ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১

লঞ্চ দুর্ঘটনার তদন্ত কমিটি পুনর্গঠন দাবি

প্রকাশিত: ২৩:৩২, ৪ জুলাই ২০২০

লঞ্চ দুর্ঘটনার তদন্ত কমিটি পুনর্গঠন দাবি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বুড়িগঙ্গায় ভয়াবহ লঞ্চ দুর্ঘটনার পর নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় কর্তৃক গঠিত তদন্ত কমিটির সদস্যসচিবের দায়িত্ব থেকে বিআইডব্লিউটিএর পরিচালক (নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক) মোঃ রফিকুল ইসলামকে অব্যাহতি প্রদানের দাবি জানিয়েছে দুটি বেসরকারী সংগঠন। শুক্রবার এক যৌথ বিবৃতিতে গ্রিন ক্লাব অব বাংলাদেশের (জিসিবি) সভাপতি নুরুর রহমান সেলিম এবং নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটির সভাপতি হাজী মোহাম্মদ শহীদ মিয়া নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের প্রতি এই আহ্বান জানান। একইসঙ্গে পুরনো ও জরাজীর্ণ ছোট লঞ্চ এমএল মর্নিং বার্ডকে বছরের পর বছর ফিটনেস (সার্ভে) প্রদানের সঙ্গে জড়িত শিপ সার্ভেয়ারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ উদঘাটনের স্বার্থে সুষ্ঠু ও প্রভাবমুক্ত তদন্তের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। বিবৃতিতে বলা হয়, দেশ-বিদেশে আলোড়ন সৃষ্টিকারী ২০১৪ সালের ৪ আগস্ট পদ্মার মাওয়ায় এমএল পিনাক-৬ লঞ্চ দুর্ঘটনার পর গঠিত উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে দায়ী কর্মকর্তাদের তালিকায় বিআইডব্লিউটিএর তৎকালীন পরিচালক (নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক) মোঃ শফিকুল হক ও একই বিভাগের যুগ্ম পরিচালক মোঃ রফিকুল ইসলাম ছিলেন। কিন্তু অদৃশ্য কারণে এ দু’জনের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়নি কর্তৃপক্ষ। ইতোমধ্যে শফিকুল হক অবসরোত্তর ছুটিতে গেছেন এবং রফিকুল ইসলাম পদোন্নতি পেয়ে পরিচালক হয়েছেন। এবার সেই রফিকুল ইসলামকেই তদন্ত কমিটির সদস্যসচিব করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ অপ্রত্যাশিত ও অগ্রহণযোগ্য। এছাড়া তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ও সদস্যসচিব পদে কারিগরি বিশেষজ্ঞ রাখা হয়নি; যা অতীতের যেকোন নৌ-দুর্ঘটনার পর তদন্ত কমিটি গঠনের প্রচলিত রীতি ভঙ্গ করা হয়েছে। সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে দুই শীর্ষ পদের অন্তত একটিতে কারিগরি বিশেষজ্ঞ রাখা আবশ্যক বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়। দুই সংগঠনের যৌথ বিবৃতিতে আরও বলা হয়, দুর্ঘটনাকবলিত এমএল মর্নিং বার্ড বহু বছরের পুরনো লঞ্চ। তা সত্ত্বেও ২০১২ সালে ‘এ্যাজ বিল্ট’ (নতুন নির্মাণের পর নক্সা প্রণয়ন ও অনুমোদন) দেখিয়ে নৌপরিবহন অধিদফতরের নারায়ণগঞ্জ কার্যালয়ের তৎকালীন ‘প্রকৌশলী ও জাহাজ জরিপকারক’ লঞ্চটি সার্ভে করে রেজিস্ট্রেশন দেন। সর্বশেষ গত তিন বছর নৌযানটির বার্ষিক ফিটনেস পরীক্ষা করছেন একই কার্যালয়ের বর্তমান ‘প্রকৌশলী ও জাহাজ জরিপকারক’ এবং তাঁর সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলী ও জাহাজ জরিপকারক (সিইএসএস) প্রতি বছর সার্ভে সনদ দিয়ে আসছেন। অথচ বিশেষজ্ঞ কমিটির সুপারিশে এ ধরনের ‘সানকেন ডেক বিশিষ্ট’ লঞ্চ বা নৌযান প্রতি পাঁচ বছরে অন্তত দু’বার ড্রাইডকিং (ডকইয়ার্ডে বিশেষভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও মেরামত) করার কথা বলা হলেও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা তা আমলে নেননি বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।
×