ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১

ড. কামাল ও তার ইহুদী জামাতা দেশবিরোধী কথা বলে যাচ্ছেন

প্রকাশিত: ১১:০৭, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২০

ড. কামাল ও তার ইহুদী জামাতা দেশবিরোধী কথা বলে যাচ্ছেন

সংসদ রিপোর্টার ॥ রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে অবিলম্বে জামায়াতের রাজনীতি নিষিদ্ধ এবং সংসদ ভবন এলাকা থেকে জিয়াউর রহমানসহ সকল স্বাধীনতাবিরোধীদের কবর স্থানান্তরের দাবি জানিয়েছেন আওয়ামী লীগসহ ১৪ দলের নেতারা। তারা বলেন, বিএনপির সুরে ড. কামাল হোসেন যে কদর্য ভাষায় কথা বলছেন, তার ইহুদী জামাতা যেভাবে দেশবিরোধী কথা বলেই যাচ্ছেন, তাতে জাতির সামনে পরিষ্কার- এই পরিবারটি দেশের অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে যাওয়া সহ্য করতে পারছে না। মুক্তিযুদ্ধে ড. কামাল হোসেনের ভূমিকাও ছিল প্রশ্নবিদ্ধ। দেশবাসী আর কোনদিন দেশবিরোধী, স্বাধীনতাবিরোধী ও গণতন্ত্রের লেবাসধারী জনবিচ্ছিন্ন ড. কামাল হোসেনসহ বিএনপি-জামায়াতকে মেনে নেবে না, ক্ষমাও করবে না। তারা ভোট থেকে মানুষের সৃষ্ট দূরত্ব গণতন্ত্রের জন্য বিপদ ডেকে আনবে বলেও মন্তব্য করেন। প্রথমে স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এবং পরে ডেপুটি স্পীকার এ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বি মিয়ার সভাপতিত্বে সোমবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তারা এসব কথা বলেন। আলোচনায় অংশ নেন ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও সাবেক মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, বন পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়কমন্ত্রী মোঃ শাহাব উদ্দিন, সাবেক প্রতিমন্ত্রী এইচ এন আশিকুর রহমান, এ্যাডভোকেট শামসুল হক টুকু, হুইপ সামশুল হক চৌধুরী, সরকারী দলের সাগুফতা ইয়াসমীন এমিলি, মোরশেদ আলম, আ কা ম সরওয়ার জাহান, বেগম খোদেজা নাসরিন আক্তার হোসেন ও স্বতন্ত্রদলীয় সংসদ সদস্য রেজাউল করিম বাবলু। আলোচনায় অংশ নিয়ে ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও সাবেক মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন ভোট প্রদান থেকে মানুষের দূরত্ব গণতন্ত্রের জন্য বিপদ ডেকে আনবে মন্তব্য করে বলেন, সিটি নির্বাচনে বিএনপি এসেছিল। কিন্তু জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মতো ভোটের দিন তাদের কোথাও দেখা যায়নি। নির্বাচনকে বানচাল করা, নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করে পেছনের দরজায় ক্ষমতায় যাওয়ার তারা কৌশল নিয়েছে। এটা সত্য যে, ওই নির্বাচনে ভোটাররা ভোট দিতে খুব কম এসেছে। আওয়ামী লীগ তথা চৌদ্দ দলের সমর্থকরাও ভোট দিতে আসেনি। ভোট থেকে মানুষের এই দূরত্ব গণতন্ত্রের জন্য বিপদ ডেকে আনবে। নির্বাচন তো বটেই, রাজনৈতিক দলগুলোও অপ্রাসঙ্গিক করে তুলবে। তিনি বলেন, গণতন্ত্র ও অসাম্প্রদায়িক রাজনীতির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র অব্যাহত রয়েছে। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর আগেই তারা মরিয়া আক্রমণ করবে। ধর্মবাদী তো বটেই, ওই ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নের ডান ও তথাকথিত বামও এক হচ্ছে। তিনি বলেন, পাকিস্তানী ভাবধারায় পাঠ্যপুস্তকে পরিবর্তন করা হচ্ছে। পাঠ্য বইয়ে হিন্দু লেখকদের লেখা তুলে দেয়া, গল্প-কথা-চিত্রে ধর্মভাবের প্রতিফলনের নতুন সব ব্যবস্থা আমাদের আতঙ্কিত করে। অর্থমন্ত্রী নিজেই বাইরে স্বীকার করেছেন যে, রফতানিসহ অর্থনীতির বিভিন্ন সূচক নেতিবাচক। আয় বৈষম্য চরম বিপজ্জনক অবস্থায় পৌঁছে গেছে। অর্থনীতি অত্যন্ত নাজুক অবস্থায় পৌঁছেছে, সরকার ব্যাংক থেকে যে ঋণ নেয়ার কথা, তা মাত্র ৬ মাসেই নিয়ে নিয়েছে। এক বছরে ২২ হাজার কোটি টাকার ওপর ঋণখেলাপী বেড়েছে। অর্থপাচারকারীর তালিকা প্রকাশ ও ব্যাংক লুটেরাদের সম্পদ বাজেয়াফতের দাবি জানিয়ে রাশেদ খান মেনন বলেন, সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদের কারণে সংসদ সদস্যরা সব কিছু বলতে পারে না, কিন্তু এসব বিষয়ে অবশ্যই সংসদে আলোচনা হওয়া উচিত। গত ১০ বছরে দেশ থেকে পাচার হয়ে ৫ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকা, যা দিয়ে অর্থমন্ত্রীর আগামী বছরের বাজেট হতো। তাই ব্যাংক লুটেরাদের অর্থ সম্পদ বাজেয়াফত করে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। যুদ্ধাপরাধী সাঈদীর স্বপক্ষে ওয়াজকারী জনৈক আজাহারীকে নির্বিঘেœ মালয়েশিয়ায় চলে যেতে দেয়া হয়েছে, আর শরিয়ত বাউলকে আইসিটি আইনে গ্রেফতার করে জেলখানায় রাখা হয়েছে। রাষ্ট্র কী অতীতের মতো আবার মৌলবাদকে পোষকতা দিচ্ছে? না হলে আজাহারী দেশ ছেড়ে যেতে পারে না, খতমে নবুয়ত নতুন করে হুঙ্কার ছাড়তে পারে না। হেফাজত সমর্থন প্রত্যাহারের হুমকি দিতে পারে না। এরাই ক’দিন পরে পাকিস্তানী কায়দায় ব্লাসফেমি আইন প্রণয়ন করতে বলবে! মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেনের বক্তব্যের কঠোর সমালোচনা করে বলেন, অনেকে বলে ড. কামাল হোসেন নাকি বাংলাদেশের সংবিধানের প্রণেতা। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের সময় তার ভূমিকা ছিল রহস্যজনক। তার ইহুদী জামাতা ডেভিড বার্গম্যানও অবধারিতভাবে সবসময় বাংলাদেশ ও সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করে যাচ্ছেন। দেশের ধারাবাহিক সাফল্যে এই পরিবারটি যেন মেনে নিতেই পারছেন না। আর ড. কামাল হোসেন যে ভাষায় কথা বলেছেন, যে শব্দগুলো ব্যবহার করেছেন- তার তীব্র নিন্দা জানানোর ভাষা আমার জানা নেই। জাতির পিতার নামে একটি আন্তর্জাতিক পুরস্কার প্রদানের জন্য সরকারের কাছে প্রস্তাব করে তিনি বলেন, স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াতের রাজনীতি করার কোন অধিকার নেই। এখনও জামায়াতকে নিষিদ্ধ করতে পারিনি। অবশ্যই দলটিকে নিষিদ্ধ করতে হবে। তিনি লুই আই কানের অমর সৃষ্টি জাতীয় সংসদের মূল নক্সা অক্ষুণœ রাখতে অবৈধভাবে স্থাপিত জিয়াউর রহমানসহ সকল কবর স্থানান্তরের দাবি জানিয়ে বলেন, এখানে কয়েকজনের কবর রয়েছে, তারা কেউ-ই স্বাধীনতার পক্ষের লোক ছিল না। আমরা যে কোন হত্যাকে সমর্থন করি না, নিন্দা জানাই। এখানে জিয়াউর রহমানের কথিত কবর রয়েছে। কিন্তু আমরা যতদূর জানি হত্যাকারীরা তার লাশ পুড়িয়ে জ্বালিয়ে দিয়েছিল। এখন কার লাশ এনে দাফন করা হয়েছে তা জানা নেই। তাই লুই কানের অমর এই নক্সা অক্ষুণœ রাখতে সংসদ ভবন এলাকার মধ্যে থাকা জিয়াউর রহমানসহ সকলের কবর স্থানান্তরের জোর দাবি জানাচ্ছি। মন্ত্রী মোঃ শাহাব উদ্দিন বলেন, বাংলাদেশ আজ সব সূচকে দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু সরকারের বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। দেশী-বিদেশী ষড়যন্ত্রকারীসহ বিভিন্ন ওয়াজ মাহফিলে সরকারের বিরুদ্ধে নানা উস্কানিমূলক তৎপরতা চালাচ্ছে। তাই আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। দেশের বিস্ময়কর উন্নয়ন, অগ্রগতি দেখেই দেশের মানুষ দু’হাত ভরে আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করছে। ২১ বছর ক্ষমতায় থাকা বিএনপিসহ অন্য সরকারগুলো দেশের মানুষকে কিছুই দিতে পারেনি।
×