ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

আন্দোলনের নামে সন্ত্রাস করলে জনগণ প্রতিহত করবে ॥ কাদের

প্রকাশিত: ২২:২৭, ৫ অক্টোবর ২০২০

আন্দোলনের নামে সন্ত্রাস করলে জনগণ প্রতিহত করবে ॥ কাদের

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বিএনপির উদ্দেশে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, বিএনপি আন্দোলনের নামে কোন ধরনের সন্ত্রাস সৃষ্টি, জনভোগান্তি ও জানমালের ক্ষতি করলে সরকার মেনে নেবে না। গণতন্ত্রের নামে কোন অপশক্তি দেশের বিদ্যমান শান্তি ও স্বস্তি নষ্ট করার অপচেষ্টা করলে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে তা প্রতিহত করা হবে। রবিবার ধানমন্ডিস্থ আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপ-কমিটি আয়োজিত করোনাভাইরাস প্রতিরোধসামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাখতে গিয়ে তিনি এমন হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন। ওবায়দুল কাদের তার সরকারী বাসভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে যুক্ত হন। আগামী দুই মাসের মধ্যে বিএনপি তাদের নেতাকর্মীদের মাঠে নামার প্রস্তুতি নেয়ার নির্দেশ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি মাঠে থাকুক তা আমরাও চাই। গণতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ আন্দোলনই জনগণ চায়। কিন্তু গণতন্ত্রের নামে কোন অপশক্তি দেশের বিদ্যমান শান্তি ও স্বস্তি নষ্ট করার অপচেষ্টা করলে তা প্রতিহত করা হবে। তিনি বলেন, শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করলে আমাদের সমস্যা নেই। কিন্তু আন্দোলনের নামে কোন ধরনের সন্ত্রাস সৃষ্টি বা জানমালের ক্ষতি সরকার মেনে নেবে না। ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি তাদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা-মামলার কল্পিত অভিযোগের ভাঙ্গা রেকর্ড বাজানো এখনও অব্যাহত রেখেছে। আসন্ন উপনির্বাচনে ভরাডুবির আশঙ্কায় তারা এখন থেকেই হামলার মিথ্যা অভিযোগ করছে। এটা তাদের পুরনো অভ্যাস। ভোটারদের আস্থা অর্জনে তাদের কোন পুঁজি নেই, তাই বিএনপি মিথ্যাচারের ভেলায় চড়ে উত্তাল সাগর পাড়ি দেয়ার অপচেষ্টা করছে। তিনি বলেন, প্রার্থীরা নির্বাচনে শেষ পর্যন্ত টিকে থাকতে চাইলেও বিএনপি হাইকমান্ডের অপরাজনৈতিক কৌশলের কারণে প্রার্থীরা ভোটের সময় নিষ্ক্রিয় হয়ে যায় একান্ত অনিচ্ছায়। নির্বাচন করা বিএনপির আসল লক্ষ্য নয়, তাদের একমাত্র লক্ষ্য হচ্ছে নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করা। তিনি বলেন, অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার সোচ্ছার, অনিয়ম উদঘাটন করে সরকার স্বপ্রণোদিত হয়ে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিচ্ছে, কারও চাপে পড়ে নয়। বিএনপি সমর্থিত বুদ্ধিজীবীদের মতে তারা (বিএনপি) এখন কোমর ভাঙ্গা রাজনৈতিক দল উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ বলেন, যাদের হাত দিয়ে এদেশে দুর্নীতি বটবৃক্ষে রূপ নিয়েছিল, তারা দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলন করবে, একথা শুনলে জনগণেরও হাসি পায়। তিনি বলেন, নির্বাচন ও কমিটি গঠনের সময় এলে বিএনপি নেতারা বাণিজ্য করছে বলে তাদের কর্মীদের প্রকাশ্যে অভিযোগ আছে। তাই তারা নাকি অনিয়ম দূর করার আন্দোলন করবে? জনগণ তা বিশ্বাস করে না। ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে জমা পড়া সব পূর্ণাঙ্গ কমিটি যাচাই বাছাই করে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী বিতর্কিত ও অনুপ্রবেশকারীদের বাদ দিয়ে কমিটি করতে হবে। দুর্যোগ দুর্বিপাকে একমাত্র আওয়ামী লীগই জনগণের পাশে থাকে জানিয়ে তিনি বলেন, একদিকে করোনা মহামারী আর অপরদিকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সফলতার সঙ্গে দুর্যোগ মোকাবেলায় বাংলাদেশ এখন বিশ্বে রোলমডেল। সরকার প্রমাণ করেছে দুর্যোগ প্রতিরোধ করা না গেলেও শেখ হাসিনার দূরদর্শী পদক্ষেপের মাধ্যমে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ হ্রাস করা যেতে পারে। এ সময় ধানমন্ডির অফিসে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম এমপি, এস এম কামাল হোসেন, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডাঃ রোকেয়া সুলতানা এবং উপ-দফতর সম্পাদক সায়েম খান, কার্যনির্বাহী সদস্য মেরিনা জাহান কবিতা, শাহাবুদ্দিন ফরাজি, উপ-কমিটির সদস্য আখলাকুর রহমান মাইনু, প্রফেসর কামরুজ্জামান, ড. মোয়াজ্জেম হোসেন মাতাব্বুর আমিনুল, ডাঃ শেখ ফয়েজ আহমেদ, চৌধুরী সাইফুন্নবী সাগর, হারুন অর রশীদ, আকাশ জয়ন্ত গোপ, আবদুল বারেক, মাহবুবুর রশীদ, আমিনুর রশীদ দুলাল প্রমুখ। অনুষ্ঠানে ৮টি বিশেষ সুবিধা সম্পন্ন অক্সিজেন কনসেনট্রেটর, অক্সিজেন সিলিন্ডার, উন্নতমানের পিপিই, সেফটি গগলস, উন্নতমানের হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও মাস্ক, উন্নতমানের এন্টিসেপটিক সাবান বিতরণ করা হয়। বিভিন্ন জেলা হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মধ্যে ঠাকুরগাঁও জেলা হাসপাতাল, শাহজাদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, নালিতাবাড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সামগ্রী দেয়া হয়। এছাড়া বিশেষ সুবিধাসম্পন্ন উন্নতমানের অক্সিজেন কনসেনট্রেটর, ধর্মীয় ও সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের মাঝে অক্সিজেন সিলিন্ডার, উন্নতমানের পিপিই, সেফটি গগলস, সুকভার, হেড কভার, উন্নতমানের হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও মাস্ক, উন্নতমানের এন্টিসেপটিক সাবান বিতরণ করা হয়েছে। ধর্মীয় ও সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের মাঝে রয়েছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন, বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ, আঞ্জুমানে মফিদুল ইসলাম, রামকৃষ্ণ মিশন, বৌদ্ধ বিহার, সন্ধানী, জাতীয় মহাশ্মশান কমিটি।
×