ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১

বিদ্যুত ও জ্বালানি খাতে ৩০ হাজার ৭৩৬ কোটি টাকার উন্নয়ন কর্মসূচী

প্রকাশিত: ২২:৪৯, ১২ জুন ২০২০

বিদ্যুত ও জ্বালানি খাতে ৩০ হাজার ৭৩৬ কোটি টাকার উন্নয়ন কর্মসূচী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিদ্যুতে সঞ্চালন, বিতরণ ক্ষমতা বৃদ্ধি এবং জ্বালানিতে গ্যাস আহরণের পরিমাণ বাড়ানোকে গুরুত্ব দিয়ে প্রস্তাবিত বাজেটে ২৬ হাজার ৭৫৮ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে অর্থ বিভাগ। তবে নিজস্ব অর্থায়ন, বিভিন্ন তহবিল এবং ইসিএ ফাইন্যান্সিং মিলিয়ে বিদ্যুত, জ্বালানি খাতে ৩০ হাজার ৭৩৬ কোটি টাকার উন্নয়ন কর্মসূচী বাস্তবায়ন হচ্ছে বলে বিদ্যুত, জ¦ালানি এবং খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে জানিয়েছে। ঘোষিত বাজেট দেখা গেছে বিদ্যুতে ৯৩টি এবং জ্বালানিতে ২৪ প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। বিদ্যুত খাতে ২৭ হাজার ৫৯৭ কোটি ৭৩ লাখ টাকা এবং জ¦ালানিতে তিন হাজার ১৩৮ কোটি ৬৫ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এবার জ্বালানি তেলের দাম কমা এবং গ্যাসের দাম বাড়ানোতে জ¦ালানি খাতে কোন ভর্তুকি রাখা হয়নি। অন্যদিকে বিদ্যুতের সঙ্কট সামাল দিতে থাকছে আট হাজার কোটি টাকার ভর্তুকির প্রস্তাব। বাজেটে বিদ্যুত খাতে ২৭ হাজার ৫৯৭ কোটি ৭৩ লাখ টাকার মধ্যে অর্থ বিভাগ দেবে ২৪ হাজার ৮০৩ কোটি ৯৩ লাখ, ইসিএ (ঠিকাদারদের মাধ্যমে অর্থায়ন) হবে এক হাজার ৮৩৭ কোটি ৯৬ লাখ এবং নিজস্ব তহবিল থেকে আরও ৯৫৫ কোটি ৮৪ লাখ টাকা ব্যয় করা হবে। জ্বালানিতে তিন হাজার ১৩৮ কোটি ৬৫ লাখের মধ্যে অর্থ বিভাগ দেবে এক হাজার ৮৩৫ কোটি ৬২ লাখ, জিডিএফ (গ্যাস উন্নয়ন তহবিল) থেকে ২৬০ কোটি ২৯ লাখ এবং নিজস্ব খাত থেকে আরও এক হাজার ৪২ কোটি ৭৪ লাখ টাকা ব্যয় করা হবে। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল তার বাজেট বক্তৃতায় বলেন, ২০৪১ সাল মেয়াদী মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। ওই সময়ের মধ্যে ৬০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুত উৎপাদন করা হবে। এখন যা সব মিলিয়ে ২৪ হাজার মেগাওয়াট। এখন পর্যন্ত দেশের ৯৬ ভাগ মানুষ বিদ্যুত সুবিধার আওতায় এসেছে। এখন দেশে মাথাপিছু বিদ্যুত উৎপাদন ক্ষমতা ৫১০ মেগাওয়াটে উন্নীত হয়েছে। এখন ১৬ হাজার ৮৭৫ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতার ৪৮টি বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে। এছাড়া ১২টি বিদ্যুত কেন্দ্রর চুক্তি সই করা হচ্ছে। যার ক্ষমতা দুই হাজার ৭৮৫ মেগাওয়াট। এছাড়া আরও ৬৫০ মেগাওয়াট ক্ষমতার ৬টি বিদ্যুত কেন্দ্রের দরপত্র প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এছাড়া আরও ১৯ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণের পরিকল্পনা করা হচ্ছে। বিদ্যুত উৎপাদনে কেন্দ্র নির্মাণ এবং জমি অধিগ্রহণে থাকছে বেশিরভাগ বরাদ্দ। প্রত্যেক সরকারী কোম্পানিকে পৃথকভাবে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এছাড়া জি টু জি ভিত্তিতে কয়েকটি মেগা প্রকল্প নির্মাণের জন্য কোম্পানিগুলোকে জমি অধিগ্রহণে বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। অর্থ মন্ত্রী বলেন, পায়রা, মহেশখালী মাতারবাড়িতে মেগাহাব নির্মাণের জন্য বড় প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। এখানে বিভিন্ন ক্ষমতার কেন্দ্র নির্মাণের কথা বাজেট বক্তৃতায় উল্লেখ করা হয়। নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে ১০ ভাগ বিদ্যুত উৎপাদনের লক্ষ্যে নতুন প্রকল্প হাতে নেয়া হচ্ছে। এছাড়া উপ-আঞ্চলিক সহযোগিতার মাধ্যমে বিদ্যুত খাতের উন্নয়নের কথা তুলে ধরা হয়। বাজেট বক্তৃতায় বলা হয়, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে শতভাগ উপজেলায় বিদ্যুতায়ন করা হবে। এর মধ্যে ২৫৭ উপজেলায় শতভাগ বিদ্যুতায়ন করা হয়েছে এছাড়া আরও ১৫৩ উপজেলায় শতভাগ বিদ্যুতায়নের কাজ চলছে। বিদ্যুত সঞ্চালনে পুরাতনের সঙ্গে যোগ হয়েছে নতুন প্রকল্প। এ খাতকে সব থেকে বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়েছে বাজেটে। একটি আধুনিক সঞ্চালন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এছাড়া উন্নয়ন সহযোগীরাও সঞ্চালন খাতে বিপুল বিনিয়োগ করেছে।
×