ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

ঠাকুরগাঁওয়ে বেশি দামে সার বিক্রি, লাইসেন্স বাতিলের হুমকি

প্রকাশিত: ২৩:১০, ১৫ নভেম্বর ২০২০

ঠাকুরগাঁওয়ে বেশি দামে সার বিক্রি, লাইসেন্স বাতিলের হুমকি

নিজস্ব সংবাদদাতা, ঠাকুরগাঁও, ১৪ নবেম্বর ॥ জেলায় রাসায়নিক প্রতিবস্তা সার নির্ধারিত ১১শ’ টাকার স্থলে ১৪শ’ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সার নিয়ে স্থানীয় ডিলারদের বিরু্েদ্ধ নানা রকম কারসাজির অভিযোগ করা হলেও কৃষি বিভাগের কোন তদারকি নেই। এদিকে রসিদের মাধ্যমে সার বিক্রির নিয়ম থাকলেও সে নিয়ম মানছেন না অনেক ডিলার। তবে এমন অভিযোগ প্রমাণ হলে ডিলারদের লাইসেন্স বাতিলের হুমকি দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। সবজির জন্য বিখ্যাত জেলা হিসেবে দেশের উত্তরের জেলা ঠাকুরগাঁও পরিচিত। এ জেলায় উৎপাদিত সবজি বিভিন্ন জেলাসহ বিদেশেও রফতানি করা হয়। সেই সবজি উৎপাদনে অতি প্রয়োজনীয় রাসায়নিক সার এখানে বিক্রি হচ্ছে অতি চড়া দামে। কৃষকদের সেবায় প্রতিটি ইউনিয়নে দু/তিন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা থাকলেও অদৃশ্য কারণে সরকারের নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে ৩শ’ থেকে ৩শ’ ৫০ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে টিএসপি সার। ডিলারদের কাছে সরকারী দরে সার কিনতে গেলে বলা হয় টিএসপি সার নেই। আবার বেশি দাম দিলে সার মেলে পর্যাপ্ত পরিমাণে। ঠাকুরগাঁও জেলায় ৫০ কেজির এক বস্তা ট্রিপল সুপার ফসফেট (টিএসপি) (সাদা-কালো) সরকারী মূল্য ডিলার পর্যায়ে এক হাজার আর চাষী পর্যায়ে ১১শ’ টাকায় বিক্রির জন্য নির্ধারিত রয়েছে। অথচ কালো টিএসপি ১৪শ’ থেকে ১৪শ’ ৫০ টাকা, সাদা টিএসপি ১২শ’ ৫০ থেকে ১৩শ’ টাকা, ডিএপি সার ডিলার পর্যায়ে ৭শ’ আর চাষী পর্যায়ে বিক্রি হচ্ছে ৮শ’ ২০ থেকে ৮শ’ ৫০ টাকা। নাইট্রোজেন জাতীয় সার (ইউরিয়া) ডিলার পর্যায়ে ৭শ’ আর চাষী পর্যায়ে ৮শ’ টাকা বিক্রি হচ্ছে। ডিলার পর্যায়ে মিউরেট অব পটাশ (এমওপি) ৬শ’ ৫০ আর চাষী পর্যায়ে ৭শ’ ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বিএডিসির একাধিক ডিলার বলেন, বিএডিসির সাধারণ ডিলাররা প্রতি মাসে নন-ইউরিয়া সারের বরাদ্দ পান এক থেকে দেড় টন আর বাফারসহ বিএডিসির ডিলাররা মাসে বরাদ্দ পান ৬০-৭০ টন। তাই সারের বাজার তাদের হাতে। আব্দুল কাদের নামে এক কৃষক অভিযোগ করে বলেন, ঠাকুরগাঁও সদরে বাফার ও বিএডিসির ডিলার কবীর এন্টারপ্রাইজের ম্যানেজার রফিকুল ইসলামের কাছে সার কিনতে গেলে তিনি প্রথমে টিএসপি সারের মূল্য চান ১৪শ’ টাকা। এসময় টাকার রসিদ চাইলে তিনি তা দিতে অস্বীকার করেন। খুচরা সার বিক্রেতা জুয়েল রানা বলেন, ডিলারদের কাছে ১৪শ’ টাকায় কিনে বাইরে ১০-২০ টাকা লাভ করে বিক্রি করছি। ঠাকুরগাঁও জেলার সদর উপজেলার হরিহরপুর এলাকার চাষী বেলাল হোসেন বলেন, এখনই ৩শ’ থেকে ৩শ’ ৫০ টাকা বেশি দিয়ে সারের বস্তা কিনতে হচ্ছে। রবিমৌসুম শুরু হলে কী হবে বলতে পারছি না। ঠাকুরগাঁও জেলার সদর উপজেলার রহিমানপুর ইউনিয়নের পাইকপাড়া গ্রামের কৃষক আব্দুল গনি বলেন, সার নিয়ে কর্মকর্তাদের মাঠ পর্যায়ে তদারকি নেই। ডিলাররা নিজেদের সুবিধার্থে সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন। বিএডিসি ফার্টিলাইজার এ্যাসোসিয়েশনের জেলা শাখার সভাপতি এনামুল হক সরকার বলেন, সার ডিলারদের কোন সিন্ডিকেট নেই, তবে সমিতি আছে। নিয়ম অনুযায়ী ডিলাররা সার উত্তোলন করে সরকারী দরে বিক্রি করছে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক আফতাব হোসেন বলেন, কেউ বেশি দামে সার বিক্রি করলে তার লাইসেন্স বাতিল করা হবে।
×