ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

রাজস্ব ও মুদ্রানীতির সমন্বয় প্রয়োজন

প্রকাশিত: ২০:৩৬, ৫ জুন ২০২০

রাজস্ব ও মুদ্রানীতির সমন্বয় প্রয়োজন

সামষ্টিক অর্থনীতিকে বেগবান করতে এ দুঃসময়ে রাজস্ব ও মুদ্রানীতির সমন্বয় দরকার। আগামী অর্থবছরের জাতীয় বাজেট ২০২০-২১ প্রণয়নের রাজ দ্রুতগতিতে চলছে। এ বাজেটে অর্থনীতির একজন সাধারণ ছাত্র হিসেবে মনে করি যুদ্ধকালীন তৎপরতার মধ্য দিয়ে নিম্নোক্ত খাতসমূহের মধ্যে অগ্রাধিকার দিতে হবে : (১) কৃষি খাত, (২) আমদানিনির্ভর শিল্প স্থানীয় পর্যায়ে ব্যবহার করে স্থানীয় অর্থনীতি শক্তিশালীকরণ, (৩) স্বাস্থ্য খাত, (৪) শিক্ষা খাত, (৫) সিএমএমই (কটেজ, স্মল, মিডিয়াম এন্টারপ্রাইজ) খাত, (৬) গ্রামকে স্মার্ট শহর বানানোর খাত। বর্তমানে কোভিডের কারণে যেভাবে সাধারণ মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে, বিশ্বের অন্য দেশের তুলনায় সংখ্যায় কম হলেও কিন্তু দেশের অনেক বরেণ্য ব্যক্তিত্ব ইতোমধ্যে মারা গেছেন। বাংলাদেশ সরকারপ্রধান স্বয়ং ৩১টি ধাপে যে নীতিমালা কোভিডের মোকাবেলায় ঘোষণা করেছেন, সেটির বাস্তবায়নের রূপরেখা অবশ্যই বাজেটে প্রতিফলিত হবে বলে বিশ্বাস করি। প্রয়াত বরেণ্য বুদ্ধিজীবী ও সাহিত্য সমালোচক ড. আনিসুজ্জামান একবার বলেছিলেন যে, আমলারা যদি পরোপকারী হয় তবে তা জনকল্যাণে লাগে (মোবাশ্বের আলীর স্বার্ণপদক পুরস্কার অনুষ্ঠান, ২০১৪)। দেশের এ ক্রান্তিকালে শেষ পর্যন্ত বাস্তবায়নের সিংহভাগ দায়-দায়িত্ব আমলাদের ওপর পড়ে। কৃষি খাতে সুন্দরভাবে বোরো মৌসুমের ধান কাটা হয়েছে। এখন সরাসরি ন্যায্যমূল্যে কৃষকের কাছ থেকে ধানচাল সংগ্রহ করা দরকার। এ জন্য অবশ্য সরকার বেশকিছু পদক্ষেপ ঘোষণা করেছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশিত সবজি ও তরিতরকারি গ্রামে এবং শহরের ফ্ল্যাটে লাগানোর যে আহ্বান, তার একটি সুস্পষ্ট ঘোষণা এবারের বাজেটে নির্দেশ ও নিয়মসহ প্রতিফলিত হওয়া দরকার। রিলিফ হিসেবে ফল ফলাদি, তরিতরকারি দেয়ার যে নির্দেশ দেয়া হয়েছে, তা যেন সঠিকভাবে বাস্তবায়িত হয়। ৬৮ হাজার গ্রামে যদি এক বিঘা অনাবাদী জমির ওপর সংরক্ষণাগার গড়ে তোলা যায়, তবে অনেকদিন ধরে স্থানীয় মানুষ ওই সমস্ত পণ্যাদি গ্রহণ করতে পারবে। পাশাপাশি পচনশীল পণ্যগুলো নষ্ট হওয়ার হাত থেকে বেঁচে যাবে। যেহেতু সরকার গ্রামকে স্মার্ট শহর বানাতে চাচ্ছেÑ কমিউনিটি ক্লিনিক, স্যাটেলাইট ক্লিনিক ও টেলি মেডিসিনের উদ্যোগ অনেক আগেই নিয়েছে। এখন সময় এসেছে তদারকি ও পর্যবেক্ষণ করে যে সমস্ত স্থানে অসঙ্গতি আছে সেগুলো দূর করার জন্য পিকেএসএফের মাধ্যমে তাদের সহযোগী প্রতিষ্ঠানসমূহকে কাজে লাগানো। অবশ্যই এ খাতে বরাদ্দ দিতে হবে। সরকারপ্রধান ঈদের আগে প্রত্যেক পরিবারকে নগদ ২ হাজার ৫০০ টাকা করে ৮ লাখ বেনিফিসিয়ারিকে রূপালী ব্যাংক লিঃ-এর শিওর ক্যাশের মাধ্যমে বিতরণ করেছেন। স্থানীয় পর্যায়ে কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য তৃণমূল পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ, প্রশাসন যন্ত্র এবং সেখানকার স্থানীয় অর্থনীতির জন্য কোনটি গ্রহণযোগ্যÑ এ ধরনের আমদানি বিকল্পায়ন শিল্প প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ ডেলেভপমেন্ট ব্যাংককে কাজে লাগানোর দিকনির্দেশনা রাজস্ব নীতিতে থাকতে হবে। পাশাপাশি কৃষি ব্যাংককে কৃষকদের উন্নয়ন অধিকতর সম্পৃক্ত করার নির্দেশনা দরকার। এ জন্য সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ ও প্রণোদনা দেয়ার জন্য বাংলাদেশ উন্নয়ন ব্যাংক এবং কৃষি ব্যাংক ওয়াকারকে ব্যবহার করতে হবে। এদিকে সফল এনজিওদেরও স্ব-উপার্জিত পরিবার তৈরির মডেল বাজেটে প্রত্যাশা করছি। পিকেএসএফের সমৃদ্ধ কর্মসূচীটি একটি যুগান্তকারী কর্মসূচী এবং এটি এ দুর্যোগের সময়ে কাজ করতে পারে। প্রত্যাশা থাকবে এবারের বাজেটে অর্থ বরাদ্দ পিকেএসএফের সমৃদ্ধি কর্মসূচীর জন্য দেয়া হবেÑ যাতে করে ব্যাস্টিক অর্থনীতি ও সামষ্টিক অর্থনীতিকে বেগবান করতে পারে। ফল-ফলাদি, আনাজ, তরিতরকারির ওপর যে গুরুত্ব সরকার দিচ্ছে তার সঙ্গে সংযুক্ত করতে হবে অর্থায়নের ব্যবস্থা এবং সে অর্থায়নটি অবশ্যই বাজেটে যাতে বরাদ্দ করা হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। স্থানীয় অর্থনীতিতে কি ধরনের শিল্প প্রতিষ্ঠা করা যায়, স্থানীয় পর্যায়ের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করা যায়, সে জন্য একটি মডেল তৃণমূল পর্যায় থেকে জরুরী ভিত্তিতে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে এবং পরিকল্পনা কমিশনের কাছে প্রেরণ করা উচিত। সমন্বিত কর্মসূচীর মাধ্যমে কৃষি অর্থনীতিকে বেগবান করার বিকল্প নেই- এ জন্য বাজেটে কর্মসূচী দরকার। চলতি বাজেটে প্রকল্প হিসেবে একটি জেলায় শস্য বীমা করার কথা ছিল। সেটি বিবেচনায় এনে সমগ্র দেশে শস্য বীমা করার জন্য উদ্ভাবনীমূলক কর্মসূচী যাতে বীমা কর্তৃপক্ষ গ্রহণ করে সেদিকে খেয়াল রাখা দরকার। পুঁজি বাজারে নতুন কর্তৃপক্ষ সরকার বসিয়েছে। অধ্যাপক শিবলী যাতে পুঁজি বাজারকে ঢেলে সাজাতে পারেন। নতুন নতুন ফিন্যান্সিয়াল ইনস্ট্রুমেন্ট আনতে পারেন। ডেবট মার্কেট ও ডেরিবিটিভিস মার্কেট চালু করতে পারেন। সে জন্য সহায়ক ভূমিকা ও দিকনির্দেশনা অবশ্যই প্রস্তাবিত বাজেটে থাকতে হবে। ব্যাংকিং খাতে একজন ওসবুডসম্যান হিসেবে বরেণ্য অর্থনীতিবিদ ড. মোহাম্মদ ফরাস উদ্দিনকে নিয়োগ করলে ব্যাংকিং খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে সহায়তা হবে। কারণ, এমন এক ক্রান্তিকালে বাজেট ঘোষিত হচ্ছে যে, কেবল রাজস্ব নীতির ওপর নির্ভর করলেই চলবে না। বিপুল ঘাটতি মেটানোর জন্য মুদ্রা নীতি এবং বিনিময় হারকেও প্রাধান্য দিতে হবে। রফতানি খাতকে দীর্ঘদিন ধরে প্রণোদনা দেয়া হয়েছে। কিন্তু এবারের দুর্যোগের সময়ে দেখা গেল তাদের অসহায়ত্ব। বাজেটে তারা বৈশ্বিক বাজারে চাহিদা নিরূপণ করতে পারে সে জন্য প্রতিটি বাংলাদেশী দূতাবাস বিদেশ থেকে এদেশের চাহিদা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রেরণ করলে সেটির সঙ্গে সমন্বয় সাধন করে উৎপাদন করতে হবে। কি আশ্চর্য সবচেয়ে কম দামি পালস অক্সিমিটার কয়দিন আগেও এ এক হাজার টাকা ছিল, বিএমএ ভবনে বিক্রি হচ্ছে ছয় হাজার টাকায়। কোভিড থেকে কেউ সিন্ডিকেশন ভাঙ্গার শিক্ষা নিচ্ছে না। পালস অক্সিমিটার, গগলস, পাঁচ স্তরবিশিষ্ট মাস্ক, পিপিই, ফেস শিল্প এদেশে যাতে তৈরি হয় দেশী এবং বিদেশী চাহিদা মেটানোর জন্য সেদিকে বাজেটে অর্থ বরাদ্দ রাখতে হবে। কালো টাকাও এ খাতে অধিক ব্যয় করার জন্য আহ্বান জানানো যেতে পারে। স্থানীয় পর্যায়ে আমদানি বিকল্পায়ন শিল্প প্রতিষ্ঠার জন্য অবশ্যই সরকারকে অর্থ বরাদ্দ রাখার পাশাপাশি বাস্তবায়ন করতে হবে। সরাসরি কোন কোম্পানির মাধ্যমে অর্থ না দিয়ে বরং বিশেষায়িত ব্যাংক হিসাবে বাংলাদেশ উন্নয়ন ব্যাংককে কাজে লাগাতে হবে। স্বাস্থ্য খাতে সরকার ডাক্তার ও নার্স নিয়োগ করেছে। আরও অধিক নার্স এবং টেকনোলজিস্টের পদ বিভিন্ন হাসপাতালে সৃষ্টি করত নিয়োগ করতে হবে। পাশাপাশি ৪৩টি জেলার একটিতেও আইসিও বেড নেই। সেগুলোতে আগামী অর্থবছরে বরাদ্দের ব্যবস্থা করতে হবে। মিনিস্টার এবং ওয়ালটন কোম্পানি যে ভেন্টিলেশন মেশিন তৈরি করেছে, সেগুলোর মধ্যে গুণগতমান সম্পন্নগুলো নিয়ম মেনে দ্রুত প্রতি জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে হবে। মানবিক গুণসম্পন্ন স্বাস্থ্যকর্মী বাহিনী দেশের জন্য খুব দরকার। শিক্ষা খাতে এবারের বরাদ্দে ভিন্নতা আনতে হবে। প্রত্যেকটি ছাত্রছাত্রী, যারা ক্লাস এইটে পড়ছে এবং তদুর্ধ, যাদের সচ্ছলতা নেই তাদের ল্যাপটপে কিংবা স্মার্টফোন দিয়ে মিট গুগলে অনলাইনে ক্লাস এবং পরীক্ষা নেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। এ জন্য যে অর্থ বরাদ্দ দরকার সেটি অবশ্যই প্রস্তাবিত বাজেটে থাকা বাঞ্ছনীয়। পাশাপাশি এইচএসসির শিক্ষার্থীরা কিভাবে বাসায় থেকে অনলাইনে পরীক্ষা দিতে পারে গুগল শীটের মাধ্যমে, সে জন্য একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি কম্পিউটার বিজ্ঞানী প্রফেসর লুৎফর রহমানের নেতৃত্বে গড়ে তোলা যেতে পারে। কমিটির মতামত নিয়ে এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা নেয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত। বাসায় থেকে অনলাইনে যাতে পরীক্ষা দিতে পারে পরিক্ষার্থীরা। নচেত অলস মস্তিষ্ক ক্ষতির কারণ হবে। আবার করোনা ভাইরাস যতদিন না থেমে যাচ্ছে, ততদিন কিন্তু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলাও ঠিক হবে না। কটেজ, স্মল, মিডিয়াম এন্টারপ্রাইজের জন্য বরাদ্দ ব্যাংকিং সেক্টরের মাধ্যমে দিতে হবে। তবে এজেন্ট ব্যাংকিং যে পরিমাণ অর্থ গ্রামীণ অঞ্চল থেকে সংগ্রহ করে থাকে, তার ৮০% পর্যন্ত যাতে গ্রামীণ অঞ্চলে বিনিয়োগ করে সে জন্য নির্দেশিকা প্রস্তাবিত বাজেটে থাকতে হবে। পুঁজি গ্রাম থেকে চলে আসছে বলে কোন কোন উর্ধতন ব্যাংকার খুব খুশি। অথচ তারা ভুলে যান যে বঙ্গবন্ধু ১৯৭২-এ বাংলাদেশ ব্যাংক গঠনের মূল উদ্দেশ্য ছিল সঞ্চয়-বিনিয়োগে ভারসাম্য রক্ষা করা। গ্রামীণ অঞ্চলে যদি বিনিয়োগ না হয়, তবে স্থানীয় পর্যায়ের পুঁজির সঙ্কট হবে। এদিকে সামনে আসছে কোরবানির ঈদ। এ জন্য এখন থেকেই বিফ ফেটেনিং দরকার। আবার ভেজিটেবল ক্লাস্টার তৈরি করতে হবে। পাশাপাশি বিড়ি, সিগারেটের ওপর কর বাড়াতে হবে। দেশে প্রকাশ্য মদ্যপান নিষিদ্ধ। তবে কেউ খেলে তার ওপর কর বসানো দরকার। ইন্টারনেটের প্রোভাইডাররা ইচ্ছামতো টাকা কেটে নিচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া দরকার। নালিশ করে লাভ হয় না। যেখানে পাশের দেশে ফ্রি ইন্টারনেট দিচ্ছে। আমাদের দেশে রাউটারে থাকা সিম থেকে কিভাবে টাকা কর্তন করার মতো জালিয়াতি ঘটাচ্ছে, সেটি বন্ধ করার ব্যবস্থা থাকতে হবে। গ্রামকে স্মার্ট শহর বানানোর প্রতিশ্রুতি সরকার গ্রহণ করেছে। সেটি এবার বাস্তবায়ন করতে হবে। নন ফার্ম একটিভিটিস বাড়ানোর মাধ্যমে দেশে কর্মসংস্থান তৈরি করে স্থানীয় পর্যায়ে উন্নয়নের রূপরেখাও বাস্তবায়ন করতে হবে। আসলে রাজস্ব বাজেটের সঙ্গে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচী ঘোষিত হয়ে থাকে। এক্ষণে উন্নয়ন কর্মকা- এ বৈশ্বিক মহামারীতে মানুষকে বেঁচে থেকে অর্থনীতি সচল রাখার হাতিয়ার হতে হবে। বাজেট দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের একটি কৌশল। সেটির সফল বাস্তবায়ন দরকার। যে সমস্ত প্রবাসী বিদেশ থেকে ফেরত আসবেন তারা যাতে ব্যবসা করতে পারেন, সে জন্য ব্যাংক থেকে সহজ শর্তে যাতে ঋণ পেতে পারেন তার জন্য বরাদ্দ থাকা দরকার। আসলে ১৯৭২ সালের বাজেটের মূল বৈশিষ্ট্যগুলোই এবারের বাজেটের মূল ভিত্তিভূমি হওয়া দরকার। বাজেট প্রণয়নের সময় অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে কি পরিমাণ অর্থ দাতা গোষ্ঠীর কাছ থেকে পাব, কী পরিমাণ রাজস্ব সংগ্রহ করতে পারব এবং প্রবাসী বাংলাদেশীরা কতটুকু অর্থ পাঠাতে পারবে এবং বাদবাকী অর্থ মুদ্রানীতির মাধ্যমে সংগ্রহ করতে হবে। আসলে রাজনীতি ও মুদ্রানীতিকে একযোগে কাজ করতে হবে। ব্যাংকিং খাতের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা প্রধান সহায়ক ভূমিকা হবে সরকারের কর্মসূচী বাস্তবায়নে। এ জন্য প্রয়োজনে কঠোর হতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংককে দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে। বাণিজ্যিক ব্যাংকসমূহের কর্মকা-েও স্বচ্ছতা, সততা এবং নৈতিকতার প্রয়োজন রয়েছে। লেখক : ম্যাক্রো ও ফিন্যান্সিয়াল ইকোনমিস্ট এবং অধ্যাপক [email protected]
×