ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

মমতাজ লতিফ

অনুসন্ধানী প্রতিবেদন দরকার

প্রকাশিত: ২০:০৪, ৩ ডিসেম্বর ২০২০

অনুসন্ধানী প্রতিবেদন দরকার

এ কথা তো বাঙালী দীর্ঘকাল যাবত জানে যে, একদিকে কানাডায় যেমন গড়ে উঠেছে বাঙালী ধনীদের বেগম ও সন্তানদের পাড়া, তেমনি মালয়েশিয়ায় তাদেরই একটি দল গড়ে তুলেছে ‘দ্বিতীয় হোম’! অবশ্যই এসব ‘বসতি’ স্থাপন করতে চাইলে অল্প স্বল্প টাকায় হয় না, বেশ ট্রাংক ভর্তি টাকাই লাগে। সেসব বড় অর্থ উপার্জনের অলিগলি, কালো-সাদা, নানা পথ খুব ভাল করে যাদের জানা আছে, তারা সরকার নামক যন্ত্রটি পরিচালনা করে। এসব কাজে দক্ষ প্রশাসকরা বিশেষত যারা প্রত্যেক মন্ত্রণালয়ের অধীনে সরকার কর্তৃক গৃহীত শত শত প্রকল্প পরিচালনা করে তাদের মধ্যেরই একটি গোষ্ঠী এই অর্থ বেআইনী পথে আয়ের কাজটি করে। পাঠক, আপনি জানেন যে, এসব পথঘাট জানা না থাকলে আপনি ঐসব গলি-ঘুঁচি খুঁজেও পাবেন না। এখন হয়তো আপনি বালিশকাণ্ড, পর্দাকাণ্ড, ক্যাসিনো-সম্রাট, গোল্ডেন মনির, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মিঠু ঠিকাদার, শাহেদ-করোনা, শহিদ-মানবপাচারী, পুলিশের চাঁদাবাজি, সিনহা হত্যা, ক্রসফায়ার বা থানায় হত্যাকাণ্ড- এসব অগুনতি শ্বাসরুদ্ধকর অবিশ্বাস্য দুর্নীতির সত্যকাহিনী শুনছেন। আবার পুরনো ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রামে সাংসদ-মন্ত্রীদের কোটি টাকা মূল্যের অন্যের বা সরকারের ভূমি- বাড়ি, নদী, খাল, মন্দির, শ্মশান, দরিদ্র পাহাড়ীদের জুম চাষের জমি ইত্যাদি দখলের খবর শুনে চোখ কপালে তুলছেন। একজন আমাকে সেদিন জিজ্ঞেস করল, মৌলানারা মাদ্রাসা-মক্তবে ছোট ছেলেদের বলাৎকার করে- এটা কি সত্যি? এবার আমি বিস্মিত হয়ে বললাম, এ তো বালিকা বয়স থেকে শুনছি। মা, বাবা-দু’জনই জানতেন। সতর্ক করেছেন ছোটদের। এ তো বহু প্রাচীন পাপ। যেমন, দক্ষিণ ভারতে মন্দিরে সেবাদাসী প্রথা প্রাচীনকালে চালু ছিল, তেমনি মহাভারতের যুগে নগরনটী, রূপে-গুণে-নৃত্যে-সঙ্গীতে- রমণে পটিয়সী নারীদের গড়ে তোলা হতো। দেখেছি, জাপানে চা-পান উৎসবে সর্বত্র সুদর্শন সুঠাম যুবকটিকে দেখে মনে প্রশ্ন জেগেছিল, কেন সেই যুবকটি প্রধান কেন্দ্রীয় চরিত্র হিসেবে চাপান উৎসবে ভূমিকায় থাকছে? কিন্তু জিজ্ঞেস করতে পারিনি। ওদের প্রাচীন আমল থেকে ‘গেইশা’ নারীরা তো ছিলই। উপমহাদেশে পরে বাইজী-নৃত্য ও কণ্ঠ সঙ্গীতে পারদর্শিনীরা সমাজের ধনীদের মনোরঞ্জন করেছে। এদের মধ্যে অনেকেই শুধু নৃত্য ও কণ্ঠ সঙ্গীত অথবা নাট্যাভিনয়ে যুক্ত থেকেছেন-এর বাইরে নৈতিকতাবিরোধী কোন কাজে তারা যেতেন না সহজে। এদের জীবন যাপন, অবদান নিয়ে গভীর কোন গবেষণা হয়নি, অথচ হওয়া প্রয়োজন ছিল। যা হোক, ফিরে আসি সেই মূল প্রশ্নে- শাহেদ, শহিদ, গোল্ডেন মনির, ওসি প্রদীপ, সেই মিঠু ঠিকাদার, সেই ক্রয়-বিক্রয়, সেই শ্রমিক পাচার, নারী-শিশু পাচার, ভূমি-বাড়ি-মন্দির, হিন্দু-আদিবাসীর জমি দখল, নদী-খাল দখল, অপরের প্লট নিজ নামে জালিয়াতি করে দখল ইত্যাদিতে দক্ষ কারা? রাজনীতিবিদ নাকি আমলা-প্রশাসকশ্রেণী? কানাডার ‘বেগম পাড়া’র পর অনুসন্ধানী প্রতিবেদন করতে কোন যোগ্য সাংবাদিককে দায়িত্ব দেয়া দরকার ছিল। এতদিন পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিজ উদ্যোগে কোন ব্যক্তিকে তথ্য সংগ্রহে ব্যবহার করে যে তথ্য উদঘাটন করেছেন সে তথ্য তাঁকে অবাক করলেও আমরা, জনগণ যারা ‘প্রকল্প’ নামের শত শত কাজ হতে দেখেছি, তাদের বদ্ধমূল ধারণা ছিল যে, কানাডায় বা মালয়েশিয়ার ‘দ্বিতীয় হোম’-এ যারা বাড়ি করেছে, তাদের মধ্যে আমলা-প্রশাসকের একটি বড় গোষ্ঠী থাকবে! তা না হলে, তারা সবাই বনানীতে ‘প্লট’ পায়, বাড়ি-গাড়ি করে কিভাবে? ছেলেমেয়েকে বিদেশে পড়ায় কিভাবে? এটা তো অনস্বীকার্য যে, আগে রাষ্ট্রের রাজস্ব আয় কম ছিল, বাজেট কম ছিল। সরকারের মন্ত্রী, আমলা, শিক্ষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, আইন কর্মকর্তা, সব সরকারী কর্মকর্তাদের বেতন অনেক কম ছিল। বেসরকারী সংস্থার কর্মকর্তাদের সেই তুলনায় বেতন অনেক বেশি ছিল। সে কারণে তখন বেসরকারী সংস্থায় চাকরি লাভ অনেক বেশি কাক্সিক্ষত ছিল। এখন অবস্থা উল্টো হয়ে গেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগে সরকারী বেতন-ভাতা দ্বিগুণ হওয়ায় বিএ, এমএ পাস করা তরুণ-তরুণীরা সরকারী চাকরি লাভের জন্য প্রাণান্ত চেষ্টা চালাচ্ছে। এটি একটি সুফল বয়ে এনেছে। ভাল মেধাবী তরুণ-তরুণীদের একটি দল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতায় যোগ দিচ্ছে, জাতি উচ্চ শিক্ষায় ভাল মেধার শিক্ষক লাভ করছে, এমন কি মাধ্যমিক, প্রাথমিক স্তরের শিক্ষায়ও বেতন-সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করার ফলে এখানেও ভাল, মেধাসম্পন্ন ছেলে-মেয়েরা শিক্ষকতায় প্রবেশ করছে। ফলে সার্বিকভাবে শিক্ষা স্তরের গুণগতমান বৃদ্ধি পাওয়ার একটি অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে, যা খুবই ইতিবাচক পরিবর্তনের সূচনা করেছে। এখন কথা উঠেছে, অন্যায় পথে বিপুল ধন, সম্পদ অর্জন করা, মানব পাচার করে, অপরের ধন, রাষ্ট্রের ভূমি-নদী-খাল দখল করে ধনী হবার এত অসংখ্য উদাহরণ দেখা যাচ্ছে কেন? ব্যাংক, বীমা প্রতিষ্ঠা করে সেখানে জনগণের গচ্ছিত আমানতের হাজার কোটি টাকা লুট ও পাচার করার কাজ যারা করছে, তারা শিক্ষিত, ভদ্র, স্যুট-প্যান্ট পরা সমাজের উচ্চ শ্রেণীভুক্ত ব্যক্তিবর্গ! তাদের মাসিক বেতন যথেষ্ট। তবু তাদের নাম দুর্নীতিবাজ হিসেবে প্রকাশিত হবার পর তারা কি ভেবেছিল যে, এসব দুর্নীতি যুবক, ডেসটিনিসহ আরও শতাধিক এমএলএম কোম্পানির প্রতারকদের সঙ্গে একই কলঙ্কযুক্ত তালিকায় নাম সংযুক্ত হওয়ায় ব্যক্তি হিসেবে কি তারা হেয় প্রতিপন্ন হবে না? এসব যদি অলৌকিক, অবাস্তব, অদৃশ্য ঘটনা হতো তাহলে এক কথা হতো। এখন একটা বাড়ি, গাড়ি, কোটি কোটি টাকার ব্যাংক হিসাব, শত শত বাড়ি-ফ্ল্যাট-প্লটের মালিকানার অবিশ্বাস্য কাহিনী শুনে অলৌকিকই মনে হয়! কেননা, কোন বিবেকবোধ, মন থাকা মানুষ কিভাবে এক কোটি নয়, দুই কোটি নয়, শত শত, হাজার কোটি টাকা লুটে নিতে পারে? বা, কোন মানুষের পক্ষে রাজউকের নির্ধারিত একটি বা দুটি নয়, শতাধিক অন্যের প্লট নিজের নামে করতে পারে! এটি রূপকথাকেও হার মানায়! আমরা জানি, রাজউকে কর্মকর্তাদের কাছে ফাইল নিয়ে যাওয়া, সেটি অনুমোদন করিয়ে আনা সম্ভব হয় কোন একজন বা দু’জন সৎ, আন্তরিক কর্মকর্তার জন্য। এদের নিচে যে কেরানি গোষ্ঠী ছিল, এখনও আছে, তাদের কবল থেকে ওনারা উদ্ধার না করলে কোন ভদ্রলাক, ভদ্রমহিলা, প্রকৃত প্লট-ফ্ল্যাটের মালিকানা লাভ করতে পারতেন না। মালিকানার প্রক্রিয়াটি সম্পন্নসহ মালিকানা লাভ করা অসম্ভব কষ্টসাধ্য এক বিষয়। এটি ভুক্তভোগী সবার জানা। আরও কঠিন কাজ, ডিপিডিসির অনুমোদন, লাইন স্থাপন করার সুকঠিন কাজ! তারপর তিতাস-এর গ্যাসলাইন প্রাপ্তির অনুমোদন, গ্যাসলাইন বাস্তবে বাড়িতে সংযুক্ত হওয়া! ভাবলে আজ আশ্চর্য লাগে, এসব দুঃসাধ্য কাজ কিভাবে সে পেট্রোল বোমার যুগে সম্পন্ন করতে পেরেছিলাম! আমি বলতে চাচ্ছি, যেসব সরকারী সংস্থা জনগণকে সেবা দেয়ার কাজটি করে, তাদেরকে ঠিকাদারের সাহায্যেই জনগণকে সেবা পৌঁছাতে হয়! এসব ঠিকাদারের সঙ্গেও কাজ করতে হয়েছে। অদ্ভুত দর্শন লোকগুলোর কোন কোন কর্মকর্তার সঙ্গে সখ্য থাকে, কোন কোন কঠোর কর্মকর্তার সঙ্গে থাকে বিশাল দূরত্ব! এদেরই মধ্য থেকে কোন এক বা একাধিক দানবসদৃশ ধন-সম্পদশালী ব্যক্তির উত্থান হয়। এখন দেখতে হবে এসব অন্যায়, দুর্নীতি, রাষ্ট্রের দুর্বল নাগরিকের সম্পদ দখল করে বিপুল অর্থ ধন-সম্পত্তির মালিকদের এই ধনী হবার সত্য খবর বের করার জন্য আমাদের সাংবাদিকেরা অনুসন্ধানী রিপোর্ট তৈরি করার পর্যাপ্ত স্বাধীনতা পাচ্ছেন কিনা। আসলে সাংবাদিকতার প্রাণ- অনুসন্ধানী প্রতিবেদন করার সাহসী সাংবাদিকতা। এটি শুধু যে দুর্নীতির উৎস উদ্ঘাটন করে তা নয়, এটি গণতন্ত্রের চর্চার মানকেও বাড়িয়ে দেয়। অর্থাৎ, একটা রাষ্ট্র বা সমাজ কতখানি ‘সত্য’কে গ্রহণ ও ধারণ করতে প্রস্তুত, তা পরোক্ষভাবে প্রমাণ করে। এ মুহূর্তে আমাদের খুব দরকার- ভাস্কর্য বিরোধিতার নামে রাষ্ট্রদ্রোহী মোল্লাদের, নেতাদের অতীতের, কমপক্ষে ’৭১-এর সময়ে তাদের, তাদের পরিবারের রাজনৈতিক ক্রিয়াকলাপ এবং এর পরবর্তী সময়ে তাদের রাজনৈতিক, সামাজিক কর্মকাণ্ডের গতি প্রকৃতির লক্ষ্য, উদ্দেশ্যসহ বিস্তারিত অনুসন্ধানী প্রতিবেদন। এই প্রতিবেদন জাতিকে মামুনুল হক-ফয়জুল হক-বাবুনগরী প্রমুখ যারা রাষ্ট্রের প্রধান স্তম্ভ- ধর্মনিরপেক্ষতা ও অসাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে বক্তব্য প্রদান করে, তাদের চরম রাষ্ট্রবিরোধী বক্তব্যের লক্ষ্য-উদ্দেশ্যসহ এই কলুষিত মন মানসিকতার ধারক ব্যক্তিদের প্রকৃত অবস্থান সম্পর্কে জাতিকে সুস্পষ্ট ধারণা প্রকাশ করবে। অবশ্যই তাদের বক্তব্যই তাদের, তাদের পাকিস্তানীদের মতো ‘ইসলাম’ ও ‘নবী’র নামে নানা অপবাদ দিয়ে দেশের মূল সংস্কৃতি, বাঙালীর সর্বমত ও সর্ব ধর্মের মিলনকে, এ দেশের হাজার বছরের প্রাচীন সমৃদ্ধ শিল্প, ভাস্কর্য, চিত্রকলা, স্থাপত্য, সাহিত্য, যাত্রা পালা, পুঁথি কাহিনী, নৃত্যকলা, সঙ্গীতকে অগ্রাহ্য করে ভিনদেশী, মনগড়া ‘ইসলাম’ ও ‘নবীর নির্দেশ’ হিসেবে ভ্রান্ত, উদ্দেশ্যমূলক এবং অবশ্যই পাকিস্তানী-জামায়াতী-জঙ্গী ধারার প্রতিষ্ঠার মূল সমর্থক বলে প্রমাণ করেছে। তারা নিজেরাই নিজেদের বাংলাদেশের সংস্কৃতিবিরোধী, মুক্তিযুদ্ধের শত্রু হিসেবে প্রমাণ করেছে, এতে কারও সন্দেহ নেই। এখন কথা থাকে- আমরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সমর্থক, প্রগতিশীল মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে প্রাপ্ত ’৭২-এর সংবিধানের বাংলাদেশে বিশ্বাসী জাতির বৃহৎ অংশ, যারা তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গঠনে নিয়োজিত, তারা তাদের শান্তিপূর্ণ জীবনে তাদের পাকা ধান বার বার খেয়ে যাওয়া ঘুঘুদের আর কেন রেহাই দেবে? মাফ করবে? এরা তো নিজের মুখের বক্তবেই রাষ্ট্রদ্রোহী। কেন তারা রাষ্ট্রদ্রোহের অপরাধে বিচারের মুখোমুখি হবে না? কেনই বা তারা একজন মুক্তিযোদ্ধার সমান মুক্ত জীবন উপভোগ করবে? তাদের জীবন যাপনের জীবিকা কি? তাদের অর্থ আয়ের উৎস কি? হেফাজতে ইসলামের হাটহাজারী মাদ্রাসার বিশাল জায়গাটি কিভাবে কখন তারা কার সহায়তায় দখল করেছিল, তার অনুসন্ধান করা খুবই প্রয়োজন। আমার ধারণা, হাটহাজারীর যে ‘বড় স্কুলে’ অর্থাৎ, ঐ মাধ্যমিক স্কুলে হাটহাজারীর বিখ্যাত আলেম ও উচ্চশিক্ষিত ‘আলম পরিবারের’ সদস্যরা ম্যাট্রিকুলেশন পাস করেছিল, যাদের বসতি ছিল, এখনও আছে সেই ‘বড় স্কুলের’ কাছে। আমার ধারণা, ঐ বড় স্কুলের জমিটিতে এই মাদ্রাসা গড়ে তুলেছিল হেফাজতের শফী ও অন্য পাকিস্তানপন্থী, মুক্তিযুদ্ধবিরোধী গোষ্ঠীটি! এই ইতিহাস অনুসন্ধান করা এখন সময়ের দাবি। তাছাড়াও আমার প্রশ্ন, ফতেয়াবাদের জালালাবাদের যে পাহাড়ে আমাদের গর্বের, ব্রিটিশ শাসন অবসানের লক্ষ্যে প্রথম মুক্তিযুদ্ধ, ইংরেজদের বিরুদ্ধে শুরু ও শেষ করেছিল, সেই সূর্য সেন, প্রীতিলতার পবিত্র স্মৃতিধন্য স্থানটিও মাদ্রাসার কব্জায় চলে যায়নি তো? এসব সত্য তথ্য উদঘাটন করা, প্রকাশ করা জাতির এই মুক্তিযুদ্ধের পঞ্চাশ বছর পূর্তিতে একটি অবশ্য কর্তব্য। নতুবা, আমাদের সত্য ইতিহাস এসব রাষ্ট্রদ্রোহীর অপপ্রচারে, গুজবে হারিয়ে যাবে। এ তথ্য জাতি জানে যে, বর্তমানে হেফাজতের ছদ্মবেশে আসলে পাকিস্তানপন্থী জামায়াত-শিবিরপন্থীরা একদিকে হেফাজতের নেতৃত্ব দখলে সচেষ্ট, অন্যদিকে জামায়াতের ঔরসে সৃষ্ট জেএমবি, নব্য জেএমবি, হিজবুত তাহরীর, আল্লাহর দল, আনসার আল ইসলাম ইত্যাদি জঙ্গী গোষ্ঠী এদের পাশে এদেরকে প্রতিষ্ঠিত করতে মদদ জোগাতে বোমা হামলা, প্রগতিশীল বুদ্ধিজীবীদের ভীতসন্ত্রস্ত করা, নানাভাবে হেনস্তা করা, সর্বোপরি, তাদেরকে মৌলবাদ-বিরোধিতা থেকে বিরত রাখার চেষ্টা বর্তমানে করে চলছে। অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের উচিত হবে, এ মুহূর্তে হাটহাজারীর বড় মাদ্রাসার জমির দখলি স্বত্ব, মাদ্রাসার অর্থের উৎস, হেফাজতের অতীত ও বর্তমান কাজকর্ম, এদের সঙ্গে রাষ্ট্রবিরোধী ধর্মভিত্তিক রাজনীতির চর্চাকারী জামায়াত-বিএনপি ও জঙ্গী দলগুলোর সম্পর্কে তথ্যাদি উদঘাটন ও প্রকাশ করা। সরকার নিশ্চয়ই জানে রাষ্ট্রবিরোধিতার দণ্ড অবশ্যই মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। এর সঙ্গে যোগ করতে হবে, দেশ থেকে বহিষ্কার অথবা এক্সপেল করার দণ্ড। বার বার ইসলামের লেবাসধারীরা নানা অজুহাতে মুক্তি পেয়ে যাক, বার বার বিরোধিতা করার কোন সুযোগ পাক সেটা আমরা চাই না। দেশের ও জাতির শত্রুদের দেশের ভূমিতে থেকে, দেশের ভাত খেয়ে দেশের বিরোধিতা করবে, তা আমরা আর কোন মতেই দেখতে চাই না। লেখক : শিক্ষাবিদ
×