ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

বাগমারায় ২২ হাজার কৃষক পাচ্ছেন বিনামূল্যে সেচ সুবিধা

প্রকাশিত: ২০:৪৬, ১৪ জুলাই ২০২০

বাগমারায় ২২ হাজার কৃষক পাচ্ছেন বিনামূল্যে সেচ সুবিধা

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ চলতি আমন মৌসুমে রাজশাহীর বাগমারার ২২ হাজার চাষী বিনামূল্যে খেতে সেচ দিতে পারবেন। বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ) চাষীদের খেতে বিনামূল্যে পানি সেচ দেবে। করোনাকালে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া চাষীদের আগ্রহ বাড়াতে এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এর ফলে চাষীরা নির্বিঘেœ ধান চাষ শুরু করেছে। বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ) বাগমারার আঞ্চলিক দফতর সূত্র জানায়, করোনাকালে বিভিন্ন পেশার মানুষের মধ্যে চাষীরাও ক্ষতির শিকার হয়েছেন। অনেকে পুঁজি হারিয়ে ফেলেছেন। চলতি মৌসুমে তারা চাষাবাদবিমুখ হতে পারেন এবং আশঙ্কায় চাষীদের প্রণোদনা হিসেবে বিনামূল্যে ধান খেতে পানি সেচের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সে অনুসারে এবার উপজেলার ৪৫০ সেচ পাম্পের মাধ্যমে খেতে পানি সেচ দেয়া শুরু হয়েছে। গত ২২ জুন স্থানীয় সাংসদ এনামুল হক এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করেছেন। বিএমডিএ’র বাগমারার সহকারী প্রকৌশলী রেজাউল করিম বলেন, কৃষি মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে বরেন্দ্র কর্তৃপক্ষ উপজেলার ১১ হাজার ৪৬৩ হেক্টর জমির আউশ ধান খেতে এবার বিনামূল্যে পানি সেচ দেয়া শুরু করেছে। উপজেলার ২২ হাজার কৃষক এই সুবিধা সরাসরি ভোগ করবেন। তাদের নিয়ন্ত্রণে থাকা ৪৫০ সেচ পাম্পের (গভীর নলকূপ) বিদ্যুত বা ডিজেলের খরচ কর্তৃপক্ষ বহন করবে। এজন্য গভীর নলকূপের অপারেটরদের নির্দেশনাসহ তাদের কার্ডে রিচার্জ করে দেয়া হয়েছে। ধান ঘরে উঠা পর্যন্ত সেচের খরচ কর্তৃপক্ষ বহন করবে। এজন্য ৪৬ লাখ ১২ হাজার ৪২৪ টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। বিদ্যুত বিল পরিশোধ ও ডিজেল কেনায় এই অর্থ ব্যয় করা হবে। উপজেলার খদ্দকৌড় গভীর নলকূপের অপারেটর রোজিনা আক্তার বলেন, আগে কৃষকদের টাকা দিয়ে ধান খেতে সেচ দিতে হতো। তবে এবার বিএমডিএ দফতর থেকে তাদের খরচ দেয়া হচ্ছে। চাষীদের কাছ থেকে কোন সেচ চার্জ তারা নিচ্ছেন না। কাচারী কোয়ালীপাড়া গভীর নলকূপের অপারেটর আবেদ আলী জানান, প্রতি আউশ মৌসুমে ১৩-১৪ হাজার টাকা খরচ হতো। এবার খরচের সব টাকায় কর্তৃপক্ষ বহন করছে, এজন্য চাষীরা উপকৃত হচ্ছেন। একই উপজেলার মচমইল গ্রামের চাষী ইব্রাহিম হোসেন, দধির খয়রা গ্রামের আবদুস সালামসহ ৩০-৩৫ চাষী বলেন, এবার তারা আউশ চাষ শুরু করেছেন। তবে এখন পর্যন্ত তাদের সেচ চার্জ দিতে হয়নি। বিগত বছরে চাপ দিয়ে তাদের কাছ থেকে সেচ চার্জ আদায় করা হতো। অনেক স্থানে সেচের বদলে খেতের এক তৃতীয়াংশ পাকা ধান কেটে নিয়ে যেতেন অপারেটরেরা। এছাড়াও নির্দিষ্ট সেচ চার্জের অতিরিক্ত টাকা আদায় করতেন তারা। তবে এবার সরকার সুযোগ দেয়াতে নিশ্চিন্তে চাষাবাদ করতে পারছেন। উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান বলেন, সরকারের এই বিনামূল্যে সেচ সুবিধা চাষীরা সরাসরি ভোগ করছেন। করোনাকালে এই সুবিধা পাওয়াতে চাষীরা বেশ উপকৃত হবেন এবং ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবেন বলে মন্তব্য করেন তিনি।
×