ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১৮ মে ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

প্রধানমন্ত্রীর প্রত্যাশার কৃষি ও পর্যটন খাত

ওবায়দুল কবির

প্রকাশিত: ২০:৩৬, ৪ মে ২০২৪

প্রধানমন্ত্রীর প্রত্যাশার কৃষি ও পর্যটন খাত

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একজন স্বপ্নবাজ মানুষ

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একজন স্বপ্নবাজ মানুষ। তিনি দেশটিকে গড়ে তুলতে চান তাঁর মনের মতো করে। সাজাতে চান আধুনিক স্থাপত্যশৈলিতে। ইউএন এসকাপের সম্মেলনে গিয়েও তিনি থাইল্যান্ডের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশে গড়ে তুলতে চেয়েছেন আধুনিক পর্যটন কেন্দ্র। এজন্য তিনি সহযোগিতা চেয়েছেন থাই সরকারের। একই সঙ্গে তিনি থাইল্যান্ডের কৃষি বিপ্লবের আলোকে বাংলাদেশেও ঘটাতে  চেয়েছেন আধুনিক কৃষি বিপ্লব

সম্প্রতি থাইল্যান্ড সফর করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। থাই প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণে ইউএন এসক্যাপের সম্মেলনে যোগদানের উদ্দেশ্যেই ছিল প্রধামন্ত্রীর থাইল্যান্ড সফরের মূল উদ্দেশ্য। ছয় দিনের এই সফরে তিনি থাইল্যান্ডের রাজা এবং প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বিষয়াদি নিয়ে বৈঠক করেন। প্রধানমন্ত্রীর এই সফরে একটি চুক্তি, তিনটি সমঝোতা স্মারক এবং মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির আলোচনা শুরু করার জন্য লেটার অব ইনটেন্ট স্বাক্ষরিত হয়। সমঝোতা স্মারকের মধ্যে একটি ছিল দুই পর্যটন শিল্পের উন্নয়নে থাইল্যান্ডের সহযোগিতা।

থাইল্যান্ড সফর শেষে সাংবাদিক সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশে পর্যটন শিল্পের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। পর্যটন শিল্পে থাইল্যান্ডের অনেক অভিজ্ঞতা। তারা যদি আমাদের এই খাতে সহযোগিতা করে, তবে পর্যটন খাতে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হতে পারে।
পর্যটন আমার খুবই প্রিয় একটি বিষয়। সুযোগ পেলে দেশ-বিদেশে ঘুরে বেড়ানো আমার সবচেয়ে প্রিয় শখ। বিদেশে পর্যটনের স্বর্গরাজ্য থাইল্যান্ড আমার সবচেয়ে পছন্দের স্থান। নিরাপত্তা, কম খরচ, সযতেœ গড়ে তোলা অসাধারণ পর্যটন স্পট এবং হাতের কাছে সকল সুযোগ-সুবিধা দেশটিকে পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় করে তুলেছে। তারা জানে, কিভাবে বিশে^র সকল দেশের পর্যটক আকর্ষণ করা যায় এবং কি ধরনের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা হলে পর্যটন শিল্প সমৃদ্ধ হয়।

সেভাবেই তারা গড়ে তুলেছেন পর্যটন খাত। ধর্মীয় কারণে হয়তো বাংলাদেশ থাইল্যান্ডের মতো সকল সুবিধা নিশ্চিত করতে পারবে না। তবে সঠিক পরিকল্পনায় আমাদের পর্যটন শিল্প সমৃদ্ধ হতে পারে। দেশের পর্যটন খাত সমৃদ্ধ করতে প্রধানমন্ত্রীর সদিচ্ছার কথা জানালেন সাংবাদিক সম্মেলনে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, একমাত্র আমাদের দেশেই রয়েছে ৮০ কিলোমিটার দীর্ঘ সমুদ্র সৈকত। এই দীর্ঘ সৈকত পর্যটকদের উপযোগী করে গড়ে তোলার জন্য আমরা থাইল্যান্ডের সহযোগিতা চেয়েছি। সমুদ্র সৈকতের পাশাপাশি আমাদের রয়েছে পাহাড়, বন, সমতলভূমি এবং অসাধারণ নৈঃসর্গিক প্রকৃতি। আমরা এগুলোকে কাজে লাগাতে পারি। বেশ কয়েকবার থাইল্যান্ড সফরের অভিজ্ঞতায় বলতে পারি, প্রকৃতির বৈচিত্র্য কাজে লাগিয়ে তারা পর্যটকদের আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছে।

এখন থেকে তিন চার দশক আগে থাইল্যান্ডে পর্যটনের মূল আকর্ষণ ছিল পতিতাবৃত্তি। কম খরচে যৌনসুখ উপভোগের জন্য সারাবিশ^ থেকে পর্যটকরা আসতেন এই দেশটিতে। এখন পরিস্থিতি পাল্টেছে। তারা এখন পতিতাবৃত্তিকে নিরুৎসাহিত করছে। সারাদেশে ছড়িয়ে থাকা এই পেশার মানুষগুলোকে গুটিয়ে এনেছে নির্দিষ্ট স্থানে। ভ্রমণ পিপাসু মানুষের জন্য গড়ে তুলেছে অসংখ্য পর্যটন কেন্দ্র। প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য কাজে লাগিয়ে তারা আয় করছে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার। 
থাইল্যান্ডের আইনে পতিতাবৃত্তি অবৈধ। পর্যটক আকর্ষণের জন্য এই আইন আগে শিথিল থাকলেও ধীরে ধীরে কঠোর করা হচ্ছে। পর্যটন তাদের আয়ের অন্যতম উৎস থাকলেও পতিতাবৃত্তি নয়। পর্যটন শিল্পে অর্জিত অর্থ দিয়ে দেশটি গত দুই দশক ধরে হেঁটেছে শিল্পায়নের পথে। পাশাপাশি গড়ে তুলেছে সমৃদ্ধ কৃষি খাত। থাইল্যান্ডে এখন তৈরি হচ্ছে বিশ^খ্যাত ব্র্যান্ডের গাড়ি, ইলেকট্রোনিক্স এবং পোশাক। বিশে^র সকল নামিদামি পণ্যের শো-রুম এখন শোভা পাচ্ছে দেশটির প্রত্যন্ত অঞ্চলে। বিশ^বাজারের অনেকটা দখল করে আছে থাইল্যান্ডে উৎপাদিত চাল এবং সুস্বাদু ফল।

আর্দ্র এবং উষ্ণ জলবায়ুর কারণে থাইল্যান্ডে উৎপাদিত সকল ধরনের ফল মিষ্টি এবং সুস্বাদু। পরিকল্পিতভাবে ফল ও ফসল উৎপাদন করে তারা ক্রমশ সমৃদ্ধ করছে কৃষি খাত। সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন, থাইল্যান্ডের সহযোগিতা বাড়াতে পারলে তাদের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে আমাদের দেশের কৃষি খাত সমৃদ্ধ হতে পারে।
কতটা যতেœর সঙ্গে থাইল্যান্ড তাদের পর্যটন ও কৃষি খাত গড়ে তুলেছে, এর কিছু উদাহরণ তুলে ধরতে চাই। সম্প্রতি থাইল্যান্ড ভ্রমণে ফুকেট পরিদর্শন অন্তর্ভুক্ত করেছিলাম। ফুকেট হচ্ছে থাইল্যান্ডের সবচেয়ে বড় দ্বীপ। দেশের দক্ষিণাঞ্চলের দ্বীপটি পশ্চিমা পর্যটকদের স্বার্গরাজ্য। রাজধানী ব্যাঙ্কক থেকে এর দূরত্ব ৮৬২ কিলোমিটার, বিমানে এক ঘণ্টা ২০ মিনিটের পথ। ৫৭৬ বর্গকিলোমিটার এই দ্বীপের স্থানীয় বাসিন্দা আড়াই লাখের কাছাকাছি। সারাবছর ধরে অন্তত এক লাখ পর্যটক এই দ্বীপে অবস্থান করে। ডিসেম্বর, জানুয়ারি ও মার্চ মাসে এর পরিমাণ আরও বেশি।

ফুকেটে একটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর রয়েছে। অস্ট্রেলিয়া, জাপান, ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য এবং পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশ থেকে সরাসরি বিমান চলাচল করে এই দ্বীপে। সারাবছর ধরে তপ্ত আবহাওয়ায়ও দ্বীপের অপার সৌন্দর্য পরিদর্শনে পর্যটকদের দমাতে পারে না। দ্বীপটির আশপাশে রয়েছে ছোট বড় আরও ৩২টি দ্বীপ। প্রায় সব দ্বীপকেই সাজানো হয়েছে পর্যটকবান্ধব করে।
ফুকেট দ্বীপে রয়েছে অন্তত ৬টি সমুদ্র সৈকত। এর মধ্যে সবচেয়ে দীর্ঘ এবং জনপ্রিয় সৈকতের নাম পাতং। এই  সৈকতকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে প্রধান পর্যটন কেন্দ্র। পাতং সমুদ্র সৈকতের ২৩ কিলোমিটার দূরে দ্বীপটির পূর্ব প্রান্তে পুরনো ফুকেট শহর। দৃষ্টিনন্দন এই শহরটি গড়ে তোলা হয়েছে পর্যটকদের কথা মাথায় রেখে। পর্যটকরা ফুকেট শহর থেকে ৪৬ কিলোমিটার সমুদ্রপথ পাড়ি দিয়ে কো ফিফি দ্বীপপুঞ্জে  যেতে পছন্দ করেন। ৬টি দ্বীপের সমন্বয়ে গড়ে ওঠা আন্দামান সাগরের এই ফিফি দ্বীপপুঞ্জ যেন প্রকৃতির স্বর্গভূমি।

ক্রাবি প্রদেশের অন্তর্গত এই দ্বীপপুঞ্জে যেতে জাহাজে করে সাগরপথে সময় লাগে দুই ঘণ্টা। স্পিডবোটে যেতে লাগে এক ঘণ্টা। ক্রাবি থেকে লাগে জাহাজে ৩০ মিনিট। প্রধান দ্বীপটি আয়তনে আমাদের সেন্ট মার্টিনের সমান। ফিফি দ্বীপপুঞ্জের অনেক বৈশিষ্ট্য রয়েছে। অসংখ্য হোটেল রিসোর্ট থাকলেও ওখানে বহুতল ভবন নির্মাণ নিষিদ্ধ। পাহাড়ের গায়ে কিংবা সমুদ্রের তীর ঘেঁষে গড়ে তোলা হয়েছে এসব একতলা রিসোর্ট। দ্বীপপুঞ্জের ৮০ শতাংশ বাসিন্দা মুসলিম। প্রায় সকল রেস্টুরেন্টে ঝুলছে হালাল খাবারের সংকেতিক চিহ্ন। 
এইসব দ্বীপে যন্ত্রচালিত কোনো যানবাহন চলাচল করে না।  ঠেলা গাড়িতে করে জেটি থেকে পর্যটকদের মালামাল পৌঁছে দেওয়া হয় রিসোর্টগুলোতে। দ্বীপগুলোতে চলাচলের একমাত্র উপায় সরু ইট বিছানো পথে হেঁটে। একজন টুরিস্ট গাইড জানালেন খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি তথ্য। এই দ্বীপে প্রতিদিন প্রচুর পর্যটক আসেন, অনেকে রাত্রীযাপন করেন, আবার অনেকে ফিরে যান ফুকেট কিংবা ক্রাবি।

গোটা দ্বীপপুঞ্জের কোনো বর্জ্য এই এলাকার ভূখন্ড কিংবা সমুদ্রে ফেলা হয় না। প্রতিদিন সকালে শত শত টন বর্জ্য জাহাজে করে নিয়ে যাওয়া হয় মূল ভূখ-ে। তথ্যটি শুনে হতবাক হলাম। একটি মাত্র তথ্যে বুঝা যায় তারা পর্যটন শিল্পকে কোন্ চোখে দেখে, কতটা গুরুত্ব দেয়।
ব্যাঙ্কক শহরে বিখ্যাত উইকেন্ড মার্কেট চাতুচক। বাঙ্ককবাসীর দাবি, এটি বিশে^র সবচেয়ে বড় উইকেন্ড মার্কেট। শনি ও রবিবার বসে এই মার্কেট। সবাই কম মূল্যে কেনাকাটার জন্য এই মার্কেটে যান। পর্যটকরাও যান মার্কেট পরিদর্শন ও কমদামে কেনাকাটার জন্য। মার্কেটটি এতটা বিশাল যে একদিনে পুরোটা দেখা প্রায় অসম্ভব। দুইদিন ছাড়া সপ্তাহের বাকি ৫ দিন ওখানে পাইকারি কেনাবেচা হয়। ব্যাঙ্কক শহরের বিভিন্ন প্রান্তের পাইকারি ক্রেতারা এই সময় মার্কেটে ভিড় করেন।

তপ্ত দুপুরে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় একটু স্বস্তির জন্য একটি ডাব খেতে চাইলাম। দোকানি বরফ পানিতে চুবিয়ে রাখা বিশেষ শৈলিতে কাটা একটি ডাব বের করলেন। মুখ কেটে আমাকে দেওয়ার সময় আবার তিনি এটি ফিরিয়ে নিলেন। আরও একটি ডাব কেটে তিনি আমাকে খেতে দিলেন। ডাবের ঠান্ডা সুস্বাদু পানি যেন প্রাণ জুড়িয়ে দিল। পানি শেষ হলে দোকানি সুন্দর কৌশলে দ্রুত তুলে দিলেন পাতলা নরম মিষ্টি শাঁস।

আগের ডাবটি কেন ফিরিয়ে নিলেন জানতে চাইলে দোকানি বললেন, এটি পরিপক্ব ছিল না। অর্থাৎ নির্দিষ্ট সময়ের আগেই ডাবটি গাছ থেকে নামানো হয়েছে। এজন্য তিনি এটি কাস্টমারকে দিতে পারেন না। ডাবটি দিয়ে কি করবেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘যারা এটি সরবরাহ করেছে  তাদের কাছে ফেরত দেব।’ কচি ডাবটি খেলে কি হতো প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘এটি খেলে তুমি ডাবের আসল স্বাদ পেতে না। এতে থাইল্যান্ডের বদনাম হতো।’
এবার আমার অবাক হওয়ার পালা। খেয়াল করে দেখলাম, থাইল্যান্ডে এসে আমি যত ডাব খেয়েছি সব প্রায় একই ধরনের পরিপক্ব। দাম বেশি পাওয়ার আশায় তারা অপরিপক্ব ডাব গাছ থেকে নামায় না। শুধু ডাবই নয়, কোনো ফলই তারা পরিপক্ব হওয়ার আগে গাছ থেকে নামায় না। আবহাওয়া ছাড়াও থাইল্যান্ডের সকল ফল এত সুস্বাদু হওয়ার পিছনে এটি অন্যতম একটি কারণ। লক্ষ্য করলাম, আমাদের দেশে কচি ডাবের নামে কি খাওয়ানো হচ্ছে।

বেশি দাম পাওয়ার আশায় অপরিপক্ব ডাব গাছ থেকে নামিয়ে ফেলা হচ্ছে। বিঘিœত হচ্ছে এগুলোর গুণ ও মান। শুধু ডাব কেন, বেশি দাম পাওয়ার আশায় সিজন শুরুর আগেই গাছের আম বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে। এই প্রবণতা ঠেকানোর জন্য কোনো আম কখন নামানো যাবে তা নির্দিষ্ট করে সরকারকে আইন করতে হয়েছে। পেঁয়াজের ঊর্ধ্বমূল্যের কারণে এবার কৃষকরা সিজনের আগেই অপরিপক্ব পেঁয়াজ তুলে বিক্রি করে দিয়েছেন। এই পেঁয়াজ সারাবছর ধরে সংরক্ষণ করা যাবে না, নষ্ট হয়ে যাবে। রমজানের সময় অপরিপক্ব পেঁয়াজে বাজার সয়লাব ছিল। এবার তাই পেঁয়াজ সংকটের আশঙ্কা করছেন অনেকে।
পরিবেশ রক্ষায় থাইল্যান্ডের ফিফি আইল্যান্ডের বর্জ্য জাহাজে করে নেওয়া হয় মূল ভূখ-ে। সেখানে এগুলো ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে নানা পণ্য তৈরি করা হয়। আমাদের সেন্ট মার্টিনের কথা চিন্তা করলে কষ্ট হয়। ওখানে পরিবেশ রক্ষা করে দ্বীপটিকে সুন্দর রাখার কোনো পরিকল্পনাই নেওয়া হয়নি। অপিরকল্পিতভাবে গড়ে উঠেছে অসংখ্য হোটেল মোটেল। জাহাজে বর্জ্য বহন করে মূল ভূখণ্ডে নিয়ে আসা দূরের কথা গোটা সেন্ট মার্টিন ধীরে ধীরে পরিণত হচ্ছে ময়লার ভাগাড়ে।

অনুমোদনহীন ও অপরিকল্পিত যানবাহন এবং পরিবেশ দূষণে নষ্ট হচ্ছে অপূর্ব সুন্দর কোরাল সৈকত। এমন অবস্থা চলতে থাকলে হয়তো প্রকৃতি একদিন প্রতিশোধ নিয়ে সব তছনছ করে দেবে অথবা নোংরা পরিবেশের কারণে দ্বীপটি হয়ে উঠবে ব্যবহারের অযোগ্য। 
আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একজন স্বপ্নবাজ মানুষ। তিনি দেশটিকে গড়ে তুলতে চান তাঁর মনের মতো করে। সাজাতে চান আধুনিক স্থাপত্যশৈলিতে। ইউএন এসকাপের সম্মেলনে গিয়েও তিনি থাইল্যান্ডের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশে গড়ে তুলতে চেয়েছেন আধুনিক পর্যটন কেন্দ্র। এজন্য তিনি সহযোগিতা চেয়েছেন থাই সরকারের। একই সঙ্গে তিনি থাইল্যান্ডের কৃষি বিপ্লবের আলোকে বাংলাদেশেও ঘটাতে  চেয়েছেন আধুনিক কৃষি বিপ্লব।

এই খাতেও তাই তিনি সহযোগিতা চেয়েছেন থাই সরকারের। প্রধানমন্ত্রী হয়তো পথ করে দিতে পারবেন, তাঁর একার চেষ্টায় থাইল্যান্ডের সমমানের পর্যটন কিংবা কৃষি খাত তৈরি হবে না। এজন্য আমাদের মানসিকতা পরিবর্তন করতে হবে। সেন্ট মার্টিনসহ দেশের সকল পর্যটন এলাকা গড়ে তুলতে হবে যত্নের সঙ্গে, রক্ষণাবেক্ষণ করতে হবে নিজ নিজ দায়িত্বে। বেশি লাভের আশায় অপরিপক্ব কৃষিপণ্য জমি থেকে তুলে ফেলার মানসিকতা ত্যাগ করতে হবে। পরিবেশের কথা চিন্তা করে স্বাভাবিক নিয়মে পরিচালিত করতে হবে কৃষি খাত। মানসিকতা পরিবর্তন করতে পারলেই কেবল সম্ভব হবে থাইল্যান্ডের মতো উন্নতমানের পর্যটন খাত এবং কৃষি ব্যবস্থা। 

লেখক : নির্বাহী সম্পাদক, জনকণ্ঠ

×