অনলাইন ডেস্ক ॥ ঢাকার বাইরে নতুন নতুন জেলায় সংক্রমণ বেড়ে গেছে দ্রুত। এমনকি কোথাও কোথাও আগের সব রেকর্ড ভেঙ্গে শনাক্ত হার অনেক ওপরে উঠে গেছে। দিনাজপুরে ৮১ শতাংশ ছাড়িয়েছে শনাক্ত হার। বিশেষজ্ঞরা বিষয়টি চরম উদ্বেগজনক বলে মনে করছেন। এমনকি ঢাকার লাগোয়া গাজীপুরেও শনাক্ত হার গতকাল উঠেছে ৪৪ শতাংশে। যদিও ঢাকায় তা ১২ শতাংশে ছিল। তবে যশোরে ৪৭ শতাংশ, চুয়াডাঙ্গায় ৫০ শতাংশ, পিরোজপুরে ২৬ শতাংশ বলে তথ্য দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।
উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা দিনাজপুর সদরে শনাক্তের হার সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় ৮১.৬ শতাংশে ওঠায় সেখানকার লকডাউনের সময়সীমা আরো সাত দিন বৃদ্ধি করেছে জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটি। দ্বিতীয় পর্যায়ে বৃদ্ধি হওয়া কঠোর লকডাউন চলবে ২৮ জুন পর্যন্ত। এমন ভয়াবহ পরিস্থিতিতে দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিক্যাল কলেজে আরেকটি পিসিআর ল্যাব স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
এদিকে দেশের কোথাও কোনোভাবেই বিধি-নিষেধ বা ‘লকডাউন’ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত ঠিকভাবে বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে না। উপজেলা থেকে রাজধানী—একই অবস্থা। সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের সঙ্গে যুক্তরা বলছেন, জাতীয় কারিগরি কমিটি যেভাবে চলাফেরা নিয়ন্ত্রণ করতে বলে, বাস্তবে তা সম্ভব নয়। এর পরও প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হয়। কিন্তু স্থানীয় কিছু বাস্তবতা উপেক্ষা করার সুযোগ থাকে না। এই পরিস্থিতিতে এখন ঢাকাকে বিচ্ছিন্ন করার সিদ্ধান্ত নিল সরকার। আজ সকাল ৬টা থেকে ৩০ জুন মধ্যরাত পর্যন্ত ঢাকাকে ঘিরে থাকা সাতটি জেলায় কঠোর লকডাউন ঘোষণা করে গতকাল সোমবার প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের উপসচিব রেজাউল ইসলাম স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে মানিকগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, গাজীপুর, মাদারীপুর, রাজবাড়ী ও গোপালগঞ্জে এ বিধি-নিষেধের আওতায় থাকার কথা জানানো হয়েছে। এর বাইরে দেশের আরো কয়েকটি জেলায় আংশিক লকডাউনের কার্যক্রম চলছে। নতুন ঘোষিত সাতটি জেলার লকডাউনে সরকারি-বেসরকারি সব ধরনের প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে বলে মন্ত্রিপরিষদসচিব খন্দাকার আনোয়ারুল ইসলাম জানিয়েছেন। তবে প্রজ্ঞাপনে শিল্প-কলকারখানা বন্ধ নাকি খোলা থাকবে সে বিষয়ে কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেও নিশ্চিত কোনো তথ্য জানা যায়নি। গাজীপুরের ডিসি এস এম তরিকুল ইসলাম গতকাল সন্ধ্যায় বলেন, ‘প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ না থাকায় আমরাও বিষয়টি পরিষ্কার না। মন্ত্রিপরিষদ থেকে নির্দেশনা পাওয়ার অপেক্ষায় আছি।’ সন্ধ্যা ৭টার দিকে মন্ত্রিপরিষদসচিব খুলনার বিভাগীয় কমিশনারসহ বিভাগের সব জেলার ডিসিদের সঙ্গে বৈঠক করছিলেন বলে জানা গেছে।
প্রজ্ঞাপন জারির পর মন্ত্রিপরিষদসচিব নিজেও গণমাধ্যমে কথা বলেন। তিনি জানান, মঙ্গলবার লকডাউন চলাকালে সরকারি-বেসরকারি সব অফিস বন্ধ থাকবে। মানুষও যাতায়াত করতে পারবে না। মালবাহী ট্রাক ও অ্যাম্বুল্যান্স ছাড়া কিছু চলবে না। শুধু কয়েকটা বিশেষ সার্ভিস ছাড় পাবে। জেলাগুলো ব্লকড থাকবে, কেউ ঢুকতে পারবে না।