ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

নওগাঁয় ৪০ বছরেও সংস্কার হয়নি বেড়িবাঁধ

প্রকাশিত: ০৮:২৮, ৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০

 নওগাঁয় ৪০ বছরেও  সংস্কার হয়নি  বেড়িবাঁধ

বিশ্বজিৎ মনি, নওগাঁ ॥ রাণীনগর উপজেলার ছোট যমুনা নদীর নান্দাইবাড়ী-কৃষ্ণপুর বেড়ি বাঁধটি দীর্ঘ ৪০ বছরেও সংস্কারের উদ্যোগ নেয়নি কেউ। ফলে ধীরে ধীরে বাঁধ ভেঙ্গে ও মাটি ধসে একদম জমির আইলের মতো সরু হয়ে গেছে। চলতি শুষ্ক মৌসুমে ফসল রক্ষায় সেই বেড়িবাঁধ নির্মাণ কিম্বা সংস্কার না হওয়ায় আগামী বছর বন্যা হলে আবারও বাঁধ ভেঙ্গে হাজার হাজার হেক্টর জমির ফসল বিলীনসহ লাখো মানুষের ভাগ্য ও বসতির ক্ষতির আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী। জানা গেছে, নওগাঁর ছোট যমুনা নদী জেলার রানীনগর উপজেলার ওপর দিয়ে বয়ে আত্রাই নদীর সঙ্গে মিলিত হয়েছে। প্রায় ৮০ দশকে গোনা ইউনিয়ন পরিষদের তৎকালীন সময়ের চেয়ারম্যান আহাদ আলী প্রামাণিক খাদ্যের বিনিময়ে কর্মসূচীর আওতায় নান্দাইবাড়ী এলাকায় প্রায় ৭ কিলোমিটার রাস্তা কাম বেড়িবাঁধ নির্মাণ করেন। এর পর থেকে প্রায় ৪০ বছর ধরে বাঁধটি সংস্কার করা হয়নি। ফলে তৎকালীন সময়ে নির্মিত বাঁধের দু’পাশের মাটি ভেঙ্গে একদম জমির আইলের মতো সরু হয়ে হয়ে পড়েছে। প্রতিবছর ওই স্থানে বাঁধ ভেঙ্গে রানীনগর এবং আত্রাই এলাকার হাজার হাজার হেক্টর জমির ধানসহ বিভিন্ন ফসল ও চাষকৃত মাছ ভেসে যায়। এছাড়া শত শত বসতি ভেঙ্গে পড়ে। ফলে কোটি কোটি টাকার ক্ষতি হয়। ওই এলাকার রফিকুল ইসলাম, আব্দুস সালাম, মজিবুর রহমানসহ অনেকেই জানান, দীর্ঘ দিন বাঁধটি সংস্কার না করায় এমন ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। তারা বলছেন, বন্যা আসলেই কর্মকর্তারা বাঁধ রক্ষায় তোড়জোড় শুরু করেন। কিন্তু পানি নেমে গেলে কারও খোঁজ পাওয়া যায় না। তাদের মতে, সংস্কার হবেই বা কি করে, যেখানে বাঁধের অভিভাবকই নেই, সেখানে কাজ করবে কে?। তারা আরও জানান, ২০১৮ সালে বন্যায় নান্দাইবাড়ী-কৃষ্ণপুর বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে গেলে নওগাঁ-আত্রাই পাকা সড়কের রানীনগর সীমানার মিরাপুর, ঘোষ গ্রাম, কৃষ্ণপুরসহ প্রায় ৫ জায়গায় ভেঙ্গে যায়। ওই বছরই বন্যায় রানীনগর উপজেলার প্রায় ১৫ হাজার হেক্টর জমির ধান বন্যার পানিতে তলে যায়। গত বছর একই স্থানে বাঁধ ভেঙ্গে প্রায় সাড়ে ৮ হাজার হেক্টর জমির ফসল পানিতে তলে নষ্ট হয়। প্রতিবছর একই স্থানে ধারাবাহিকভাবে বাঁধ ভেঙ্গে কোটি কোটি টাকার ক্ষতি হলেও নতুন করে বাঁধ নির্মাণে কিম্বা সংস্কারের উদ্যোগ নিচ্ছে না কেউ। বসতি বাড়ি ও ফসল বাঁচাতে বাঁধটির মালিকানা নির্ণয় করে দ্রুত নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন তারা। এ ব্যাপারে নওগাঁ জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শুধাংসু কুমার সরকার বলেন, নান্দাইবাড়ী-কৃষ্ণপুর বেড়িবাঁধটি আমাদের আওতায় নয়। তবে সংস্কারে যদি বিশেষ কোন নির্দেশনা বা বরাদ্দ আসে তাহলে বাঁধটি সংস্কার করা হবে।
×