কিছু সাংবাদিক সেখানে একটি তথ্য নিতে গিয়ে আবু সাঈদের কথা জানতে পেরে তার সাক্ষাতকার ভিডিও ধারণ করেন এবং ফেসবুকে ছেড়ে দেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়লে মালায়েশীয়া প্রবাসী দেলুয়াকান্দির জনৈক ব্যক্তি দেখে তার মনে হয় এই সাঈদ তাদেরই এলাকার ছাবিনার ছেলে। তিনি ওই ফেসবুকের ওই ভিডিও পোস্টটি তাদের গ্রামের বন্ধুদের কাছে শেয়ার করেন। তারা এই পোস্টটি সাঈদের নানি মোমেনা খাতুনকে দেখানোর পর নানি তার কন্যা ছাবিনাকে বিষয়টি জানান। ছাবিনা ও তার পরিবারের অন্যরা সাঈদকেই তাদের সন্তান বলে শনাক্ত করেন। বৃহস্পতিবার আশাশুনির স্থানীয় সাংবাদিকদের সহযোগিতায় কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ভিডিও কলে সাঈদের সাথে কথা বলেন সাঈদের স্বজনরা। আবু সাঈদকে দেখে তার মা-নানি-মামা সবাই তাকে চিনতে পারেন। লকডাউন শিথিল হলে সাঈদের মা ও স্বজনরা আশাশুনিতে আসবেন তাদের পুত্রকে নেয়ার জন্য।
×