ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

লকডাউন চলছে বোঝার উপায় নেই

প্রকাশিত: ২৩:২৯, ২১ এপ্রিল ২০২১

লকডাউন চলছে বোঝার উপায় নেই

স্টাফ রিপোর্টার ॥ নরমে-গরমে চলছে রাজধানীর লকডাউন পরিস্থিতি। চলমান লকডাউনের সপ্তম দিনে কারণে-অকারণে ঘরের বাইরে বের হতে দেখা যায় নগরবাসীকে। কোথাও কোথাও সড়কের চিত্র দেখে বোঝার উপায়ই নেই যে, দেশে চলছে সর্বাত্মক লকডাউন। দিন বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মানুষজনের ঘরের বাইরে বের হওয়ার প্রবণতা বেড়েছে। জরুরী প্রয়োজন না থাকলেও কেউ কেউ নানা অজুহাত নিয়ে ঘর থেকে বের হয়েছেন। মঙ্গলবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত রাজধানীর মিরপুর এলাকা সরেজমিনে ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের মানুষের চলাচল নিয়ন্ত্রণে তৎপর দেখা গেছে। প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাস থামিয়ে ভেতরে থাকা লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন পুলিশ সদস্যরা। সন্তোষজনক কারণ বলতে না পারলে সেইসব যানবাহন ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে। প্রধান সড়কে রিক্সাযোগে যাত্রী এলে যাত্রী নামিয়ে রিক্সা ঘুরিয়ে দিয়েছেন পুলিশ সদস্যরা। মোহাম্মদ আলম একটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা। সঙ্গে এক সহকর্মীকে নিয়ে মোটরসাইকেলে করে যাচ্ছিলেন মিরপুর ১৩ নম্বর থেকে এক নম্বরে। পথে চেকপোস্টে পুলিশ সদস্যরা তাদের একজনকে মোটরসাইকেল থেকে নামিয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন আমরা অফিসের একটি জরুরী কাজে বের হয়েছি। এই কাজটা না হলে আমাদের বড় ক্ষতি হয়ে যাবে। ১০ নম্বর গোল চত্বরে পুলিশ দাঁড় করিয়ে আমাদের একজনকে নেমে হেঁটে যেতে বলেন। তবে কোন মামলা দেয়নি। বনানী এলাকার বাসিন্দা মাসুদের মাথায় হেলমেট না থাকায় তাকে দাঁড় করান পুলিশ সদস্যরা। কী কারণে বের হয়েছেন এবং মোটরসাইকেলের কাগজপত্র আছে কি না জানতে চাইলে তিনি জানান তার জ্বর ও কাশি আছে। মিরপুর ১৩ নম্বরের সরকারী ইউনানী আয়ুর্বেদিক হাসপাতালে করোনার টেস্ট করাতে গিয়েছিলেন। তবে বেলা ১১টা পার হয়ে যাওয়ায় টেস্ট করাতে পারেননি তিনি। শ্বাসকষ্টের কারণে হেলমেট পরেননি বলে দাবি করেন তিনি। তাড়াহুড়া করে বের হওয়ায় মোটরসাইকেলের কাগজপত্রও সঙ্গে আনতে পারেননি বলেও অজুহাত দেখান। অসুস্থতাজনিত কারণে তাকেও মামলা না দিয়ে ছেড়ে দেন পুলিশ সদস্যরা কাফরুল থানার পেট্রোল ইন্সপেক্টর মুজিবুর রহমান বলেন, যারা প্রাইভেটকার বা মোটরসাইকেলে যাতায়াত করছেন তাদের কাছে মুভমেন্ট পাস আছে কিনা নিশ্চিত হয়ে যাতায়াত করতে দেয়া হচ্ছে। আর যারা রিক্সায় যাতায়াত করছেন তাদের মধ্যে যারা রোগী বা ভ্যাকসিন নিতে যাচ্ছেন তাদের ছেড়ে দেয়া হচ্ছে। এ ছাড়া অন্য প্রধান সড়কগুলোতে মানুষের যাতায়াতে নিয়ন্ত্রণ থাকলেও পাড়া-মহল্লায় যতক্ষণ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা থাকছে, ততক্ষণ মানুষ ঘর থেকে কম বের হচ্ছে। পুলিশ এলাকা ত্যাগ করার সঙ্গে সঙ্গে রাস্তায় নামে মানুষের ঢল। খুলে যাচ্ছে দোকানের সাঁটার। তবে রাজধানীর কোন কোন এলাকায় মুদি দোকানের জন্য নির্ধারিত সময়েও দোকান খুলে রাখতে দেয়া হচ্ছে না। ফলে কেনাবেচার সব কাজই চলছে সাঁটার নামিয়ে। আবার কোথাও কোথাও দেখা গেছে, চায়ের দোকানও খোলা। চলছে রাস্তায় যাতায়াত, চলছে আড্ডা।
×