ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৫ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১

ডিজিটাল ভূমি জরিপ

-

প্রকাশিত: ২০:৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

ডিজিটাল ভূমি জরিপ

সম্পাদকীয়

দেশে শুরু হয়েছে ডিজিটাল ভূমি জরিপ। মঙ্গলবার রাজধানীর ভূমি ভবনে বাংলাদেশ ডিজিটাল জরিপ (বিডিএস) কার্যক্রমের ইডিএলএমএস (অ্যাস্টাব্লিস্টমেন্ট ডিজিটাল ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম) প্রকল্পের অগ্রগতি শীর্ষক এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় ভূমিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দের সভাপতিত্বে। বিডিএস জরিপ এলাকার মধ্যে থাকা জমির মালিকদের চলমান জরিপ সম্পর্কে পর্যাপ্তভাবে অবহিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন ভূমিমন্ত্রী।

জরিপ প্রক্রিয়া চলাকালে জমির মালিকদের বিষয়টি অনেক সময় অজ্ঞাত থাকার কারণে অহেতুক নানা জটিলতার সৃষ্টি হয়। পরে জমি বিক্রি বা হস্তান্তরের সময় সংশ্লিষ্ট মালিকেরা দেখতে পান, ভুলভাবে জরিপ হয়েছে এবং অন্য কারও নামে জমির খতিয়ান হয়ে গেছে গেজেটভুক্ত। ফলস্বরূপ জমির বৈধ মালিকদের সম্পত্তির অধিকার ফিরে পেতে দীর্ঘস্থায়ী আইনি জটিলতা, মামলা-মোকদ্দমাসহ অর্থনৈতিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়।

এ সমস্যার সমাধানে স্থানীয় ও জাতীয়ভাবে ডিজিটাল ভূমি জরিপ সম্পর্কে বিভিন্ন গণমাধ্যমে ব্যাপক প্রচার চালানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন ভূমিমন্ত্রী। উল্লেখ্য, ২০২৬ সালের মধ্যে প্রকল্পের আওতায় ছয়টি এলাকার জরিপ কার্যক্রম শেষ হবে। দ্বিতীয় পর্যায়ে সারাদেশে চালানো হবে বিডিএস কার্যক্রম। 
এর পাশাপাশি আধুনিক ও যুগোপযোগী করা হচ্ছে সেই সুদূর ব্রিটিশ আমলে প্রণীত ভূমি সংক্রান্ত আইন ও বিধি। নতুন আইন তৈরির পাশাপাশি পুরনো আইন সংস্কারের মাধ্যমে দেশের মানুষকে আরও গতিশীল ভূমিসেবা প্রদানই এর অন্যতম লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। উল্লেখ্য, দেশে ভূমিসংক্রান্ত আইন, বিধি, জটিলতা, বেচাকেনা, রেজিস্ট্রেশন, নামজারি, খাজনা প্রদানে নানা সমস্যা-সংকট তদুপরি দেওয়ানি মামলার পাহাড় ও দীর্ঘসূত্রতা নিয়ে প্রায় সর্বস্তরের মানুষের অভিযোগের অন্ত নেই।

এর পাশাপাশি উৎকোচ প্রদান, ঘুষ, দুর্নীতি, অনিয়ম, অব্যবস্থাপনার অভিযোগ তো আছেই। এসব অবসানের লক্ষ্যেই ভূমি আইন আধুনিক ও সময়োপযোগী করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার অন্যতম অঙ্গ হিসেবে ভূমি মন্ত্রণালয় অনলাইনে জমির খাজনা ও নামজারি ফি জমা দেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।

উল্লেখ্য, দেশের প্রায় সব এসি ল্যান্ড অফিসের বিরুদ্ধে অন্তহীন দুর্নীতির অভিযোগ এক রকম ওপেনসিক্রেট। দেওয়ানি মামলা জটের মধ্যেও অন্যতম ভূমির মালিকানাস্বত্ব। সে অবস্থায় এই প্রধান খাতটি ডিজিটাল করা হলে ঘুষ-দুর্নীতি কমে আসবে নিশ্চয়ই। ১৯৫০ সালের রাষ্ট্রীয় অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইনে গ্রামাঞ্চলে ভূমি ব্যবহারের ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসকের অনুমতির বিধান থাকলেও সেটি প্রতিপালিত হয় না কোথাও।

ফলে কৃষিজমিসহ ভূমির যথেচ্ছ ব্যবহার এমনকি অপব্যবহার বেড়েছে ক্রমশ। ভূমির পরিমাণ যেহেতু সীমাবদ্ধ ও সীমিত, সেহেতু তা অবশ্যই পরিকল্পিত উপায়ে ব্যবহারের দাবি রাখে। নতুন ভূমি আইনে তা নিশ্চিত করা গেলে একদিকে যেমন জমির অপরিকল্পিত ব্যবহার রোধ হবে, অন্যদিকে সুনিশ্চিত হবে উন্নয়নের গতি।

×